চট্টগ্রামের মাজার লুট: ৪ বছর পর মামলা বিচার শুরুর জন্য প্রস্তুত

চট্টগ্রামের মাজার লুট: ৪ বছর পর মামলা বিচার শুরুর জন্য প্রস্তুত
মামলা বাতিল চেয়ে হাই কোর্টে করা প্রধান দুই আসামির আবেদন বাতিল হওয়ায় প্রায় চার বছর পর আবার সচল হতে চলেছে মামলাটি।
রোববার চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আ স ম শহীদুল্লাহ কায়সার ওই মামলার অভিযোগপত্রসহ নথি বিচারিক আদালতে স্থানান্তরের আদেশ দেন। শুনানির জন্য আগামী ২৯ নভেম্বর দিনও ঠিক করে দেন তিনি।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পরিদর্শক (প্রসিকিউশন) এএইচএম মশিউর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই দিনই মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানিও শুরু হতে পারে।”
চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটির বিচার হবে। চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ নুরুল হুদা বদলি হওয়ায় বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সিরাজুদ্দৌলা কুতুবী।
চট্টগ্রাম জেলা আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আ ক ম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, যিনি (বিচারক) দায়িত্বে আছেন, তিনিই শুনানি করতে পারবেন। এতে আইনগত কোনো বাধা নেই। মামলাটি বিচার শুরুর জন্য প্রস্তুত আছে।
মামলার সাত আসামির সবাই জামিনে আছেন। তারা রোববার আদালতে হাজিরা দেন বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা মশিউর।
আসামিরা হলেন- লেফটেন্যান্ট কর্নেল (চাকরিচ্যুত) জুলফিকার আলী মজুমদার, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (চাকরিচ্যুত) শেখ মাহমুদুল হাসান, র্যাব-৭ এর সাবেক ডিএডি আবুল বাশার, এসআই তরুণ কুমার বসু, র্যাবের তিন সোর্স দিদারুল আলম ওরফে দিদার, আনোয়ার মিয়া ও মানব বড়ুয়া।
২০১১ সালের ৪ নভেম্বর মাজারটিতে র্যাব সদস্যরা গিয়ে তল্লাশির নামে ২ কোটি ৭ হাজার টাকা লুটের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৩ মার্চ আনোয়ারা থানায় র্যাবের ১২ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়।
দরবারের পীরের গাড়িচালক মো. ইদ্রিসের মামলার অভিযোগে বলা হয়, “জুলফিকার আলী মজুমদারের নেতৃত্বে র্যাবের একটি দল অভিযান চালিয়ে দরবার শরিফে রাখা আলমারি ভেঙে দুই কোটি সাত হাজার টাকা নিয়ে যায়।”
ওই দিন দরবার শরিফ থেকে মিয়ানমারের পাঁচ নাগরিককে র্যাব সদস্যরা আটক করে। তাদের থানায় হস্তান্তর করা হলেও টাকার বিষয়ে কোনো কিছুই উল্লেখ করেনি র্যাব।
এ ঘটনা পরে জানাজানি হলে র্যাব সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে টাকা লুটের ঘটনায় র্যাব সদস্যদের জড়িত থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে।
অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগ আসার পর তাদের স্ব স্ব বাহিনীতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়, যাদের মধ্যে র্যাব-৭ এর তৎকালীন অধিনায়ক জুলফিকারও ছিলেন।
২০১২ সালের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকার মগবাজার থেকে গ্রেপ্তার হন জুলফিকার। তবে ২১ জুন উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে মুক্ত হন তিনি।
এরপর ওই বছরের ২৬ জুলাই জুলফিকারসহ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন আনোয়ারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবদুস সামাদ।
এরপর থেকে মামলার অভিযোগপত্র সংশ্লিষ্ট জিআরও শাখায় জমা ছিল।
মামলার অন্যতম আসামি মাহামুদুল হাসানের বিষয়ে বিভাগীয় তদন্ত করতে চট্টগ্রামে গিয়ে ২০১২ সালে মৃত্যু হয় বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার মামুনুর রশীদের। একটি হোটেল থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
২০১২ সালেই মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জুলফিকার ও মাহমুদুল হাসান। ২০১৫ সালের ১১ মার্চ জুলফিকারের করা রুল আবেদনটি হাইকোর্টে বাতিল হয়ে যায়।
সর্বশেষ চলতি বছরের ১৮ অগাস্ট মাহমুদুল হাসানের পক্ষে আবেদনটি না চালানোর কথা জানানো হলে সেটিও বাতিল করে দেয় হাই কোর্ট।
সম্প্রতি উচ্চ আদালতের ওই সব আদেশ চট্টগ্রামে এসে পৌঁছায়।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031