॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেত্রী কল্পনা চাকমার অপহরনের ২০ তম দিবসে উপলক্ষে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন।
রবিবার (১২ জুন) কল্পনা চাকমা অপহরণের ২০তম দিবস উপলক্ষে ‘অপহরণ ঘটনার যথাযথ তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ ও অপহরণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে’ এ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মহিলা সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সহ-সভাপতি সোনারাণী চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুপ্রভা চাকমা, কল্পনা অপহরণ মামলার আইনজীবী ও ব্লাস্টের রাঙ্গামাটি জেলার সমন্বয়ক এ্যাডভোকেট জুয়েল দেওয়ান, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অমিতাভ তঞ্চঙ্গ্যা, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পুলক চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী দীপা চাকমা। প্রতিবাদ সমাবেশটি পরিচালনা করেন মহিলা সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জোনাকী চাকমা।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ‘বিগত ২০ বছরেও অপহৃত কল্পনা চাকমার হদিশ না পাওয়া, অপহরণ ঘটনার যথাযথ তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করতে না পারা, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে না পারা’ সরকার তথা রাষ্ট্রের ব্যর্থতা এবং রাষ্ট্রের জন্য লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করেন। ‘কল্পনা অপরহরণ ঘটনার যথাযথ ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে প্রধানমন্ত্রী, সরকার, বিচার বিভাগ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়-দায়িত্ব রয়েছে’ বলে নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন।
নেতৃবৃন্দ ‘কল্পনা চাকমা অপরহরণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারীদের উপর নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যা, ধর্ষণ ইত্যাদি উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে’ বলে উল্লেখ করেন এবং অবিলম্বে অপহরণ ঘটনার যথাযথ তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ ও অপহরণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ এ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত জুম্ম নারীর উপর সহিংস ঘটনার একটিরও ন্যায়বিচার এবং অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত হয়নি বলে অভিযোগ করেন এবং এভাবে একের পর এক অপরাধীদের বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি অব্যাহত থাকলে এই দেশটি মধ্যম বা উন্নত দেশে পরিণত না হয়ে পিশাচ ও অপরাধীদের দেশে পরিণত হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
নেতৃবৃন্দ পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান ও এই অঞ্চলে শান্তি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করণের লক্ষে এবং জুম্ম নারীদের নিরাপত্তা বিধান ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের নিকট জোর আহ্বান জানান।
এর আগে সকালে জনসংহতি সমিতির জেলা কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বনরূপা বাজার ঘুরে এসে ডিসি অফিসের দক্ষিণ ফটকে এসে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়।।