বান্দরবানে সাস্টেইনেবল এগ্রিকালচার এন্ড প্রোডাকশন লিংকড টু ইম্প্রুভড নিউট্রিশন স্ট্যাটাস রেসিলিয়েন্স এন্ড জেন্ডার ইকুইটি প্রজেক্ট (স্যাপলিং) নামের একটি নতুন প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়েছে। ইউএসএআইডি-এর অর্থায়নে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা হেলেন কেলার এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। বান্দরবানের রোয়াংছড়ি,রুমা,থানছি,লামা ও সদর এ ৫টি উপজেলায় পাইলটিং প্রকল্প হিসেবে ৫ বছর মেয়াদের জন্য প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বান্দরবানে খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টিমান উন্নয়ন এবং দুর্যোগমোকাবেলা ও জেন্ডার সমতার বিষয়টিকে এ প্রকল্পে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট অডিটরিয়ামে স্যাপলিং প্রকল্পের উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা হেলেন কেলারের কান্টি ডিরেক্টর ড. মেরেডিথ জেকশন ডি গেফিনরিড এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী সভায় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা,বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোঃ হারুনুর রশিদ,স্যাপলিং প্রকল্পে চীপ অব পার্টি টিনা বিশপ,ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর জানিনা জেরুজেলেস্কি বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি বলেন, উন্নয়ন সংস্থা গুলোকে মানবতাবোধ নিয়ে পাহাড়ে কাজ করতে হবে। প্রকল্পের জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে বান্দরবানের যোগ্যপ্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি বলেন, এনজিওদের কাজে পাহাড়ের মানুষ বিরক্তবোধ করছে। লক্ষ্যহীন প্রকল্পের কারণে প্রকল্প মেয়াদ শেষে এনজিও কর্মীরা বেকার হয়ে পড়ছে। তারা সমাজের বোঝা হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। বীর বাহাদুর এমপি বলেন, বিভিন্ন এনজিও সংস্থা ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রকল্পের নামে শতশত কোটি টাকা অপচয় করেছে। এসকল প্রকল্প পাহাড়ের মানুষের কোন উপকারে আসেনি। তিনি ভবিষ্যতে প্রকল্প গ্রহণে জনকল্যাণের বিষয়টি চিন্তা করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। বীর বাহাদুর এমপি বলেন, পাহাড়ে কাজ করার সময় প্রত্যেককে সহমর্মী মনোভাব নিয়ে কাজ করা উচিত। তিনি এলাকা পরিদর্শনকালে পাহাড়িদের ব্যবহৃত পোষাক পরিচ্ছদ পরিধান করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, শান্তিচুক্তির পর পাহাড়ে বর্তমানে ১২টি উন্নয়ন সহযোগি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। তিনি ইউএসএআইডির প্রকল্পের কার্যক্রম তিন পার্বত্য জেলার ২৬টি উপজেলাতে সম্প্রসারণের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, প্রকল্পের কার্যক্রমে পাহাড়ি এলাকার জনগণের কৃষ্টি,সামাজিক ঐতিহ্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। তাহলে জনগণ প্রকল্পের কর্মীদের সকল কাজে সহযোগিতা করবে।
ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর মিসেস ইয়ানিনা জারুজেলেস্কি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত মানুষের স্বাস্থ্য,শিক্ষাও অন্যান্য সেবা পেতে প্রায়ই নানা প্রতিকুলতার সন্মুখিন হতে হয়। অন্যান্য বিষয় যেমন,পরিবেশগত অবক্ষয় ও পানির স্বল্পতা এ এলাকার উপর বাড়তি চাপের সৃষ্টি করে। ইউএসএআইডি’র স্যাপলিং প্রকল্পটি সরকার,আর্ন্তজাতিক ও স্থানীয় এনজিও কে একত্রিত করে ব্যক্তি, গোষ্ঠি ও প্রতিষ্ঠানের সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারগুলোর অবস্থার উন্নয়নে তাদের জীবিকার মানোন্নয়ন ও তাদের দারিদ্রতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে সাহায্য করবে।
