প্রধানমন্ত্রীর সাথে রাঙ্গামাটি জেলার তৃণমুল পর্যায়ের জনগনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স

প্রধানমন্ত্রীর সাথে রাঙ্গামাটি জেলার তৃণমুল পর্যায়ের জনগনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন পার্বত্য শান্তি চুক্তির আলোকে গঠিত পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশনের কাজ শেষে সমতল এলাকার মতো পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারের অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিপুরণের পরিমান বৃদ্ধির বিষয়ে বিবেচনা করা হবে। এছাড়া রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের শাখা নদী গুলোর ড্রেজিং ও রাঙ্গামাটির কার্পেন্টার শিল্প ঘোষণার দাবীর বিষয়ে বিবেচনা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী রাঙ্গামাটি সরকারী মহিলা কলেজকে একটি বাস প্রদানেরও প্রতিশ্র“তি দেন।
গতকাল শনিবার সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কমপ্লেক্স প্রাঙ্গনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে রাঙ্গামাটি জেলার তৃণমুল পর্যায়ের জনগনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিং অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজরুল মান্নান, সাবেক পার্বত্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী রাঙ্গামাটি জেলার তৃণমুল পর্যায়ের মানুষের সাথে কথা বলার শুরুতেই পার্বত্য এলাকার হেডম্যান, কাঠমিস্ত্রি, স্কুল ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেন।

দীপংকর তালুকদার পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে এলাকার সন্ত্রাস বন্ধে পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এছাড়া সাধারণ মানুষের পক্ষ পার্বত্য হেডম্যান সমিতির পক্ষে পার্বত্য এলাকায় সরকার অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিপুরণের পরিমান সমতলের মতো ধার্য্য করতে এবং হেডম্যান ভাতা বৃদ্ধির দাবী জানান। থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কার্পেন্টার শ্রমিকেরা রাঙ্গামাটিতে রাঙ্গামাটিতে কার্পেন্টার শিল্প ঘোষণার দাবী জানান। রাঙ্গামাটি সরকারী মহিলা কলেজের ছাত্রীদের পক্ষ থেকে কলেজে একটি বাস প্রদানের আবেদন জানালে প্রধানমন্ত্রী বাস প্রদানে প্রতিশ্র“তি দেন।
সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ উগ্র সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ সহ সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে আয়োজিত এই ভিডিও কনফারেন্সিং শহরের ৫ টি এলাকায় সম্প্রচার করা হয়।
ভিডিও কনফারেন্স এর আগে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব সভায় মাথা উচু করে চলতে চাই। আমরা সেভাবেই মাথা উঁচু করে চলব। সেইভাবে আমরা বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চাই এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশের উন্নতি হয়। বাংলাদেশ এগিয়ে চলে। বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। কারণ আমরা এদেশকে ভালোবাসি। দেশের মানুষকে ভালোবাসি। দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার ব্রত নিয়েই আমরা রাজনীতি করি। নিজের ভাগ্য গড়া না, মানুষের ভাগ্য গড়া। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্ম একটি সুন্দর দেশ রেখে যাওয়া- এটাই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, আমরা কল্যাণের পথে থাকতে চাই। জনগণের সার্বিক কল্যাণ করাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করতে চাই। তাই সকলের প্রতি আমার আহবান থাকবে- সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা আমাদের দেশকে যেন শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারি। কারণ ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম সবসময় শান্তির কথাই বলেছে অথচ কিছু লোরেকর কারণে খুন খারাপি করে এই ধর্মকে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের ধর্মে যে শান্তির কথা বলা রয়েছে, আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা:) যে শান্তির কথাগুলো বলেছেন- আমি মসজিদের ইমাম সাহেবদের বলব জুমা’র নামাজের খুৎবায় যেন সেগুলো প্রচার করেন। কেউ যেন আর বিপথে না যায় অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের প্রতি লক্ষ্য রাখার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের সঙ্গে এমন সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে যাতে করে সন্তানরা খোলামনে তাদের মনের কথাগুলো অভিভাবকদের বলতে পারে।
বিদ্যালয়, কলেজ, বিশ্বাবিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতিও তিনি তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের দিকে নজর দেয়ার এবং কেউ যেন জঙ্গিবাদ বা মাদকের সাখে সম্পৃক্ত না হয় সেদিবে খেয়াল রাখার আহবান জানিয়ে বলেন, সকলে এভাবে সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নিলেই সন্ত্রাস দমনে আমরা যে সফলতা অর্জন করেছি তাকে আরো এগিয়ে নিতে সক্ষম হব।
বাংলাদেশে সামরিক আইন জারি ও সন্ত্রাসবাদের নেপথ্য প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসী ও খুনীদের পুরস্কৃত করেছে সামরিক স্বৈরশাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান।
এদিকে বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল, লংগদু, জুরাছড়ি, নানিয়ারচর, কাপ্তাই, কাউখালী, রাজস্থলী উপজেলায় ভিডিও কনফারেন্সিং সম্প্রচার করা হয়। এতে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930