॥ বিশেষ সংবাদদাতা ॥ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল পরবর্তী কেন্দ্রীয় কমিটিতে তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবান জেলার কেউ স্থান পায়নি। এতে হতাশ ও মনোক্ষুন্ন্ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় নেতা কর্মীরা। অনেকে আশায় বুক বেধে পাহাড় ছেড়ে রাজধানী গিয়েছিলেন নিজ নেতা কেন্দ্রীয় কোন পদ পাবে বলে সে আশায়, কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত সেই আশা ছিল হতাশায়। তবে এখনো যে সব পদ খালি আছে সে সব জায়গায় পাহাড়ের নেতৃবৃন্দের ঠাই এমনাটা প্রত্যাশা নেতা কর্মীদের। বান্দরবান থেকে গতবার কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশেসিং এমপি, তিনি নতুন সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এর কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত তাই নেতা কর্মীদের ধারনা ছিল তাকে পদন্নোতি দেয়া হবে সেটি তো হয়নি তাকে আগের পদ সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের এক নেতা জানান, কেন্দ্রীয় কমিটিতে বীর বাহাদুর স্থান না পাওয়ায় আমরা হতাশ। এখনো যে পদগুলো খালি আছে আমরা চাই তাকে যথাযথ মুল্যায়ন করে সেখানে দেয়া হোক।
সবচেয়ে হতাশ রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগ। পাহাড়ের তিন জেলায় রাজনীতিতে সিনিয়র দীপংকর তালুকদার। ২০১৪ সনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে যান। দলের নেতা কর্মীদের ধারনা ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সনের ১৫ আগষ্ট স্বপরিবারে হত্যার পর প্রতিবাদি দলের অন্যতম সংগঠক দীপংকর তালুকদারকে মন্ত্রী বানানো হবে। সেটি তো হয়নি বরং কেন্দ্রীয় কমিটির কোন পদও তাকে দেয়া হয়নি।
জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বর বলেছেন, গতবার বান্দরবান থেকে কেন্দ্রীয় নেতা দেয়া হয়েছিল এবার আমরা চাই রাঙ্গামাটি থেকে অসম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী নেতা দীপংকর তালুকদারকে কেন্দ্রে মুল্যায়ন করা হোক।
তিন পার্বত্য জেলায় আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে পুরানো হিসেবে জড়িত রয়েছেন দীপংকর তালুকদার, বীর বাহাদুর উশেসিং এমপি, যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, জাহেদুল আলম এবং সবশেষ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। পাহাড়ের রাজনীতিতে আঞ্চলিক দলগুলো বড় ফ্যাক্টর, এসব ফ্যাক্টর কাটিয়ে উঠে তারা রাজনীতি করছেন। রাজনীতির কঠিন জায়গায় আছেন দীপংকর তালুকদার এবং কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এখানে দুটি আঞ্চলিক দলের প্রভাব বেশী। আঞ্চলিক দলগুলোর হুমকির মুখে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা এলাকা ছাড়া, ক্ষেত্র বিশেষে অনেকে এলাকা ছাড়া। সব কিছু বিবেচনা করে যদি পার্বত্য এলাকা থেকে কাউকে কেন্দ্রে স্থান দেয়া না হয় তাহলে সাংগঠনিক কর্মকান্ডে স্থবিরতা নেমে আসবে বলে মাঠ পর্যায়ের নেতারা মনে করছেন।
এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় পুনাঙ্গ কমিটি গঠনের সময় পার্বত্য ৩ জেলা থেকে ৭জনকে কার্য নির্বাহী কমিটিতে রাখা হয়, কিন্তু আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে কাউকে এখনো পর্যন্ত না রাখায় হতাশ নেতা কর্মীরা। তাদের দাবি পাহাড় থেকে কেন্দ্রে নেতাদের স্থান দিতে হবে, দল যাকে ভালো মনে করে তাকে দিক তাতে সমস্যা নেই, না হলে আসন হারানোর আশংকা রয়েছে।