॥ মনসুর আহম্মেদ ॥ পর্যটন শহর রাঙ্গামাটির ৯টি ওয়ার্ডসহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন এলাকায় উন্নয়ন কাজ শুরু করেছে রাঙ্গামাটি পৌরসভা। ইউজি আই আই পির আওতায় প্রথম পর্যায়ে প্রায় রাঙ্গামাটি শহরের ৯ওয়ার্ড, শহরের মূল সড়কসহ বিভিন্ন জায়গায় ১৭কোটি টাকা বাজেটে উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। রাঙ্গামাটি পৌরসভা মেয়র মোঃ আকবর হোসেন চৌধুরী প্রতিটি এলাকায় নিজে উপস্থিত থেকে উন্নয়ন কার্যক্রম তদারকি করছেন।
রাঙ্গামাটি পৌরসভা মেয়র মোঃ আকবর হোসেন চৌধুরী জানান, ইউজিপ-৩ প্রকল্পের মাধ্যমে রাঙ্গামাটি পৌরসভার আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় প্রায় শত কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করা হবে। এতে প্রায় ১৮ হাজার মিটার রাস্তা, ১৫ হাজার মিটার সিঁড়ি, দুই হাজার চারশো স্যানিটারি ল্যাট্রিনসহ আরো বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হবে। কাজগুলো প্রায় পাঁচ বছরে পর্যায়ক্রমে করা হবে। ইতিমধ্যে যেসব রাস্তার কাজের টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। সেগুলো হলো, রিজার্ভ বাজার প্রধান সড়কসহ শুটকি পট্টি, মহসিন কলোনি, গীতাশ্রম কলোনি, পুলিশ লাইন সড়ক, ডিসি বাংলো সড়ক, ওমদামিয়া হিল, নোয়াদাম, তবলছড়ি বাজার, তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া, শান্তিনগর, কলেজগেইট, আমানতবাগ, পৌরসভা সড়ক, ফরেস্ট কলোনি, পাবলিক হেলথ, স্বর্ণটিলা, আসামবস্তি, ট্রাইবেল আদাম, দেওয়ানপাড়া, চক্রপাড়া, মোল্লাপাড়াসহ আরো বিভিন্ন সড়কের কাজ করা হবে। একই সাথে কিছু কিছু এলাকায় সিঁড়ি ও নালা নির্মাণ করা হবে।
রাঙ্গামাটি পৌরসভা এলাকাধীন শুরু হওয়া উন্নয়ন কাজের এলাকা পরিদর্শন উপলক্ষে বুধবার সকালে পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ শহরের ব্যস্ততম এলাকা রিজার্ভ বাজারে সরেজমিনে গিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ বুঝিয়ে দেন। দীর্ঘদিন পর রিজার্ভ বাজার সড়কে কাজের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় এলাকাবাসীও পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরীকে স্বাগত জানিয়েছেন এছাড়া এ প্রকল্পের আওতায় রাঙ্গামাটি পৌরসভার অন্যান্য এলাকায় শুরু হওয়া উন্নয়ন কাজগুলো ও পরিদর্শন করেন রাঙ্গামাটি পেূর মেয়র মোঃ আকবর হোসেন চৌধুরী।
এ সময় উন্নয়ন কাজ শুরু হওয়া প্রতিটি এলাকার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান, পৌরসভা কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় রাঙ্গামাটি মেয়র নিজে উপস্থিত থেকে শহরের প্রধান সড়কে শুরু হওয়া রাস্তার পরিধি বৃদ্ধি করতে জনস্বার্থে সড়কের দুই পাশের ফুটপাত, ড্রেনের জায়গার জন্য সীমানা নির্ধারণ করে দেন। সীমানা থেকেই ড্রেন ও রাস্তার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পৌর মেয়র।
রাঙ্গামাটির ব্যস্ততম এলাকা রিজার্ভ বাজারের মুল সড়কের কাজ শুরু হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়ে রাঙ্গামাটি স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মোঃ শাওয়াল উদ্দিন বলেন, রাস্তাাটি সংস্কার হলে এলাকাবাসীর জন্য যেমন সুবিধা হবে, তেমটি ব্যবসায়ীদের জন্য উপকারে আসবে। এছাড়া জেলার প্রধান লঞ্চঘাট এই এলাকায় হওয়ায় উপজেলাবাসীও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে। সড়কের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য তিনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে আহবান জানান।
রাঙ্গামাটি পৌরসভার মেয়র মোঃ আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে পর্যটন শহর রাঙ্গামাটির উন্নয়নে আমরা জনসাধারনকে যে ওয়াদা দিয়েছিলাম সে ওয়াদা অনুযায়ী আমি নির্বাচিত হওয়ার পর পর্যটন শহর রাঙ্গামাটির প্রতিটি ওয়ার্ডে উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করেছি। বর্তমানে প্রতিটি এলাকায় একসাথেই উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। একটা পরিকল্পনা নিয়ে শহরকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও দুর্গন্ধমুক্ত পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে আমি অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, শুধু রাঙ্গামাটির সড়ক নয়, প্রতিটি সেক্টরেই উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করা হবে।
রাঙ্গামাটি পৌরসভার মেয়র মোঃ আকবর হোসেন চৌধুরী আরো বলেন, বর্তমানে রাঙ্গামাটি পৌরসভার তত্ত্বাবধানে তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতিকরন (ইউজিপ-থ্রি) প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে প্রায় ১৭ কোটি টাকার উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। প্রতিটি এলাকায় এখন উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে, এলাকা ভিত্তিক উন্নয়ন কার্যক্রম সার্বক্ষনিকভাবে মনিটরিং করতে পৌরসভার পক্ষ থেকে এক একটি টিম করে দেয়া হয়েছে। পৌর মেয়র বলেন, রাঙ্গামাটি পৌরসভা এলাকাধীন প্রতিটি এলাকায় উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পরবর্তী অর্থবছরে এ প্রকল্পের ২য় পর্যায়ে ৪৫ কোটি প্রস্তাবনা পাঠানো পাঠানো হয়েছে।
পৌর মেয়র আরো বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়েছি মাত্র কয়েক মাস হয়েছে, এরমধ্যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজগুলো শুরুর চেষ্টা করছি। এছাড়া আরো যেসব কাজ রয়েছে, আমি তা আমার বাকী সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, রাঙ্গামাটি শহরের উন্নয়নে পৌরসভার পক্ষ থেকে যেভাবে কাজ শুরু করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে তাতে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে পৌরবাসী রাঙ্গামাটিতে একটি পরিবর্তন দেখতে পাবে। জনস্বার্থে করা এসব উন্নয়ন কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে তিনি পৌরবাসীর সহায়তা কামনা করেছেন।