সাংসদ মজিবুর রহমান ফকির আর নেই
ময়মনসিংহের গৌরীপুরের সংসদ সদস্য সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মজিবুর রহমান ফকির হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
সোমবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে কোতোয়ালি থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান।
গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. মজিবুর রহমান ফকিরের বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
ময়মনসিংহ মেডিকেলের অধ্যাপক ডা. আ ন ম ফজলুল হক পাঠান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উনি গতকাল রাত আড়াইটার দিকে বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। তাকে সিসিইউতে রাখা হয়েছিল। সেখানেই সকালে তার মৃত্যু হয়।”
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এই সংসদ সদস্যের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।
২০০৯-২০১৪ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মজিবুর রহমান ফকির নিজেও পেশায় একজন চিকিৎসক ছিলেন।
২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৩ আসন থেকে জয়ী হওয়ার পর তিনি বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নবম সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তাকে দেওয়া হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব।
সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মজিবুর রহমান ফকির ১৯৭০ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি পান। সামরিক বাহিনীতে থাকা অবস্থায় ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ডেপুটেশনে মালয়েশিয়ায় ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ নার্সিং হোমার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ প্রাইভেট প্র্যাকটিশনার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন মজিবুর রহমান ফকির।
প্রতিমন্ত্রী ও এমপি থাকাকালে এক কলেজ শিক্ষককে পিটিয়ে কাপড় খুলে নিয়ে, কয়েকজনের মাথা ‘ন্যাড়া’ করিয়ে দিয়ে, এক স্বতন্ত্র প্রার্থীকে প্রকাশ্য জনসভায় বিয়ে করার ঘোষণা দিয়ে, নজরদারির জন্য সরকারি অফিস, থানা, স্কুলসহ বিভিন্ন স্থানে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসিয়ে এবং চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রকে স্কুলে বদলাতে বাধা দিয়ে সমালোচিত হন এই আওয়ামী লীগ নেতা।
১৯৪৫ সালের ৭ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করা এই রাজনীতিবিদ স্ত্রী ও তিন মেয়েকে রেখে গেছেন।