বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে নির্বাচন কমিশন।
শুক্রবার (৩ জুন) দুপুরে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে বাঁশখালী থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলায় আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) ও বাহারছড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী তাজুল ইসলাম এবং ওলামা লীগ সভাপতি মাওলানা আকতার হোসাইন।
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার (১ জুন) বেলা ১২টার দিকে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত ও অশ্রাব্য গালিগালাজ করার মতো নজিরবিহীন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।
ওই দিনই বাংলানিউজকে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জাহিদুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘সংসদ সদস্যের পিএস তাজুল ইসলাম আমাকে একটি তালিকা দিয়েছিলেন।সেই তালিকা অনুযায়ী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগের জন্য এমপি নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান।ওই তালিকা অনুযায়ী আমি প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগ না দেওয়ায় তারা আমার ওপর অসন্তুষ্ট হন। আজ (বুধবার ) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আমি বাহারছড়া ইউনিয়নে ছিলাম। এমপি সাহেব আমাকে ইউএনওর কার্যালয়ে ডেকে পাঠান। আমি সেখানে গেলে তিনি শুরুতেই উত্তেজিতভাবে আমাকে বলেন, অ্যাই… (ছাপার অযোগ্য গালি) আমি যাদের দায়িত্ব দিতে বলেছিলাম, তাদের তালিকায় রাখিসনি কেন ? আমি বললাম, স্যার, আমি নির্বাচনী আইন অনুযায়ী কাজ করেছি। এসময় তিনি বলেন, অ্যাই তোরা কোথায় ? … (ছাপার অযোগ্য গালি) মারতে হবে।
তখন এমপি নিজেই আমাকে … (ছাপার অযোগ্য গালি), মা-বাবা ধরে গালি দিয়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় দিতে থাকেন। আমি বলি, স্যার আপনি আমার গায়ে হাত দিতে পারেন না। তখন তার সন্ত্রাসীরা এসে আমাকে কিল, ঘুষি, লাথি দিতে শুরু করে। এসময় সেখানে বাঁশখালী থানার একজন এস আই ছিলেন। তিনি কোন বাধা দেননি। আমি স্যারকে (আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা) ফোন করার জন্য পকেট থেকে মোবাইল বের করলে পুলিশ কর্মকর্তা সেটি আমার কাছ থেকে কেড়ে নেন। পরে এমপি সাহেব আমাকে বাঁশখালী ছেড়ে না গেলে মেরে ফেলার হুমকি দেন। আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে দ্রুত শহরে চলে এসেছি।’
পরদিন বৃহস্পতিবার (০২ জুন) সকাল থেকে বাঁশখালী পৌরসভা সদরে নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে সংসদ সদস্যের অনুসারী নেতা-কর্মীরা মিছিল-সমাবেশ করেন। এ ঘটনার পর বাঁশখালীতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।