ঢাকায় এলো মোটরবাইক শেয়ারের অ্যাপ
রাজধানী ঢাকা মানেই তীব্র যানজটের নগরী। এই মহানগরীতে স্বাচ্ছন্দে চলাফেরার বাহন মোটরবাইক। দু’চাকার এই বাহনটি ব্যবহারেরও সাধ্য নেই সবার। ব্যক্তিগত মোটরবাইক শেয়ার করে গন্তব্যে পৌঁছাতে এলো একটি অ্যাপ্লিকেশন, এতে স্বপ্ল খরচে বাইকার ও রাইডার দু’জনেই উপকৃত হবেন!
‘ডাটাভক্সসেল’ ঢাকাবাসীকে পরিবহন সুবিধা দেওয়ার জন্য মহানগরীর ৪ লাখেরও বেশি ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল দিয়ে প্রতিদিন প্রায় দ্বিগুণ যাত্রী পরিবহন করার সুযোগ করে দিয়েছে।
ডাটাভক্সসেল লিমিটেড নতুন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নিয়ে এসেছে ‘স্যাম’ (শেয়ার এ মোটরসাইকেল)। স্যাম অত্যন্ত সাশ্রয়ী খরচে দ্রুত, নিরাপদ এবং আরামদায়কভাবে যাত্রীদের তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন উদ্যেক্তারা।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত কিছু বাংলাদেশি ও ভারতীয় প্রকৌশলীদের দ্বারা তৈরি ‘স্যাম’ অ্যাপসটি রাইডারের (যাত্রী) সাথে বাইকারের (ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলের মালিক) সংযোগ করিয়ে দেবে। বাইকার ও রাইডার স্যাম অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে একই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন। যাত্রীরা তাদের টাকাও পরিশোধ করতে পারবেন এই অ্যাপের মাধ্যমে।
শনিবার (০৭ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
অ্যাপটি ব্যবহারের পদ্ধতি সম্পর্কে জানানো হয়, যাত্রীকে তার অ্যানড্রয়েড ডিভাইসে রাইডার অ্যাপটি ইনস্টল করতে হবে। ঠিক একইভাবে বাইকার্সও অ্যাপসটি অ্যানড্রয়েড ডিভাইসে ইনস্টল করবেন। ইনস্টলের পর বাইকার ও রাইডার লগ ইন করে রাইডার তার যাত্রার জন্য একটি অনুরোধ পাঠাতে পারবে, যা রাইডারের দুই কিলোমিটার এরিয়ার মধ্যে অবস্থিত সব বাইকারের কাছে পৌঁছে যাবে। একই গন্তব্য অভিমুখী বাইকার রাইডারের অনুরোধটি গ্রহণ করতে পারবেন এবং এগিয়ে গিয়ে বাইকে রাইডারকে তুলে নিবেন।
মাইলেজ মিটারটি দূরত্ব নির্ধারণ করে সে অনুযায়ী বিল হবে। বিল দেওয়া হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্যাম অ্যাপসের ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে। নগদ টাকা লেনদেনের প্রয়োজন নেই। একটি রাইডের অনুরোধ করা অথবা একটি রাইড অনুমোদন করার পূর্বে রাইডার এবং বাইকার একজন আর একজনকে মূল্যায়ন করার সুযোগ পাবেন।
ডাটাভক্সলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমতিয়াজ কাসেম দাবি করেন, সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত নিরাপদ। কারণ রাইডার ও বাইকারের সব তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা হবে নিরাপত্তার কারণে। কিছু তথ্য রাইডার ও বাইকার আদান প্রদান করতে পারবে যখন তারা একজন আরেকজনকে অনুরোধ করবে এবং অনুরোধ গ্রহণ করবে। এভাবে বাইকার ও রাইডার একজন আরেকজন সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবেন যে তারা কার যাত্রাসঙ্গী হচ্ছে।
উদ্যোক্তাদের দাবি, ডাটাভক্সসেল নতুন ধরনের ই-ইশারার প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে একজন যাত্রী বন্ধুসুলভ এবং সাশ্রয়ীভাবে মোটরসাইকেলে করে তার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।
ইমতিয়াজ কাসেম দাবি করেন, এই প্রকল্পটি সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বড় ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যতে ডাটাভক্সসেল লিমিটেড এই স্যাম সার্ভিসের মাধ্যমে পার্সেল এবং ওষুধ সরবরাহ করবে।
আর অ্যাপেলের জন্য আ্যাপসটি আগামী মাসের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে।
মধ্যবিত্ত ও নিন্ম মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের জন্য নতুন বিকল্প পরিবহন ব্যবস্থায় অতিরিক্ত সময় ও শক্তি খরচ ছাড়া অতিরিক্ত কিছু অর্থ উপার্জনের সুযোগ করে দিবে এই অ্যাপটি। এতে ঢাকা শহরের পরিবহন ব্যবস্থার একচ্ছত্র আধিপত্য ভাঙ্গতে সাহায্য করবে। অ্যাপটি চালকদের ট্রাফিক আইন ও নিয়ম মেনে চলা নিশ্চিত করা ছাড়াও বাইকের কাগজপত্রগুলোর যথাযথ ও সময়মতো নবায়ন নিশ্চিত করবে।
ডাটাভক্সসেলের সাথে কৌশলগত সহযোগী হিসেবে থাকছে ওমেরা, রহিম আফরোজ, বিকাশ, গ্যাটকো এবং অলওয়েজ অনলাইন নেটওর্য়াক।
ডাটাভক্সসেলের চেয়ারম্যান ইশতিয়াক কাসেম, জেনারেল ম্যানাজার খালিদ বিন সালাম, কমিউনিকেশন ডিরেক্টর এফ জেড হাসান সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।