রাঙ্গামাটিতে আসামি ‘ছিনিয়ে নিয়ে’
পরে আবারো ফেরত দিল ছাত্রলীগ
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙ্গামাটিতে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার তিনজনকে থানায় নেওয়ার পথে ‘ছিনিয়ে নিয়ে’ দুই ঘণ্টা পর আবার ফিরিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় দুই ছাত্রলীগ নেতা। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাঙ্গামাটি শহরের পুরাতন বাস স্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পড়ে পুলিশ আসলে উত্তেজনা কমে আসে।
কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আব্দুল রশীদ জানান, “শহরের কাঁঠালতলী এলাকা থেকে দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ির গতিরোধ করে পুলিশের কাছ থেকে আসামিদের ছিনিয়ে যায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। “পরে রাত ১২টার দিকে আসামিদের আবার ফেরত দেওয়া হয়েছে।”
কোতোয়ালি থানার এসআই সুরজিত বড়ুয়া জানান, গত ২৬ এপ্রিল রাতে কাঁঠালতলী থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জমীর উদ্দীনের ছেলে মেজবাহ উদ্দীনের মোটরসাইকেল চুরি যায়। মেজবাহ নিজেও রাঙ্গমাটি সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার বাবা ওইদিনই থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে বৃহস্পতিবার রাতে এরশাদ, কলিম ও অসিফ নামে তিন ছাত্রলীগকর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে বলে এসআই সুরজিত জানান। তাদের নিয়ে পুলিশ থানায় যাওয়ার পথে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন ও রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বাপ্পার নেতৃত্বে কর্মীরা গাড়ি থামিয়ে তাদের ছিনিয়ে নেয় বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এ খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শহীদুল্লাহ, সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) চিত্ত রঞ্জন পাল ও কোতোয়ালির ওসি আব্দুর রশিদ ঘটনাস্থলে যান। তারা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে সমঝোতায় পৌঁছালে রাত ১২টার দিকে ওই তিনজনকে ফের পুলিশের সোপর্দ করা হয়।
এসআই সুরজিত বলেন, অসিফের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি দুজনকে শুক্রবার আদালতে তোলা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুজন বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। কোনো ওয়ারেন্ট বা অর্ডার ছাড়া আমাদের তিন কর্মীকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তখন পুলিশের সঙ্গে আমাদের কর্মীরা কথাবার্তা বলছিল।”
তারা কাউকে ছিনিয়ে নেননি দাবি করে সুজন বলেন, “এক পর্যায়ে পুলিশ নিজেরাই আটকদের ছেড়ে দেয়।… পরে পুলিশের সাথে কথাবার্তা বলে আটকদের আবারও পুলিশের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছে।”
পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান বলেন, “সরকারি কাজে বাধা দেওয়া বা গাড়ি থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়া অনেক বড় অপরাধ। এর সঙ্গে জড়িতদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।”