মিরসরাইয়ে ঘুর্নিঝড়, ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল
আমন ধান ও সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, দিশেহারা কৃষকরা
॥ মিরসরাই প্রতিনিধি ॥ টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আমন ধান ও সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তবে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের সবজি চাষীরা। প্রচন্ড দমকা বাতাস ও পাহাড়ি ঢলে প্রায় সব সবজি নষ্ট হয়েছে। ঘুর্নিঝড় ‘নাডা’র প্রভাবে মিরসরাইয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ো বাতাসে গাছপালা ভেঙ্গে গেছে। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে ও তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎহীন রয়েছে পুরো উপজেলা।
এছাড়া কাঁচা, পাকা, গ্রামীণ সড়কগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় যানবাহনও জনচলাচলে দারুণ অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের কারণে মুহুরী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নদীভাঙনের আশংকায় দিন কাটাচ্ছে নদী তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী পরিবারগুলো।
রবিবার (৬ নভেম্বর) সকালে মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার বিভিন্ন সবজি ক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে, বরবটি, শীম, লাউ, চিচিঙ্গা, করলা, খিরা, টমেটো, ঢেরস, ঝিঙ্গা সহ সব সবজি ক্ষেতে ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া আমান ধানেরও ক্ষতি হয়েছে।
বরবটি চাষ করা কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, মাত্র কয়েকদিন তুলে বরবটি বাজারে বিক্রি করেছি। ভালোই দাম পাচ্ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ ঘুর্নিঝড় পাহাড়ি ঢলে বরবটির সব খুঁিট ভেঙ্গে গিয়ে মাটির সাথে মিশে গেছে।
ঢেড়স চাষ করা কৃষক আব্দুল হান্নান বলেন, বৃষ্টিতে সব ঢেড়স ঝরে গেছে। আমি এখনো তেমন বিক্রি করতে পারিনি। কিভাবে খরচ তুলবো বুঝতে পারছিনা।
জানা গেছে, উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, দুর্গাপুর, মিরসরাই সদর, খৈয়াছড়া, ওয়াহেদপুর ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা ভেঙ্গে গিয়ে মানুষের যাতায়াতে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। টানা ২৮ ঘন্টা বিদ্যুৎহীন রয়েছে পুরো উপজেলা।
চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ৩ এর মিরসরাই জোনাল অফিসের ডিজিএম (ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার) এমাজ উদ্দিন সরদার বলেন, দমকা বাতাসে কারণে উপজেলার কয়েকটি স্থানে খুঁিট ভেঙ্গে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িক বন্ধ থাকলেও এখন অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ রয়েছে। আমাদের কর্মীরা কাজ করছে। খুব শীঘ্রই বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টিতে উপজেলায় ৮ শ হেক্টর আমন ধান ও ৮০ হেক্টর সবজি ক্ষেত আক্রান্ত হয়েছে। তবে আমরা এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারিনি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ধারণ করতে আরেকটু সময় লাগবে।