রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের উন্নয়ন কমিটির সমন্বয় সভা
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জনাব বৃষ কেতু চাকমা বলেছেন, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও তৃণমূল পর্যায়ের সকলকে নিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে এ জেলা তথা দেশের উন্নয়নে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল এ দেশকে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ার। তার সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার সুযোগ্য কন্যা বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারের এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, সরকার আমাদের নিয়োগ দিয়েছেন দেশের গণমানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নে। সে লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, সকলের সামগ্রীক উন্নয়নের স্বার্থে পরিষদের প্রতিটি মাসিক ও সমন্বয় সভায় উপস্থিত থেকে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সুপরামর্শ ও মতামত প্রদান করারও আহ্বান জানান তিনি।
রবিবার (২৭ নভেম্বের ২০১৬ইং) সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে জেলা উন্নয়ন কমিটির সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য ডাঃ নিলু কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, রাঙ্গামাটি পুলিশ বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদ উল্লাহ, বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বড়ঋষি চাকমা, কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিলদার হোসেন, নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোয়ালিটি চাকমা’সহ জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আরো বলেন, কাপ্তাই লেকটি আমাদের জন্য একটি বড় সম্পদ। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিস্তির্ণ এলাকা এবং বহু মানুষের সীমাহীন ক্ষতির মাধ্যমে এ লেকের সৃষ্টি হয়েছে। এ লেকের অন্যতম সম্পদ হচ্ছে মৎস্য সম্পদ। কিন্তু এক শ্রেণীর জেলে লেকে জাক দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা ধ্বংস করছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি সভায় মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন ও নৌ পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।
সভায় আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য বলেন, ১৯৯৭সালের চুক্তির পর পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ এবং পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহ গঠিত হয়েছে। এ দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামের তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলো সমন্বয় রেখে কাজ করলে এ জেলার উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে।
সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, জেলার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অন্যান্য জেলার তুলনায় স্বাভাবিক এবং সন্তোষজনক। পুলিশ বিভাগ সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অপরাধমূলক তথ্য সংগ্রহ করে সাধারণ জনগণ থেকে। তাই ভবিষ্যতেও যে কোন ধরনের অনৈতিক, অসামাজিক, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও অপরাধমূলক তথ্য প্রদান করে পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।
বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জানান, নদী ভাঙ্গনের ফলে বাঘাইছড়ি উপজেলার তুলাবান এলাকাটি দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সভায় অবগত করেন।
খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা জানান, সেপ্টেম্বর-নভেম্বর ২০১৬খ্রিঃ পর্যন্ত খাদ্য বান্ধব চাল গরীবদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। এ কার্যক্রমে জেলায় এ পর্যন্ত ১৬হাজার ৪শত ৩০টি পরিবারে ১০টাকা হারে মাসিক ৩০কেজি চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় নিয়োগকৃত ৫২জন ডিলারের মাধ্যমে ১হাজার ৪শত ১৪মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করা হয়েছে।
গত ১৯নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মহিলা কলেজের উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করায় রাঙ্গামাটি মহিলা কলেজের প্রভাষক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর কর্মকর্তা বলেন, নদী ফায়ার স্টেশনের অংশ হিসেবে আগামী মাসে ১টি ইঞ্জিনচালিত বোট পাওয়া যাবে। যার ফলে হ্রদবেষ্টিত এলাকায় অগ্নিকান্ড নিয়ন্ত্রণ অনেকটা সহজ হবে।
এছাড়া সভায় উপস্থিত অন্যান্য বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ স্ব স্ব বিভাগের সমস্যা ও অন্যান্য কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।