পুলিশের এক কনস্টেবল উত্তরার খালপাড় দিয়ে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে যাচ্ছিলেন, হঠাৎ তার এক সন্তানের প্রস্রাব পায়। ছেলেকে প্রস্রাব করাতে গিয়েই তিনি নম্বরপ্লেটবিহীন একটি কালো পাজেরো জিপ ঘিরে ৪/৫ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে অবহিত করেন।
আর এই সূত্র ধরেই শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুর-আশুলিয়া বেড়িবাঁধ সংলগ্ন খাল থেকে বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।
উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৯৭টি পিস্তল, ৪৬২টি ম্যাগাজিন, ১০টি বেয়োনেট ও সহস্রাধিক রাউন্ড গুলি।
কীভাবে অস্ত্রের সন্ধান পাওয়া গেল, এই প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেন, “সম্প্রতি দক্ষিণখান থাকা থেকে তুরাগ থানায় বদলি হওয়া এক কনস্টেবল দুপুরে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ওই খালপাড় দিয়ে যাচ্ছিলেন। তার দেয়া তথ্য থেকেই এই অভিযান চালানো হয়।”
তিনি বলেন “ওই কনস্টেবল এক সময় খালপাড়ের কাছে সন্তানকে প্রস্রাব করাতে গিয়ে নম্বরপ্লেটবিহীন একটি কালো পাজেরো জিপ এবং তার পাশে চার-পাঁচজন লোককে দেখেন। তাদের আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তুরাগ থানায় ফোন করেন তিনি।”
উত্তরা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ম্যানেজার আরিফুজ্জামান শেখ বলেন, বিকাল পৌনে ৫টার দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে খালে তল্লাশি চালানোর জন্য তাদের কাছে ডুবুরি চাওয়া হয়।
পুলিশের চাহিদামতো সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সদর দফতর থেকে তিনজন ও টঙ্গী ষ্টেশন থেকে দু’জনসহ মোট পাঁচজন ডুবুরির একটি দল স্থানীয়ভাবে দিয়াবাড়ি খাল নামে পরিচিত ওই খালে তল্লাশি শুরু করে। এর আগেই পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ওই স্থানটি ঘিরে রেখেছিল বলে তিনি জানান।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক অপারেশন মেজর শাকিল আহমেদ ঘটনাস্থলে বলেন, ‘তুরাগ নদীর একটি শাখা দিয়াবাড়ি খাল। খালটির অবস্থান উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টরের শেষ প্রান্তে। এর পাশেই মিরপুর-আশুলিয়া বেড়িবাঁধের প্রধান সড়ক।’
তিনি বলেন, ‘খালে ৭ থেকে ৮ ফুট পানি রয়েছে ডুবুরিরা খালে তল্লাশি চালিয়ে একটি ব্যাগের ভেতর থেকে স্কচ টেপ দিয়ে মোড়ানো কার্টন উদ্ধার করে। ওই কার্টনের ভেতরেই পাওয়া যায় চীনের তৈরি ৯৫টি সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোরের পিস্তল এবং স্থানীয়ভাবে তৈরী দু’টি পিস্তল।’
পাশাপাশি ১০৪টি সিলভার বক্সের ভেতর সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোরের ১৮৯টি ম্যাগজিন, ১০টি গ্লোক পিস্তলের ম্যাগজিন এবং ২৬৩টি এসএমজির ম্যাগজিনসহ ৪৬২টি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া ওই কার্টনের ভেতর থেকে ৮৪০ রাউন্ড নাইন এমএম পিস্তলের গুলি, চায়নিজ পিস্তলের ২২০ রাউন্ড গুলিসহ মোট ১ হাজার ৬০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। গুলিগুলো টিফিন বক্সের মধ্যে ব্যাগের ভেতরেই পাওয়া যায় বলে তিনি জানান।