॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশন সংশোধন আইন ২০১৬ বাতিলের দাবীতে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে ৫ বাঙ্গালী সংগঠক। সোমবার (৮আগষ্ট) সকাল ১০টায় রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন, পার্বত্য গণ পরিষদ ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র ঐক্য পরিষদের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার নারী-পুরুষরা অংশগ্রহণ করেন।
পার্বত্য নাগরিক পরিষদের আহবায়ক বেগম নুর জাহান সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য গণ পরিষদ নেতা আতিকুর রহমান আতিক, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র ঐক্য পরিষদের নেতা শহীদ রিটন ও মোঃ আলাউদ্দিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে সম্প্রতি মন্ত্রীসভায় পাস হওয়া পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশন সংশোধন আইন বাতিলের দাবী জানিয়ে বক্তারা বলেন, এই কমিশনের সদস্যদের মধ্যে কোন বাঙ্গালী প্রতিনিধি নেই। কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য সচিব পদে সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের অবসর প্রাপ্ত বিচারপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবং বাকী সদস্যরা নৃগোষ্ঠীর সদস্য হতে নিয়োগ দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙ্গালী কোন প্রতিনিধি না থাকাতে পার্বত্য চট্টগ্রামের এক তৃতীয়াংশ বাঙ্গালী জনগনের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত হয়েছে। বাঙ্গালীরা তাদের ভূমির অধিকার হারাবে।
অবিলম্বে সরকারের কাছে এ বিতর্কিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশন আইন দ্রুত বাতিল জানায় ওই সংগঠনের নেতা। একই সাথে আগামী ১০আগস্ট তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে সকার-সন্ধ্যা হরতাল পালনের জন্য পার্বত্যবাসীকে আহবান জানানো হয় এবং ৮দফা দাবীনামা পেশ করা হয়।
দাবীগুলো মধ্যে রয়েছে, ১। বাংলাদেশের আদিবাসী বিষয়ক সংগঠনগুলো ও তাদের তৎপরতা নিষিদ্ধ করা। বাঙ্গালীদেরকেই বাংলাদেশের আদিবাসী হিসাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। ২। শিক্ষা, চাকুরিসহ সকল ক্ষেত্রে উপজাতীয় কোটা বাতিল করে সংবিধান মোতাবেক অনগ্রসর কোটা কর। তিন পার্বত্য জেলায় বাঙ্গালী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য জনসংখ্যানুপাতে আলাদা ছাত্রাবাস নির্মাণ করতে হবে। ৩। ভূমি সমস্যা নিরসনে অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি জরীপ কর এবং ভূমি কমিশন আইন-২০১৬ এর বৈষম্যমূলক ধারা বাতিল কর। বাঙ্গালীদের ক্রয়কৃত ও সরকার কর্তৃক পুনর্বাসিত জমি থেকে উচ্ছেদ বন্ধ কর এবং গুচ্ছগ্রামের বাঙ্গালীদের নিজ জমিতে পূর্নবাসিত কর। ৪। পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা কর। ত্রিশ হাজার বাঙ্গালী হত্যার দায়ে সন্তু লারমাসহ সকল উপজাতীয় খুনীদের বিচার কর। ৫। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে কোনোভাবেই সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করা যাবে না এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে সেনা ক্যাম্প এবং অরক্ষিত সীমান্তে বিজিবি ক্যাম্প স্থাপন করা। ৬। উপজাতীয় আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর ঘৃণাত্মক, বিদ্বেষমূলক, সাম্প্রদায়িক ও বিছিন্নতাবাদী প্রচারণা বন্ধ করতে কঠোর মনিটরিং চালু কর। ৭। ব্যবসা, ব্যাংক লোন, ইনকাম ট্যাক্স, ভ্যাটসহ সকল ধরণের অথনৈতিক ক্ষেত্রে উপজাতিদের ন্যায় বাঙ্গালীদের সুবিধা প্রদান কর, ৮। জেলা পরিষদ, আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব নিয়োগ, চাকুরীসহ সকল ক্ষেত্রে যুক্তিসঙ্গত বাঙ্গালী ও পাহাড়ী কোটার নিশ্চয়তা চাই।