॥ লিটন ভট্টাচার্য্য রানা, খাগড়াছড়ি ॥ খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের আলোচিত নেতা জাহেদুল আলমের (সাধারণ সম্পাদক) বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে দলীয় কার্যালয়ের তালা ভেঙ্গে দখলের অভিযোগ তুলেছেন সাংসদ ও জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে জেলা শহরের কদমতলীস্থ জেলা আওয়ামীলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, এমপি।
তিনি বলেন, জাহেদুল আলম গত পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মূল¯্রােত ধারা থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। আওয়ামীলীগের ২০তম কাউন্সিলের পরপর কাউন্সিলরের ছবি দিয়ে ব্যানার-ফেস্টুন করে শহরের সর্বত্র সাটিঁয়ে কী প্রমাণ করতে চাচ্ছেন। প্রশাসন গতকাল সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে দলীয় কার্যালয়ের চাবি আমাকে(এমপি) বুঝিয়ে দেওয়ার পর তিনি(জাহেদুল আলম) মঙ্গলবার সকালে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের তালা ভেঙ্গে কার্যালয় দখল করেছেন। তিনি অত্যন্ত জঘৃন্যতম ও ঘৃণিত কর্মকান্ড। আওয়ামীলীগ শান্তি সম্প্রতির রাজনীতিতে বিশ^াসী আর জাহেদুল আলম ধ্বংস ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে বিশ^াসী।
জাহেদুল আলমের সাধারণ সম্পাদক পদের বিষয়ে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, জাহেদুল আলম দলীয় প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় গঠনতন্ত্র মোতাবেক তিনি আর সাধারণ সম্পাদকের পদে নাই। সভানেত্রী শেখ হাসিনা উনাদের সাধারণ ক্ষমার আওতায় আনায় সাধারণ সদস্য হিসেবে উনারা দলে ফিরতে পারেন। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দলীয় প্রার্থীদের নামের তালিকা ও কাউন্সিলরের কাউন্সিলর কার্ড ও অতিথিদের কার্ড ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরীর স্বাক্ষরে সভানেত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করে সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। এতেই প্রমাণিত হয় বর্তমানে জাহেদুল আলম স্বঘোষিত সাধারণ সম্পাদক।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রণবিক্রম ত্রিপুরা, সহ-সভাপতি ও পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, সহ-সভাপতি চাইথোয়াই চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০১৫সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচন নিয়ে দ্বিধা বিভাজন সৃষ্টি হয় জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, এমপি ও সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলমের মধ্য। নির্বাচনে দল মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে জাহেদুল আলমকে দলছুট অ্যাখ্যা দেয়া হয়। উভয় পক্ষ নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে পাল্টা পাল্টা কর্মসূচি পালন করে। ২০১৬সালের ২০ ফেব্রুয়ারী দলীয় কার্যালয় দখল নেয়াকে কেন্দ্র করে প্রশাসন ওই এলাকায় ১৪৬ধারা জারি করে দলীয় কার্যালয় প্রশাসনের জিম্মায় নেয়। দীর্ঘ ১০মাস পরে গতকাল সোমবার প্রশাসন দলীয় কার্যালয়ের তালা সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার কাছে হস্তান্তর করলে মঙ্গলবার জাহেদুল আলম অনুসারিদের নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের তালা ভেঙ্গে দখল নেয়, দখর করার পর অফিস পরিদর্শন করতে আসে শরণার্থী বিষয়ক ট্রাসফোর্স এর চেয়ারম্যান যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা (প্রতিমন্ত্রী)। বলে অভিযোগ তুলেছেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা.এমপি।