রুমায় বনের ভিতরে পাহাড় কেটে চলছে
ইটভাটা নির্মানের প্রস্তুতি’ নির্বিকার প্রশাসন!
॥ বান্দরবান প্রতিনিধি ॥ বান্দরবানের রুমা উপজেলায় বড়শি পাড়া ঘেঁসে বনের ভিতরে পাহাড় কেটে চলছে অবৈধভাবে ইটভাটা গড়ে তোলার প্রস্তুতি। প্রশাসনের নিস্ক্রিয়তার সুযোগে দিবালোকে পরিবেশ ধংস করে আইনের তোয়াক্কা না করে ইটভাটার প্রস্তুতিমুলক কাজের জন্যে প্রকাশ্যেই কেটে সাবাড় করা হচ্ছে পাহাড়।
উক্ত এলাকায় ইটভাটা তৈরির জন্য অবাধে পাহাড় কাটা হলেও প্রশাসন কিংবা পুলিশ এসব অবৈধ কাজের বিরুদ্ধে গ্রহণ করছেনা কোন আইনি ব্যবস্থা। আর এই ইটভাটা তৈরীর জন্য নেই কোন প্রশাসনের অনুমতি কিংবা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। জেলা শহরের ঠিকাদার আনিসুর রহমান সুজন স্থানীয় আ’লীগ নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে এই অবৈধ ইটভাটা গড়ে তুলতে পাহাড় কাটছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, রুমা সদর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বগালেকে যাবার পথে বড়শি পাড়ার নিকটে স্থাপিত হচ্ছে অবৈধ ইটভাটা। তিনটি বুলড্রোজার ও একটি স্কেভেটর (পাহাড় কাটার কাজে ব্যবহৃত ভারী যন্ত্র) দিয়ে পাহাড় কেটে চলছে ইটভাটা তৈরীর প্রস্তুতি। সরকারি কোন মহলেরই কোন প্রকার অনুমতি গ্রহণ ছাড়াই গত ২/৩ মাস ধরে প্রকাশ্যে দিবালোকে পাহাড় কর্তনযজ্ঞ চললেও পুলিশ ও প্রশাসন রয়েছে নির্বিকার।
ইটভাটায় পাহাড় কাটা ও ভাটা প্রস্তুতি কাজের দায়িত্বে থাকা প্রকৃতি বড়–য়া জানান, ইটভাটার মালিক আনিসুর রহমান সুজন। ইটভাটা স্থাপনে বৈধ কাগজ পত্র বা পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে এবিষয়ে কিছুই বলতে রাজি হননি। তবে ইট ভাটায় (পরিবেশের ক্ষতিকারক) ড্রাম দিয়ে অস্থায়ী চিমনী ব্যবহার করা হবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি মওজুদ করা হচ্ছে ইটভাটা তৈরীর পর ইট পোড়ানোর জন্য জ্বালানী কাঠও।
রুমা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি শৈহ্লাচিং মারমা জানান, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারাই বড়শি পাড়া ঘেঁসে অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপন করেছে। ইটভাটার কালো ধোঁয়্য়া বড়শি পাড়ার বাসিন্দারাসহ অনেক শিশুর স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়বে। পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হবে। অস্থায়ী ড্রাম চিমনী ব্যবহার করতে যাচ্ছে ভাটায়। জ্বালানী কাঠ পোড়ানোর জন্যও প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এটি বন্ধের জন্য প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না করলে পূরো বড়শি পাড়ার বাসিন্দাদের পাশাপাশি পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
তিনি আরো জানান, গত উপজেলা মাসিক সভায় অবৈধভাবে স্থাপিত এই ইটভাটা দ্রুত বন্ধের কার্যকরি ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এব্যপারে ইটভাটার মালিক আনিসুর রহমান সুজন ইটভাটায় বুলড্রোজার দিয়ে অবৈধভাবে পাহাড় কাটা ও ভাটায় জ্বালানী কাঠ পোড়ানোর প্রস্তুতির বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
রুমা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শরিফুল হক জানান, ইটভাটায় সরেজমিন পরিদর্শন করে বৈধ কাগজ পত্র কিংবা কর্তৃপক্ষের অনুমতি আছে কিনা এবং পরিবেশের ক্ষতি সাধিত হচ্ছে কিনা দেখে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেবো।
এব্যপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিচালক মাসুদ করিম জানান, সরেজমিনে গিয়ে রুমার এই অবৈধভাবে স্থাপিত ইটভাটার মালিকের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।