প্লটের ঘোষণায় শান্ত হলেন এমপিরা

অবশ্য এই প্লট কোথায় দেওয়া হবে, রাজধানীতে নাকি রাজধানীর বাইরে তা পরিষ্কার করেননি তিনি।
জাতীয় সংসদের সোমবারের অধিবেশনে বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে মন্ত্রী একথা জানান।
মোশাররফ হোসেন বলেন, “রাজউকের অধীনে প্রায় এক লাখ অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করা হবে। সহজ শর্তে এসব অ্যাপার্টমেন্ট গ্রহণ করা যাবে। যেসব সাংসদ জমি চাচ্ছেন, তারা জমি না নিয়ে এই সুযোগ গ্রহণ করুন, অ্যাপার্টমেন্ট নেন।”
মন্ত্রীর এই বক্তব্যর সঙ্গে সঙ্গে অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত সংসদ সদস্যরা সমস্বরে ‘নো নো’ বলতে থাকেন।
পরে ডেপুটি স্পিকারের ফজলে রাব্বী মিয়া সাংসদদের আশ্বস্ত করে বলেন, “আমরা মাননীয় মন্ত্রীকে কথা বলতে দেন। দেখেন উনি কী বলে।
এরপর মোশাররফ হোসেন বলেন, “অ্যাপার্টমেন্ট নেওয়ার পরেও আমি নতুন প্রকল্প নেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। এ নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এখানে প্রায় দুই হাজার ২০০ একর জমির উপর নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। অ্যাপার্টমেন্ট নেওয়ার পরেও সেখানেও আপনাদের প্লট দেওয়া হবে।”
এর আগে গত বছরই ঘোষণা এসেছিল সরকার নতুন করে আর কোনও প্লট বরাদ্দ দেবে না, যা নিয়ে এমপিদের অনেকেই বিভিন্ন সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সাংসদদের নিজ এলাকায় প্রকল্প গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে পূর্তমন্ত্রী বলেন, “জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের অধীনে পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা গ্রহণ করছি। ইতিমধ্যে ৫৫টি এলাকায় এটি করেছি। আপনারা ২০ একরের মধ্যে প্রকল্প দেন, পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা করতে পারবেন। খরচ দেবে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। মানুষকে শহরমুখী না হওয়ার জন্য এটা করছি।”
বক্তব্যের এক পর্যায়ে জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করেন মোশাররফ হোসেন।
আওয়ামী লীগের এই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, “যেখানে যুদ্ধ, যেখানে গোলাবারুদ সেখানেই উনি (জিয়াউর রহমান) নাই। উনি আসলে কোনও যুদ্ধ করেননি।”
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, “তার সাথে থাকা একজন লেফটেন্যান্ট অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রেখে রামগরে চলে যান জিয়া। সেখানে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনি এখানে কেন?’ তিনি বলেন, ‘আমি ভারত থেকে অস্ত্র নিতে এসেছি’। অর্থাৎ, যেখানে যুদ্ধ গোলাবারুদ, সেখানেই উনি নেই।”
“আজ হঠাৎ এসব কথা মনে পরল পাশেই বসা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কার সাথী মেজর রফিকুল ইসলাম ও ক্যাপ্টেন সুবিদ আলী ভূইয়াকে দেখে। তারা আছেন, তারা বলতে পারবেন”, যোগ করেন গণপূর্ত মন্ত্রী।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে বাজেট বক্তৃতায় বলেন, প্রযুক্তি গ্রহণের হার সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন একটি দৃষ্টান্ত। দেশের ৭৫ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করছে, ঘরে বসেই ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।
“৪৫ ভাগ মানুষ ডিজিটাল সেন্টারের ২০ ধরনের সুবিধা ভোগ করছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। প্রতিদিন মোবাইল ব্যাংকিংয়ে পাঁচশ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ শুধুমাত্র আইসিটি খাত থেকে ৫শ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা।”
তরীকত ফেডারেশনের এম এ আউয়াল বলেন, “দেশবিরোধী নানা চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র চলছে। নতুন আলামত গুপ্তহত্যা। দেশকে বিভক্তির মুখে ঠেলে দিতে অপরাজনীতি করছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নেতা সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। যা দেশের সার্বভৌমত্ব বিরোধী, এটা হাল্কাভাবে দেখলে চলবে না।”
জাতীয় পার্টির ফজলুর রহমান বলেন, “আর্থিক সেক্টর গত সাত বছরে তছনছ হয়ে গেছে। ৭ বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকা কিছু সিন্ডিকেটের মাধ্যমে লুণ্ঠন করা হয়েছে, কিন্তু কোন বিচার করা হয়নি। পুঁজিবাজার থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে, নিঃস্ব হয়ে গেছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। কাউকেই বিচারের আওতায় আনা হয়নি। এসব লুণ্ঠনকারীদের হাত রাষ্ট্রের থেকে লম্বা হতে পারে না।”
তিনি বলেন, “ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হত্যার উৎসব হয়েছে। মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে গুলিবিদ্ধ নির্বাচন হয়েছে।”

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930