ঈদের দিন মঙ্গলবার সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের নেতাসহ সর্বস্তরের নাগরিকদের পর ঢাকায় কর্মরত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাই।
“দেশের না, বিশ্বব্যাপী এই জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ একটা বিরাট সমস্যা। এই সমস্যা যার যার নিজ নিজ অবস্থান থেকে মোকাবেলা করতে হবে।”
গত ঈদুল ফিতরে শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর এবার রাজধানীসহ সারাদেশে কড়া নিরাপত্তায় ঈদুল আজহার নামাজ হয়।
এবার ঈদে সে ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটায় স্বস্তি প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আল্লাহর রহমতে এখন পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনার খবর আমরা পাইনি। সবাই ভালোভাবে ঈদের নামাজ আদায় করতে পেরেছেন।”
নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর প্রশংসা করে তিনি বলেন, “প্রত্যেকে চমৎকার ভূমিকা নিয়েছেন। গোয়েন্দা সংস্থাও যথাসময়ে তথ্য দিয়ে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেতে সহায়তা করছে।”
গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার পর সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি চাই, সবাই জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকবে।
“কারণ বাংলাদেশের মাটিতে কোনো জঙ্গিবাদ আর সন্ত্রাস হোক, সেটা আমরা চাই না।”
অভিভাবক, শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, ধর্মীয় শিক্ষকসহ সাধারণ নাগরিকরা নিজ নিজ কর্মস্থলে যেন যথেষ্ট সচেতন থাকেন, সেই প্রত্যাশাও রাখেন তিনি।
বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রত্যেকে যেন তারা ধর্ম শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে পারে, এটাই হচ্ছে ইসলামের মূল শিক্ষা।”
জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের পদক্ষেপে সর্বস্তরের নাগরিকদের সাড়া দেওয়ার প্রশংসাও করেন তিনি।
বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার উপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মাঝে মাঝে কিছু ঘটনা আমাদের কিছুটা থমকে দেয়। কিন্তু, আমরা যে কোনো ঘটনা মোকাবেলা করতে পারি।
“রক্ত দিয়ে আমরা স্বাধীনতা এনেছি। কোনো ষড়যন্ত্রকারী যেন এই স্বাধীনতার ক্ষতি করতে না পারে। এজন্য, আমাদের সকলকে সচেতন থাকতে হবে।”
ধর্মের নামে মানুষ হত্যার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “নিরীহ মানুষকে হত্যা করে কেউ বেহেশতে যেতে পারে না। তারপরও ধর্মের নামে মানুষ খুন করা, বিবাদ সৃষ্টি করা.. আমি মনে করি, এতে ইসলাম ধর্মেরই ক্ষতি হচ্ছে। ইসলাম ধর্মের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
“ইসলাম ধর্ম পবিত্র ধর্ম, শান্তির ধর্ম। তারা ইসলাম ধর্মকে হেয় প্রতিপন্ন করছে। এই ধর্মের যারা শান্তিপ্রিয় মানুষ তাদের জীবনটা অতিষ্ঠ করছে।”
জাতিসংঘের ৭১তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে ১২ দিনের সফরে ঈদের পরদিন বুধবার ঢাকা ছাড়ছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরবেন তিনি।
এজন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “জাতিসংঘের সম্মেলন শুরু হতে যাচ্ছে। আমি আগামীকালই বিদেশে যাচ্ছি। কানাডায় আমার একটা কর্মসূচি আছে। এরপর নিউ ইয়র্কে যাব।
“আমি সকলের দোয়া চাই। যেন যে দায়িত্ব ভোটের মাধ্যমে জনগণ আমাকে দিয়েছে.. যেখানে যাই, যে কাজই করি, বাংলাদেশের মানুষের মানসম্মান যেন সুউচ্চে রাখতে পারি।”