নিজেদের ঘর সামাল না দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে টানা হেঁচড়া না করতে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ।
শুক্রবার (২০মে) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘বিপন্ন স্বাধীনতা, উপেক্ষিত আইনের শাসন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (জিসিসি) বরখাস্ত মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের মুক্তির দাবি ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ‘গাজীপুর মহানগরের সচেতন নাগরিক ফোরাম’ নামের একটি সংগঠন এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।
হান্নান শাহ বলেন, খালেদা জিয়া কিছু করার চেষ্টা করলে এ দেশের জনগণ বসে থাকবে না। তার ডাকে ঝাঁপিয়ে পড়বে।
বিএনপির এই প্রভাবশালী নেতা বলেন, ‘বিএনপির দিকে কামান দাগার চেষ্টা করবেন না। নিজেদের ঘর সামলান। নিজেদের কথা ভাবুন। সামনে আপনাদের কাউন্সিল আসছে। সেই কাউন্সিলে কী হবে না হবে এটা নিয়ে ভাবেন।। বিএনপিকে ঘায়েল করতে সময় নষ্ট করে লাভ হবে না। জনগণের দল বিএনপি রাস্তায় নামলে আপনার অস্থিরতা বাড়বে। এখন আপনারা অতীতের মত আবার শুরু করেছেন- এক নেতার এক দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ।’এটা জনগণ করতে দিবে না যত চেষ্টাই করেন’।
জনগণ আস্থায় নয়, ভারতের সমর্থনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে এমন অভিযোগ করে হান্নান শাহ বলেন, ‘বর্তমান সরকার অবৈধ ও অনির্বাচিত। তারা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি। এরা মুখোশধারী গণতন্ত্রমনা। এদের কোনো জনসমর্থন নেই। এরা দেশে অঘোষিত বাকশাল কায়েম করতে চায়। কিন্তু জনগণ সেই সুযোগ দেবে না। কাজেই দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ভারতের বিজিপির মতো জয় পাবে বিএনপি, আর কংগ্রেসের মতো অবস্থা হবে আওয়ামী লীগের এটা স্বরন করিয়ে দেন এই নেতা।।
সরকার উৎখাতে ভারতে ‘মোসাদ’র সঙ্গে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর বৈঠকের ঘটনাটিকে ‘ডাহা মিথ্যা’ হিসেবে উল্লেখ করে হান্নান শাহ বলেন, ‘গোপন বৈঠক শেষে মুক্ত আকাশের নিচে কেউ ছবি তুলতে পারে বলে সেনাবাহিনীর সাবেক একজন কর্মকর্তা হিসেবে আমরা জানা নেই। তাই সরকার উৎখাতের খবর ডাহা মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, বিএনপির ষড়যন্ত্র করার কোনো দরকার নেই। কারণ, দেশের ৯০ শতাংশ লোক এখন আওয়ামী সরকারের বিদায় চাইছে। তাছাড়া বিএনপি কোনো ষড়যন্ত্রে বিশ্বাস করে না। বিএনপির মূল শক্তি হচ্ছে জনগণ।
হান্নান শাহ বলেন, বিএনপিকে নেতৃত্বশূন্য করতেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। খালেদা জিয়ার হাতকে এবং নেতাকর্মীদের মানসিকভাবে দুর্বল করার জন্যই এটি করা হচ্ছে। কিন্তু এতে কোনো লাভ হবে না। তারা (সরকার) হয়তো ভুলে গেছেন- মামলা দিয়ে, জেলে নিয়ে বিএনপিকে কখনো দাবিয়ে রাখা যাবে না।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে সরকারের উদ্দেশে বলেন, খালেদা জিয়ার ওপর অন্যায়ভাবে কিছু করা হলে কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তা কিছুতেই মেনে নেবে না, বসেও থাকবে না। বিএনপি আজ ঐক্যবদ্ধ। তাই বলব, ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আরিফ হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া প্রমুখ।