রাঙ্গামাটিতে পার্বত্য ভূমি কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পার্বত্য ভূমি কমিশন আইনের কারণে পার্বত্য এলাকা থেকে বাঙ্গালীদের উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার আশংকাকে অমুলক ধারণা ও শংকা বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক। তিনি বলেন, ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশন পার্বত্য সকল সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করবে। কমিশন পার্বত্য এলাকার ভূমি বিরোধ নিস্পত্তির জন্য কাজ করবে।
রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধনী-২০১৬) আইনের অধ্যাদেশ জারীর পর সকালে রাঙ্গামাটি সার্কিট হাউজে পার্বত্য ভূমি কমিশন বিরোধ নিস্পত্তি কমিশনের প্রথম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
বৈঠকে পার্বত্য এলাকায় ভূমি বিরোধ বিষয়ে নতুন করে দরখাস্ত আহবান সহ কমিশনের লোকবল নিয়োগ ও কর্ম পরিকল্পনা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান ভূমি কমিশন চেয়ারম্যান।
বৈঠকটি রাঙ্গামাটিস্থ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সন্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও হরতালের কারণে স্থান পরিবর্তন করে তা সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত হয়।
কমিশনের বৈঠক শুরুর আগে প্রধানমন্ত্রীর আর্ন্তজাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভি পার্বত্য ভূমি কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসময় সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক শামসুল আরেফিন, পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অরুন কান্তি চাকমাসহ বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে ভূমি কমিশনের অন্তর্ভূক্ত সদস্যদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে পার্বত্য ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমা, চাকমা রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীসহ অন্যান্য সদস্যরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান সন্তু লারমা বলেন, ভূমি কমিশনের কাজ কিভাবে এগিয়ে নেয়া যায় তার উপর আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে ভূমি কমিশনের কার্য পদ্ধতি কি হবে না হবে এবং এখানকার বাজেট, জনবল নিয়োগ এইসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত কলেও ভূমি কমিশনের কাজের উপর সন্তুষ্টির বিষয় নির্ভর করছে বলে জানান তিনি।
চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় বলেন, বৈঠকে ভবিষ্যতের প্রক্রিয়া আমরা কি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দরখাস্ত আহবান করবো তা নিয়ে আলোচনা করা  হয়েছে। এছাড়া কমিশনের জলবলের বিষয় আলোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১০ সালে যে পদ সৃষ্টির জন্য প্রস্তাব হয়েছিল সেগুলো এখনো কার্যকর করা হয়নি। তিন পার্বত্য জেলায় ভূমি কমিশনের অফিসসহ আনুসাঙ্গিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে, পার্বত্য ভূমি কমিশন বাতিলের দাবীতে ও কমিশনের বৈঠকের প্রতিবাদে রবিবার রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে পার্বত্য অঞ্চলের পাঁচটি বাঙ্গালী সংগঠন। শহরে সব ধরণের যান চলাচল ও দোকান পাট বন্ধ থাকে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। বিকাল ৫টার পর শহরে যান বাহন চলাচল শুরু হয় ও দোকানপাট খুলে।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930