রাঙ্গামাটিতে ৪র্থ শ্রেণীর প্রাইমারি বৃত্তি পরীক্ষায় কৃতী শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তি প্রদান
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি পারিবারিক নৈতিক শিক্ষা দিয়ে শিশুদের আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার উপর আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু। তিনি বলেন ডিজিটাল প্রযুক্তিতে দেশ এগিয়ে গেলেও এর কিছু অপব্যবহারের ফলে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দিচ্ছে। তাই ডিজিটাল প্রযুক্তির অপব্যবহার বন্ধে পারিবারিক নৈতিক শিক্ষা বাড়াতে হবে। তিনি উন্নত বিশ্বের সাথে দেশকে এগিয়ে নিতে তথ্য প্রযুক্তির সদ্ব্যবহারে মনোযোগী হতে হবে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে সমাজের শৃংখলা রক্ষায় সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
সোমবার (৭নভেম্বর) সকালে রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টীর ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রবর্তিত ৪র্থ শ্রেণীর প্রাইমারি বৃত্তি পরীক্ষায় কৃতী শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
পার্বত্য অঞ্চলের পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করে এখানকার মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব বলে মন্তব্য করে ফিরোজা বেগম চিনু বলেন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি কিংবা জঙ্গীবাদ কখনো শান্তি আনতে পারেনা। শান্তির জন্যও প্রয়োজন পারিবারিক নৈতিক শিক্ষা। তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ মনোভাব বজায় রেখে এলাকার সামাজিক শৃংখলা রক্ষায় সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য হাজী মুছা মাতব্বর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম জাকির হোসেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহবুবন নবী, জেলা শিক্ষা কর্তকর্তা মোঃ জিল্লুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেন, পাহাড়ের প্রত্যেকটি শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার সযোগ সৃষ্টি করতে এবং মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে। প্রত্যন্ত স্কুল গুলোতে শিক্ষক সংকট নিরসন করে অচিরেই শুন্য পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
তিনি পার্বত্য জেলা পরিষদের এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন প্রাথমিক শিক্ষার গুনগত মানউন্নয়নে ছাত্র/ছাত্রী অবিভাবক ও শিক্ষকদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশী। তাই প্রতিটি শিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করতে অবিভাবক ও শিক্ষকদেরও প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাওয়া । তিনি স্কুলে কোন শিশুকে বেত্রাঘাত না করার জন্য শিক্ষকদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, এ বিষয়ে সরকারী সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতয় ঘটছে। এমন আচরণ থেকে নিবৃত থাকতে তিনি শিক্ষকদের প্রতি আহবান জানান। তিনি শিশুদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে জাতির আগামী দিনের কান্ডারী হিসাবে গড়ে তুলতে শিক্ষকদের পাশাপশি অভিভাবকদেরও জোর প্রচেষ্ঠা চালাতে আহ্বান জানান তিনি।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য হাজী মুছা মাতব্বর বলেন, রাঙ্গামাটি অনেক প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে শিক্ষকরা স্কুলে পাঠদান করছেন। শিশুদের লেখাপড়া করাচ্ছেন। কিন্তু এ শিক্ষকরা একেবারে শান্তিতে নেই। এ অঞ্চলের সন্ত্রাসীরা শিক্ষকদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাদাঁ নিচ্ছেন। যা অত্যন্ত দুঃখের ও লজ্জার। স্কুরে শিক্ষক সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ করতে হয়। কিন্ত এ কোটায় প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দিতে না পারায় পদগুলোর বড় একটা অংশ অপূরণ থাকে যে কারণে জনবল সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। তিনি এ সংকট নিরসনে সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন বলে মত ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে ৪র্থ শ্রেণীর বৃত্তি পরিক্ষায় অংশ নেওয়া রাঙ্গামাটি ১০টি উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালরে অনন্য মেধায় ৩০জন, ট্যালেন্টপুলে ৮৬জন ও সাধারণ গ্রেডে ২৪৬জন মোট ৩৬২জন কৃতী শিক্ষার্থীদের মাঝে ৪লক্ষ ৩৫হাজার টাকার বৃত্তি প্রদান করা হয়। এছাড়া প্রত্যেককে সনদ পত্র ও ত্রেস্ট প্রদান করা হয়।