শিরোনাম
প্রচ্ছদ / ব্রেকিং নিউজ / লাখো পূর্ণার্থীর সাধু..সাধু..সাধু কন্ঠধ্বনিতে প্রকম্পিত রাজবন বিহার

লাখো পূর্ণার্থীর সাধু..সাধু..সাধু কন্ঠধ্বনিতে প্রকম্পিত রাজবন বিহার

লাখো পূর্ণার্থীর সাধু..সাধু..সাধু কন্ঠধ্বনিতে প্রকম্পিত রাজবন বিহার

মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে লাখো পূর্ণার্থীর শ্রদ্ধা এবং ধর্মীয় ভাবগাম্ভীয্যের মধ্যে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দুইদিন ব্যাপী সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ৪৩তম কঠিন চীবর দান রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে চীবর উৎসর্গের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে রাঙ্গামাটির রাজবন বিহার প্রাঙ্গনে বৌদ্ধ সমাবেশের মধ্য দিয়ে রাঙ্গামাটি সার্কেল চীফ রাজা দেবাশীষ রায় পার্বত্য ধর্মীয় গুরু বনভন্তের শীর্ষ মন্ডলীর কাছে এ চীবর উৎসর্গ করেন। চীর উৎসর্গের সময় ভক্তদের সাধু..সাধু..সাধু কন্ঠধ্বনিতে সমগ্র আশপাশ এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
এসময় সমবেত পুন্যার্থীদের উদ্দেশ্যে ধর্মীয় দেশনা দেন বৌদ্ধধর্মীয় অন্যতম গুরু মহামতি বনভান্তের প্রধান শিষ্য শ্রী প্রজ্ঞালংকর মহাস্থবির। এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, রাঙ্গামাটি সদর জোন ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ নাইমুল হাসান খান, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাজবন বিহারের সিনিয়র সভাপতি গৌতম দেওয়ান।
পরে পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হয় সংঘদান, অষ্ট পরিস্কার দান, বুদ্ধমুর্তি দান, ২৪ ঘন্টার মধ্যে তৈরী পূণ্যার্থীদের কঠিন চীবর দান উৎসর্গ। বিকেলে সমবেত পুন্যার্থীদের উদ্দেশ্যে ধর্মীয় দেশনা দেন বৌদ্ধধর্মীয় অন্যতম গুরু মহামতি বনভান্তের প্রধান শিষ্য শ্রী প্রজ্ঞালংকর মহাস্থবির।
এদিকে, রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে ২ দিনব্যাপী ৪৩ তম কঠিন চীবর দান উৎসবে লাখো পুণ্যার্থী অংশগ্রহণ করে। এই উৎসবকে ঘিরে গত দুইদিন রাঙ্গামাটি শহর ছিল উৎসবের নগরী। ধর্মীয় উৎসব হলেও পুরো আয়োজনটি পরিণত হয় পার্বত্যবাসির মিলন মেলায়।
শুক্রবার দুপুর ১২ টা থেকে রাজবন বিহারের মাঠের বিশাল এলাকাজুড়ে শুরু হওয়া বর্ণাঢ্য বস্ত্র ও কল্পতরু শোভাযাত্রা মুহুর্মুহু আনন্দ ধ্বনি এবং উৎসবের জোয়ার প্রকম্পিত করে। ভোর থেকেই একেএকে জড়ো হতে থাকে পূণ্যার্থীরা।
এই বছর রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের বেইন ঘরে ৮০টি চরকায় ও ১৭৫ টি বেইন বসানো হয়। এই চীবর তৈরীতে দুর্গম অঞ্চলের প্রায় ৩ শতাধিক পাহাড়ি নারী অংশগ্রহণ করেন।
এ উৎসবে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তুলা থেকে চরকায় সুতা কেটে, রং করে আগুনে শুকিয়ে সেই সুতায় তাঁতে কাপড় বুনে চীবর তৈরী করা হয়। অর্থাৎ ১০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় সুতা কাটা থেকে বুননের মাধ্যমে শুরু করা চীবর তৈরি শেষে ১১ নভেম্বর শুক্রবার বিকাল ২টা ৫০ মিনিটে চাকমা রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান শ্রী প্রজ্ঞালংকর মহাস্থবিরকে চীবর উৎসর্গ করার মাধ্যমে দান কার্য সম্পাদন করা হয়।
উল্লেখ্য, রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে ১৯৭৭ সালে এক স্বর্গীয় অনুভূতিতে বনভান্তে বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে সর্বপ্রথম কঠিন চীবর দান প্রচলন করেন। এর আগে রাঙামাটি জেলার তিনটিলা বৌদ্ধ বিহারের ১৯৭৩ সালে এই কঠিন চীবর দান করা হয়। রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে ৪০ বছর ধরে এ নিয়মে কঠিন চীবর দান উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে। এই চীবর দান অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের লাখেরও বেশী ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ নারী পুরুষের সমাগম ঘটে।

পড়ে দেখুন

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের শহীদদের …