বর্তমান সরকার দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বদ্ধপরিকর জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
তিনি বলেছেন, দুষ্কৃতিকারী ও সন্ত্রাসীরা বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার করে যাতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডা না চালাতে পারে সেজন্য দেশের সব থানায় এলাকায় নিয়মিত তল্লাশি এবং সন্দেহভাজন লোকদের গতিবিধির ওপর গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।
সোমবার (৬ জুন) বিকেলে দশম জাতীয় সংসদের একাদশতম অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নুরজাহান বেগমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা জানান।
এর আগে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।
মন্ত্রী আরও জানান, দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়নে সরকার আন্তরিক ও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সরকার পুলিশ বাহিনীর জনবল বৃদ্ধিসহ পরিবহন ও অন্যান্য লজিস্টিকস বৃদ্ধি করেছে। অপরাধীদের গ্রেফতারপূর্বক আইনের আওতায় আনার জন্য নিয়মিতভাবে পুলিশি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
মন্ত্রী জানান, দুষ্কৃতিকারীরা যাতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটাতে না পারে সেজন্য দেশের সব থানা এলাকার মেস, ভাড়া ঘর, আবাসিক হোটেল ও বাসস্ট্যান্ডসমূহে নিয়মিত তল্লাশি ও সন্দেহভাজন লোকদের গতিবিধির ওপর গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য গোয়েন্দা সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অধিকতর উন্নয়নের লক্ষ্যে সুশীল সমাজ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যম কর্মীদের সহায়তায় সভা-সেমিনারের মাধ্যমে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও মাদকের কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম নেওয়া হচ্ছে। জেলা থেকে মাদকদ্রব্য নির্মূল করার লক্ষ্যে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ‘মাদক নির্মূল তথ্য সেল’ খোলা হয়েছে।
সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা হ্রাস পেয়েছে:
সরকারি দলের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ড বন্ধের ব্যাপারে বাংলাদেশের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সর্বোচ্চ নেতৃত্ব পর্যায়ে প্রতিটি ডিজি লেভেল কনফারেন্সে আলোচনা হয়ে থাকে। ভারতীয় সরকার সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছে। ইতোমধ্যে বিএসএফ প্রাণঘাতি অস্ত্র ব্যবহারের পরিবর্তে নন-লেথাল উইপন (অস্ত্র) ব্যবহার করছে।
মন্ত্রীর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৬ সালে যেখানে সীমান্তে ১০৬ বাংলাদেশি নিহত হয়েছিলো, ২০১৫ সালে তা নেমে ৪৫ জনে দাঁড়িয়েছে। চলতি বছরের ২৯ মে পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফের হাতে ৮ বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরিসংখ্যানটি পর্যালোচনা করলে সহজেই প্রতীয়মান হয় যে, সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা পূর্বের তুলনায় ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। আশা করা যায়, আগামী দিনগুলোতে তা আরও হ্রাস পাবে।
জাতীয় পার্টির সালমা ইসলামের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে মাদক অপরাধের প্রকৃতির ভিত্তিতে কঠোর হতে কঠোরতর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিকে লালন করে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সীমান্ত এলাকা এবং অধিক মাদকপ্রবণ এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।