॥ বিশেষ সংবাদদাতা বান্দরবান ॥ বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ যাতে মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে নারীদের কর্মক্ষেত্র সম্প্রসারণ করা হয়েছে। অবারিত হয়েছে নারীদের কাজের সুযোগ।
মঙ্গলবার বান্দরবান কারিতাসের উদ্যোগে আয়োজিত সন্ত্রাস,জঙ্গীবাদ ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক এ কথা বলেন।
দিলীপ কুমার বণিক বলেন, কারিতাস আপামর জনগণের জন্য এবং তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করছে। তিনি বলেন, সরকারী কার্যক্রমের পাশাপাশি এনজিও গুলো একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করছে। অর্থাৎ এনজিও সংস্থাগুলো মূলত সরকারী কাজে সহায়তা করে। তাই দেশের সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত সন্ত্রাস, জঙ্গী তৎপরতা পরবর্তী সরকার যে প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে, সে কাজে সহায়তা করতে কারিতাস বিশেষ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, জনসংখ্যার আধিক্য আমাদের দেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। যুবদের হাতকে দক্ষ হাতে পরিণত করতে পারলে এ সমস্যা থাকবে না, কারণ বিদেশে আমাদের শ্রমিক ও কারিগরী শ্রমিকদের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলা প্রশাসক সকলকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে জঙ্গী তৎপরতা ও সন্ত্রাসবাদ এবং বাল্যবিবাহ রুখে দেয়ার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দিদার ই আলম মোঃ মকসুদ চৌধুরী বলেন, ভিশন ২০২১কে সামনে রেখে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং ধীরে ধীরে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে। তিনি বলেন, জঙ্গী এবং অন্যান্য উগ্রবাদী সংগঠনগুলো জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস এবং উগ্রবাদের মত ন্যাক্কারজনক ধ্বংসাত্মক তৎপরতার মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ধারাকে বাধাগ্রস্ত করছে। জঙ্গীরা ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে কোমলমতি যুব সমাজকে আকৃষ্ট করে তাদের দিয়ে সন্ত্রাসবাদকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়ার অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেন, ধর্মীয় অনুশাসন ও নৈতিকতাবোধ এবং সর্বোপরি পরিবার থেকে সঠিক দিক নির্দেশনার অভাবে যুব সমাজ বিপথগামী হচ্ছে। তিনি কারিতাসের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা সমাজের তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করেন, অনেকে শিক্ষকতাও করেন। সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আপনাদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। তিনি সমাজে ও দেশে জঙ্গীবাদ ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে জঙ্গীবাদ প্রতিরোধ বিষয়ে ম্যানেজার স্যাপলিং সুভাষ গমেজ,মাঠ কর্মকর্তা-সিএমএফপি মোঃ কামালউদ্দীন, বিটিটিসির অধ্যক্ষ রাখাল দাশ এবং আলোঘর প্রকল্পের ২ জন শিক্ষিকা বক্তৃতা করেন।
’সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ে কারিতাসের কর্মকর্তাগণ বলেন,জঙ্গীবাদ বিষয়টি এখন আমাদের দেশে একটি সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। জঙ্গী ও সন্ত্রাস প্রতিরোধে যার যার অবস্থান হতে এ গুলো সমূলে উৎপাটন করতে হবে, নচেৎ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সস্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়লে পুরো জাতি এদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়বে। বিশেষ করে যুবকযুবতীদের চলাফেরা, গতিবিধি লক্ষ্য রাখতে হবে অভিভাবক ও শিক্ষকশিক্ষিকা ও বন্ধুবান্ধব পর্যায় হতে। এলাকায় আগন্তুক ও বহিরাগতদের খোঁজখবর রাখতে হবে, প্রয়োজনে নিকটস্থ থানায় বা প্রশাসনের নজরে আনতে হবে।
কারিতাসের টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার মিলনায়তনে প্রোগ্রাম অফিসার রুপনা দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় অন্যান্যের মধ্যে সহকারী কমিশনার নাজমা বিনতে আমিন ও নাহিদা আক্তার তানিয়া আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
পরে জেলা প্রশাসক কারিতাস ইংলিশ লেঙ্গুইজ ক্লাবের উদ্বোধন করেন। জেলা প্রশাসক বলেন, ইংরেজী ভাষা আমাদের জন্য, আমাদের কেরিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বিশ্বের দরবারে মাথা তুলে দাঁড়াতে ইংরেজী ভাষাই আমাদের একমাত্র অবলম্বন। তিনি সকলকে ইংরেজী ভাষায় দক্ষতা অর্জনের আহ্বান জানান।