আজ ৯ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটির লংগদুর ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যাকান্ড দিবস । ২০ বছর আগে ১৯৯৬ সালের এই দিনে লংগদু উপজেলার পাকুয়াখালীর গহীন বনে ৩৫ নিরীহ বাঙালী কাঠুরিয়াকে হত্যা করা হয়। কাঠুরিয়াদের লাশ ফেলে দেয়া হয় পাহাড়ি খাদে । এর মধ্যে ২৮ জনের লাশ পাওয়া গিয়েছিল। বাকি ৭ জন কাঠুরিয়ার লাশ পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার জন্য বর্তমান বিলুপ্ত উপজাতীয় শান্তিবাহিনীকে দায়ী করা হয়। শান্তিবাহিনী আলোচনার কথা বলে কাঠুরিয়াদের বনে ডেকে নিয়ে গিয়ে এ হত্যাযজ্ঞ চালায়। সে দিন তারা কাঠুরিয়াদের নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে এবং পাহাড়ি খাদে ফেলে দেয়। সেই থেকে পার্বত্য এলাকায় বাঙ্গালীরা প্রতি বছর এ দিনটিকে পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের বহু গণহত্যার মধ্যে অন্যতম ঘটনা। এ হত্যা কান্ডের ২০ বছর পার হলেও এ হত্যাকান্ডের বিচার হয়নি। দীর্ঘ দিনেও বিচার না পেয়ে এখনো হতাশায় দিন কাটাচ্ছে নিহতদের পরিবার।
প্রতিবারের ন্যায় এ বছরও বিভিন্ন কর্মসুচির মাধ্যমে পার্বত্য বাঙ্গালীরা এ দিবসটি পালন করছে। দিবসকে ঘিরে রাঙ্গামাটির ৬টি বাঙ্গালী সংগঠন নানা কর্মসুচি নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৯ সেপ্টেম্বর লংগদু উপজেলায় স্থানীয় বাঙ্গালীরা শহীদদের গণকবর জিয়ারত, শোক র্যালী, দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
এছাড়া রাঙ্গামাটি শহরে পার্বত্য পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য বাঙ্গালী যুব ফ্রন্ট, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র ঐক্য পরিষদসহ অন্যান্য সংগঠনগুলো হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে র্যালী ও শোক সভার আয়োজন করেছে। পার্বত্য এলাকার বাইরে একই দাবিতে বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করবে। বর্বর এই হত্যাকান্ডের স্মরণে এখনো কেঁদে উঠে লংগদুর মানুষ।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর শান্তি বাহিনী লংগদুর ৩৬ জন কাঠুরিয়াকে আলোচনার কথা বলে পাকুয়াখালী নামক গহীন বনে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে তিন দিন কাঠুরিয়াদের হাত-পা ও চোখ বেঁধে নির্যাতন চালিয়ে মধ্যযুগীয় বর্বরতায় হত্যা করে সকলের লাশ গহীন বনের পাহাড়ী খাদে ফেলে দেয়া হয়। এর মধ্যে ইউনুচ নামের একজন কাঠুরিয়া সে দিন পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়। তার মাধ্যমে সবাই জানতে পারে এ হত্যা যজ্ঞের খবর। পরের দিন ৯ সেপ্টেম্বর পুলিশ ও সেনাবাহিনী পাকুয়াখালীর বন হতে ২৮ জন কাঠুরিয়ার ক্ষত বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে। বাকি ৭ জন কাঠুরিয়ার লাশ পাওয়া যায়নি। এ হত্যা মামলার আজো কোন কুল কিনারা হয়নি ।