চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, ধর্মীয় অনুশাসন পালন মানুষের নৈতিকতাকে উন্নত করে, সকল খারাপ কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে শেখায় এবং মন-আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। তবে ধর্মান্ধতা মানবিক গুনগুলোকে হরণ করে, সভ্যতাকে ধংস করে এবং বর্বরতার মাধ্যমে মানব সমাজকে অন্ধকারে নিক্ষিপ্ত করে। তিনি নতুন প্রজন্মের একশ্রেণির সন্তানদের বিপথগামীতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আজ শিক্ষিত অনেক তরুণ জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকছেন এবং তাদের মধ্যে মনুষ্যত্ব লোপ পাচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পরও তারা অশিক্ষিতই থেকে যাচ্ছে। তারা আকাশ সংস্কৃতির উলঙ্গপনাকে গোগ্রাসে গিলছে। অনেকে মাদকাসক্তও হচ্ছে। এরাই আবার তথাকথিত ‘জিহাদী’ দীক্ষায় জঙ্গিবাদী হচ্ছে। তিনি এ প্রসঙ্গে আরো বলেন,তরুণরা যাতে মনুষ্যত্ব বোধ না হারায় সেজন্য রাষ্ট্র,সমাজ,পরিবারকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে এবং তাদের উপর সতর্ক নজরদারি রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে ধর্মান্ধ ও জঙ্গিবাদ ইসলাম পরিপন্থী। তিনি আজ ২৪ জুন সকালে নগরীর থিয়েটার ইন্সটিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি মিলনায়তনে) বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলা আয়োজিত ২০১৬ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গোল্ডেন এ+ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান প্রধান অতিথির ভাষণে সিটি মেয়র একথা বলেন।তিনি আরো বলেন, ধর্মভীরু বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে অসাম্প্রদায়িক মরমী সুফিবাদের সুষ্পষ্ট প্রভাব রয়েছে। সুফিবাদের মাধ্যমেই এই জনপদে ইসলামের প্রসার ঘটেছে। শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু হানাহানি ও রক্তপাত হয়নি। তাই ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে ইসলামের সঠিক,সুন্দর, নৈতিক দিকগুলো উপলব্ধি করতে হবে, এর মধ্য দিয়েই সমাজে সুস্থ,শিক্ষিত একটি প্রজন্ম গড়ে উঠবে।উদ্বোধকের ভাষণে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে এক অমিত সম্ভাবনার দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। অর্জন করেছে নিরবিচ্ছিন্ন প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী অভিজাত সংঘের পরবর্তী সম্ভাবনাময় সদস্য হিসেবে। বাংলাদেশকে গণ্য করা হয়েছে ১১টি থ্রী জি দেশের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে সম্ভাবনাময়, ২৬টি দেশের তালিকায় চীন ও ভারতে সঙ্গে একই কাতারে স্থান পেয়েছে। একথাগুলো বাংলাদেশের তৈরি নয়, বিশ্ব স্বীকৃতি। তিনি কৃতি শিক্ষার্থীদের সাফল্য কামনা করে বলেন, আগামী দিনে তোমরাই এদেশের আলোকবর্তিকা। তোমাদের আলোয় আলোকিত হবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলা কৃতি শিক্ষার্থী সম্মাননা উপ পরিষদের আহবায়ক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নারী নেত্রী আবিদা আজাদ এর সভাপতিত্বে ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলার সাধারন সম্পাদক খোরশেদ আলম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা উপ পরিষদের সদস্য সচিব প্রকৌশলী সুদিপ বসাক, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি ড. মাহমুদ হাসান, ৯ নং উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মো. জহুরুল আলম জসিম, জামাল খান ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোরশেদুল আলম, চসিক কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, শৈবাল দাশ সুমন, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ কমিটির সহ সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অনুপ বিশ্বাস, বিশিষ্ঠ প্রাবন্দিক ও লেখক শেখ মুজিব আহমেদ, নগর যুবলীগের সদস্য সুমন দেবনাথ, কেন্দ্রীয় যুবলীগের কার্য নির্বাহী সদস্য জাহেদুর রহমান সোহেল,কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক ইয়াছির আরাফাত, মহিলা যুবলীগ নেত্রী জুলেখা বেগম। উপস্থিত ছিলেন নগর যুবলীগের সদস্য এ এম রবিউল ইসলাম, সংস্কৃতি কর্মী সজল দাশ, আসিফ ইকবাল, দেবু বড়–য়া, শ্রাবন্তী দাশ, রিপন বড়–য়া প্রমূখ। আলোচনা সভা শেষে চট্টগ্রাম মহানগর ও বিভিন্ন উপজেলার সরকারী ও বেসরকারী ৫০ টি স্কুল থেকে ২০১৬ সালে কৃতিত্বের সাথে এস এস সি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ+ প্রাপ্ত ৫০০ জন কৃতি শিক্ষার্থী ছাত্র/ছাত্রীদের হাতে সম্মাননা ও সনদপত্র তুলে দেন প্রধান অতিথি সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দীন।
