রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেছেন, জেলায় জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও নাশকতা বিরোধী প্রচারনা জোরদার ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস বিরোধী সভার আয়োজন করা হবে। তিনি বলেন, প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক প্রচারণা ও মসজিদের ইমামদের জঙ্গী বিরোধী বক্তব্যের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মাঝে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। এর ফলে জঙ্গীবাদ সম্পর্কে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মাঝে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হবে। তিনি অভিভাবকদেরও নিজ নিজ সন্তানদের প্রতি নজর রাখারও পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
বুধবার (২৭জুলাই২০১৬ইং) সকালে রাঙ্গামাটি পর্যটন কমপ্লেক্স সম্মেলন কক্ষে জুলাই মাসের জেলা উন্নয়ন কমিটির সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জাকির হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক আহমদ, জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি সহকারী কমিশনার তাপস শীল, পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী আবদুস সামাদ, সিভিল সার্জন ডাঃ ¯েœহ কান্তি চাকমা, প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল’সহ জেলার বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধান, কমিটির সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি জানান, জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস নির্মূলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা সহযোগিতা করায় এবারের ঈদ ও রথযাত্রা সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করা গেছে। আগামীতেও এ ধরনের সহযোগিতা তিনি সকলের কাছ থেকে আশা করেন।
জেলার যে কোন স্থান থেকে বিগত কয়েক মাস কিংবা বছর ধরে কোন পরিবারের সন্তান নিখোঁজ থাকলে বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করার পরামর্শও দেন পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধি। এছাড়া জেলার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মাঠে সবসময় পুলিশ প্রশাসন কাজ করছে বলে জানান তিনি।
জেলা গালর্স গাইড এসোসিয়েসনের জেলা কমিশনার জানান, স্কুল এবং কলেজের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি রেঞ্জার ও গালর্স গাইডে সম্পৃক্ততার প্রয়োজন রয়েছে। এর ফলে তাদের মাঝে নৈতিকতা ও দেশপ্রেম আরো জাগ্রত হবে। তিনি এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
রাঙ্গামাটি চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধি জানান, পর্যটনখ্যাত এই জেলা কিছু অবৈধ দখলবাজদের কারণে দিন দিন সৌন্দর্য হারাতে বসেছে। দ্রুত এই দখলবাজদের উচ্ছেদে পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য তিনি পরিষদ ও প্রশাসেনর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
রাঙ্গামাটি পৌরসভার কাউন্সিলন জানান, বন বিভাগ, টিএন্ডটি ও প্রশাসনের সহযোগিতায় শহরের বনরুপা চৌমোহনীতে সিএনজি স্টেশন করার জন্য রাস্তা প্রসস্থ করা হচ্ছে। খুব শীর্ঘ্রই কাজ সম্পন্ন হবে।
বাংলাদেশ বেতার রাঙ্গামাটি শাখার সহকারী পরিচালক জানান, বেতারে সকাল ১১টা হতে নিয়মিত অনুষ্ঠান ১০৩.২ মেগাহার্টসে সম্প্রচার করা হচ্ছে।
খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা জানান, গত মে মাস হতে ২৫ জুলাই ২০১৬ পর্যন্ত এ বছরের ধান সংগ্রহ কার্যক্রম ছিল এর মধ্যে ধান চাষীদের কাছ থেকে ২৩৩ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে।
মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের কর্মকর্তা জানান, কাপ্তাই লেইকে মৎস্য শিকার বন্ধকালীন সময়ে বিএফডিসির পাশাপাশি নৌ পুলিশ কাজ করছে। এ পর্যন্ত ১টন অবৈধ কাঁচা মাছ জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া কাপ্তাই হ্রদে পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স এর কর্মকর্তা বলেন, কাউখালী উপজেলার ফায়ার স্টেশনের কাজ প্রায় ৮৫% সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া নৌ ফায়ার স্টেশন ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় ফায়ার স্টেশন বসানো কাজ দ্রুত করা হবে।
এছাড়া সভায় উপস্থিত অন্যান্য বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ স্ব স্ব বিভাগ ও জেলার সমস্যা মতামত ও অন্যান্য কার্যক্রম উপস্থাপন করেন চেয়ারম্যান উপস্থাপিত সমস্যা ও মতামত গুলো গুরুত্বের সাথে আলোচনা করে সমাধানের পরামর্শ এবং পরিষদ হতে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন ।