শিরোনাম
প্রচ্ছদ / অর্থনীতি / ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্য মুদ্রানীতিতে

ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্য মুদ্রানীতিতে

চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য (জুলাই-ডিসেম্বর) ঘোষিত এই মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
আগামী মুদ্রানীতিতে (জানুয়ারি-জুন) তা আরও বাড়িয়ে ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ করার লক্ষ্য ধরা হবে বলে জানিয়েছেন গভর্নর ফজলে কবির।
মঙ্গলবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “নতুন মুদ্রানীতি সংযত ও সঙ্কুলানমুখি; অন্তর্ভূক্তিমূলক। পরিবেশবান্ধব মুদ্রা ও অর্থায়নের ধারাবাহিকতা এতে রক্ষা করা হবে।”
গভর্নরের বলা ‘সংযত’ ও ‘সঙ্কুলানমুখি’ শব্দ দুটির ব্যাখ্যা পাওয়া যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পালের কথায়।
গভর্নর নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করার পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমরা আসলে হুট হাট ১০০ বা ২০০ কোটি টাকা ঋণকে নিরুৎসাহিত করতে চেয়েছি। ভাল ঋণ প্রবাহকে উৎসাহিত করতে চেয়েছি।
গত জানুয়ারি-জুন মেয়াদে যে মুদ্রানীতি বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়েছিল তার ধারাবাহিকতা নতুন মুদ্রানীতিতেও রক্ষা করা হবে বলে অনুষ্ঠানে জানান গভর্নর।
৩০ জুন শেষ হওয়া ২০১৫-১৬ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিতে (জানুয়ারি থেকে জুন) বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মে মাস পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ৪০ শতাংশ
গত মার্চে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম মুদ্রানীতি ঘোষণা বরতে আসা ফজলে কবির বলেন, “টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক, পরিবেশবান্ধব প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের কার্যক্রমে সহায়তার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি পরিমিত ও স্থিতিশীল রাখা নতুন মুদ্রানীতির অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।”
১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৮ শতাংশে আটকে রাখার আশা প্রকাশ করেছে সরকার।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ।
আর জুলাই-মার্চ সময়ের (নয় মাস) হিসাব কষে বিবিএস যে তথ্য দিয়েছে তাতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ০৫ শতাংশ অর্জনের কথা বলা হয়েছে।
গভর্নর বলেন, গত কয়েক বছর দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকায় রপ্তানির পাশাপাশি মূলধনী যন্ত্রপাতিসহ আমদানি বেড়েছে। বিশেষ করে বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় সরকারি আমদানিও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
“এ অবস্থায় নতুন মুদ্রানীতিতে অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ। এর মধ্যে বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ আর সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ।”
অভ্যন্তরীণ ঋণের এই প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণ কেরা গেলে তা বাজেটে ঘোষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সহায়ক হবে বলে ফজলে কবিরের আশা।
তিনি বলেন, গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রেমিটেন্স প্রবাহ ২ দশমিক ৫ শতাংশের মতো কমেছে। কিন্তু টাকার মান ধরে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংককে এই সময়ে বাজার থেকে বিদেশি মুদ্রা কিনে নিতে হয়েছে। ফলে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।
বেসরকারি খাতে দেওয়া ঋণ যাতে অনুৎপাদনশীল ও ঝুঁকিপূর্ণ খাতে ব্যবহার না করে উৎপাদনশীল কাজে ব্যবহার হয়- তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘নিবিড় নজরদারি’ করবে বলেও জানান গভর্নর।
তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেশি থাকায় ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানোর গতি খুবই ধীর।
“তাই খেলাপী ঋণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস করে ঋণের সুদের হার কার্যকরভাবে কমাতে হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের রেপো ও রিভার্স রেপোর নীতিসুদ হার আপাতত অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানান তিনি।
ফজলে কবির বলেন, “জঙ্গিরা যাতে ব্যাংকের সুবিধা না নিতে পারে সেজন্য ইতোমধ্যে আমরা সকল ব্যাংকের এমডির সাথে বৈঠক করেছি। অক্টোবরের মধ্যে প্রত্যেক ব্যাংককে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের ঘোষিত আর্থিক নীতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে প্রতি অর্থবছরে দুটি মুদ্রানীতি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের এই মুদ্রানীতির মেয়াদ শেষে জানুয়ারিতে পরবর্তী মুদ্রানীতি দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মেলন কক্ষে মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী, আবু হেনা মুহাম্মদ রাজি হাসানসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পড়ে দেখুন

রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার জাহাজীকরনে জটিলতা :: চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির উদ্বেগ প্রকাশ

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি খলিলুর রহমান গভীর উদ্বেগের সাথে …