=অবিলম্বে অচিন বাবার আস্তানা বন্ধ করুন
———-হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ
শ্যামল নাথ,হাটহাজারী প্রতিনিধি ঃ হাটহাজারীতে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে কথিত (বিশ্বজিৎ বড়–য়া) অচিন বাবার মৃত্যুর পর তাকে আমিরকা থেকে লামা এনে বুদ্ধ ধর্মের রীতিনীতি অনুসরণের পর হাটহাজারী থানার অন্তর্গত পাহাড়তলী ওয়ার্ডে ব্রাহ্মণ পাড়ায় তার নামাজে জানাজার আয়োজন পূর্বক তার লাশ দাফন করে মাজার নির্মাণ করার প্রতিবাদে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ শামসুল আলম প্রকাশ মুহাদ্দিস সাহেব হুজুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মিছিল পূর্ব সমাবেশে হেফাজত নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মুঈনুদ্দীন রুহী, উত্তর জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর মুহাম্মদ ইদরিস, মাওলানা হাজী মোজাম্মেল হক, মাওলানা হাবীবুল্লাহ নদভী, মাওলানা হাবিবুল হক বাবু, মাওলানা মুফতি আব্দুল আজিজ, মাওলানা শফি উল্লাহ, মাওলানা মুহাম্মদ আলমগীর, মাওলানা মুফতী সোলাইমান, আলহাজ্ব আহসান উল্লাহ, মাওলানা ইবরাহীম খলীল সিকদার, মাওলানা ওলী উল্লাহ, মাওলানা ফয়েজুর রহমান, এম আতিকুল্লাহ, মাওলানা জুনাইদ জওহার, মাওলানা আমিন শরীফ, এনায়েতুল্লাহ, এরশাদ শিকদার প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা শামসুল আলম বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ও মুসলমান যুগ যুগ ধরে সহ অবস্থান করে আসছে। প্রত্যেকে যার যার ধর্মীয় অনুষ্ঠান স্বাধীনভাবে পালন করে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কাজ করে আসছে। সম্প্রতি আমেরিকা প্রবাসী বিশ্বজিৎ বড়–য়া (অচীন বাবা) মৃত্যুর পর তাকে নামাজে জানাজা পড়ে মুসলমানদের নিয়ম অনুযায়ী দাফন করে মাজার নির্মাণ করা, ইসলামের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার শামিল। এই দূরভিসন্ধি ষড়যন্ত্র যেই বা যারাই করুক, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
হেফাজতের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মুঈনুদ্দীন রুহী বলেন, হাটহাজারীর পাহাড়তলী নন্দীরহাট এলাকায় বিশ্বজিৎ বড়–য়ার মাজার নির্মাণ করে গ্রামের সরলমনা মুসলমানদেরকে ধোঁকা দিয়ে ব্যবসা করার জন্যে যারাই পরিকল্পনা করেছে, তদন্ত করে তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় তৌহিদী জনতা ফুঁসে ওঠলে অচিন বাবার চামচারা পালানোর পথ পাবে না।
জনাব রুহী বলেন, আমরা আইন হাতে তুলে নিতে চাই না, আমরা উচ্ছৃঙ্খলতাও পছন্দ করি না। কিন্তু ইসলাম ধর্ম নিয়ে কেউ কেউ তামাশা ও ষড়যন্ত্র করলে তার রেহাই হবে না। তিনি বলেন, প্রশাসন আমাদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকে দূর্বলতা মনে করলে ভুল করবে। প্রয়োজনে সারা চট্টগ্রাম থেকে আন্দোলনের দাবানল জ্বলে ওঠবে।
মাওলানা মীর মুহাম্মদ ইদরিস বলেন, প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে। একজন মানুষ যে কোন এক ধর্মের অনুসারী বা এক ধর্মের গুরু হতে পারে। সকল ধর্মের গুরু নাম দিয়ে অচীন বাবার মাজার তৈরী করা ধর্মের সাথে তামাশা করার শামিল। এর প্রতিবাদে আমরা যেমন আন্দোলন করছি, হিন্দু, বৌদ্ধরাও আন্দোলন করার পরিকল্পনা শুরু করেছে। তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছে। তিনি অবিলম্বে কথিত অচিন বাবার মাজার উচ্ছেদ করে এর সাথে সংশ্লিষ্ট ভন্ড, প্রতারকদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়ার জন্যে প্রশাসনের প্রতি দাবী জানান।
মাওলানা শফিউল্লাহ বলেন, অচিন বাবা বিশ্বজিৎ বড়–য়া নামধারী পাসপোর্ট ওয়ালা আমেরিকার প্রবাসী। তার আত্মীয়-স্বজন সবাই বুদ্ধ ধর্মের অনুসারী। তিনি নিজেও বুদ্ধ ধর্মের পরিচয় দিতেন। কিন্তু তিনি মারা যাওয়ার পর ভান্ডারী তরীক্বার অনুসারী সাধক বলে যেই প্রচারণা করা হচ্ছে, তা মিথ্যা, ভন্ডামী ও ব্যবসা করার জন্যে। তিনি দলমত নির্বিশেষে সকল মুসলমানকে এই ভন্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।