বার বার তাগাদা দেওয়ার পরও পৌনে পাঁচশ কোটি টাকা বকেয়া শোধ করতে না পারায় সিটিসেলের তরঙ্গ কেন বাতিল করা হবে না- তা জানতে চেয়ে গত ১৭ অগাস্ট সিটিসেলকে নোটিস দিয়েছিল টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। জবাব দেওয়ার জন্য এক মাস সময় দেওয়া হয়েছিল নোটিসে।
সে পর্যন্ত সিটিসেলকে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে বলেছে হাই কোর্ট।
সিটিসেলের এক আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেয়।
সিটিসেলের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রেজা-ই-রাকিব।
আদেশের পর রেজা-ই-রাকিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সিটিসেলের তরঙ্গ বাতিল ও কার্যক্রম বন্ধের পদক্ষেপ, সিটিসেলকে দেওয়া বিটিআরসির নোটিস এবং পাওনা আদায়ে করা মামলাসহ বেশ কিছু বিষয়ে স্থগিতাদেশ চেয়ে রোববার হাই কোর্টে তারা এ আবেদন করেন।
“আদালত শুনানি নিয়ে আবেদনটি নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি বিটিআরসির নোটিসের জবাব দেওয়ার দিন পর্যন্ত কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দিতে বলেছে।”
এর ফলে অন্তত ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিটিসেল কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে বলে এই আইনজীবীর ভাষ্য।
এদিকে সিটিসেল গ্রাহকদের অপারেটর পরিবর্তনের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে।
বিটিআরসি প্রধান শাহজাহান মাহমুদ সোমবার বিকেলেও বলেছিলেন, ২৩ অগাস্ট রাত ১২টা ১ মিনিটে সিটিসেল বন্ধ হয়ে যাবে- এটাই সরকারের নির্দেশনা।
আদালতের আদেশ আসার পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমরা আগে সরকারের নির্দেশনার কথা বলেছি। এখন আদালত সময় দিয়েছে।”
সরকারের পাওনা পরিশোধ করতে একটি বিদেশি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করার কথা জানিয়ে সিটিসেলের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স তাসলিম আহমেদ গত বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এর মাধ্যমে বকেয়াসহ অন্যান্য বিষয়ের সমাধান করত পারবেন বলে আশা করছেন তারা।
গত ১৬ অগাস্ট সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিলের ‘নীতিগত সিদ্ধান্ত’ নেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেলের গ্রাহক সংখ্যা কমতে কমতে এখন দুই লাখের চেয়ে কম।
টু-জি তরঙ্গ ফি, বার্ষিক লাইসেন্স ফি, বার্ষিক তরঙ্গ ফি, রেভিনিউ শেয়ারিংসহ বিভিন্ন খাতে সিটিসেলের কাছে সরকারের পাওনা দাঁড়িয়েছে ৪৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা।