সোমবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আ স ম শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালতে এ অভিযোগ করেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদের সুজন।
বাদীর আইনজীবী আবুল হাশেম বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ এর (সংশোধিত ২০১৩) ৫৭ ধারায় এ অভিযোগটি করা হয়।
“আদালত বাদির বক্তব্য শুনেছেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করতে বোয়ালখালী থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।”
বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর ছেলে ইরাদের নামে খোলা একটি ফেইসবুক পাতা থেকে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয় সম্প্রতি। তার আগে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক ছবিও আসে ওই ফেইসবুক পাতায়।
এরপর বিভিন্ন স্থানে ইরাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা হলেও সে ধরনের মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যানকে আসামি করা হল চট্টগ্রামের মামলাতেই প্রথম।
খালেদা ও তারেককে আসামি করার বিষয়ে সুজন বলেন, “বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে ইরাদ সিদ্দিকী একা এই বক্তব্য দিতে পারেন না। নিশ্চয় সাংগঠনিক সিদ্ধান্তেই তিনি এ বক্তব্য ফেইসবুকে দিয়েছেন।
“দলের দুই শীর্ষ নেতৃত্ব এ বিষয়ে অবশ্যই জানে। আমার ধারণা, তাদের অনুমতি নিয়েই ফেইসবুকে হত্যার এই ষড়যন্ত্র প্রচার করা হয়েছে।”
চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকী
২০১২ সালে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (পরে ওই ভোট হয়নি) প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে ইরাদ অভিযোগ তুলেছিলেন, বিএনপির প্রার্থী করার বিনিময়ে তার কাছে অর্থ চেয়েছিলেন খালেদা।
ছেলের ওই ভূমিকার কারণে দল থেকে বহিষ্কৃত হন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তানভীর সিদ্দিকী। এরপর থেকে তানভীর ও ইরাদের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই বলে দলটির নেতারা জানান।
ইরাদ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন বলে তার পরিবারকে উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
বোয়ালখালী উপজেলার আহল্লা সাদার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা সুজনের ভাষ্য, ইরাদের ফেইসবুকে জাতির জনককে অবমাননা এবং প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকির বিষয়টি গত ২৭ সেপ্টেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশের পর তার নজরে আসে।
“বোয়ালখালী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে পত্রিকা পড়ে বাদী এ বিষয়ে জানতে পারেন,”বলেন তার আইনজীবী আবুল হাশেম।
ফেইসবুকের ওই স্ট্যাটাসে যারা লাইক দিয়েছেন ও শেয়ার করেছেন, তাদেরও মামলায় আসামি করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা সুজন।
সুজনকে গত ২৮ মে ইউপি নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে আটক করেছিল পুলিশ।
সুজনের আগে বুধবার রাতে ইরাদের বিরুদ্ধে নগরীর কোতোয়ালি থানায় আরেকটি মামলা করেছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার।