খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় জমি নিয়ে সংঘর্ষে
আহত-৫, থানায় মামলা
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় ২০১ নং ধলিয়া মৌজার ২৮৫ নং হোল্ডিংয়ের পাঁচ একর টিলা ভূমি জবরদখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, প্রায় দুই যুগেরও বেশী সময় আগে মো: আবদুল গাফফার প্রকাশ দগাফফার মেম্বার’ জনৈক আবুল কালামের কাছ থেকে উক্ত টিলা ভূমি ক্রয় করে বাগান সৃজন করে ভোগদখলে বিদ্যমান আছেন। সম্প্রতি একটি প্রভাবশালী ভূমিখেকো মহলের ইন্ধনে জনৈক মো: আবদুল্লাহ নিজেকে ঐ জমির ওয়ারিশ সূত্রে মালিক দাবী করে জবর দখল করার চেষ্টা করেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, জনৈক ইদ্রিস সর্দার নামের এক ব্যক্তি সরকারের পূণর্বাসিত একজন প্রজা হিসেবে ১৯৮০-৮১ সালের দিকে পাঁচ একর টিলা ভূমির কবুলিয়ত পান। যা তিনি ১৯৮৬ সালের শেষ দিকে মো: আবুল কালাম নামের একজনের কাছে বিক্রি করেন। জমি ক্রয়ের ২-৩ বছরের মাথায় মো: আবুল কালাম আঞ্চলিক দলিল মুছে গাফফার মেম্বারের নিকট ঐ জমি বিক্রি করেন। দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশী সময় ধরে গাফফার মেম্বার বাগান সৃজন করে জমিটির ভোগদখলে রয়েছেন।
জমিটি বিক্রির ৩০ বছর পরে সম্প্রতি ওয়ারিশ সূত্রে জমির মালিকানা দাবী করে স্থানীয় আবদুল গাফফার প্রকাশ ‘গাফফার মেম্বার’র ভোগদখলীয় জমি অবৈধভাবে জবরদখলের চেষ্টা করছে ইদ্রিস সর্দারের ছেলে মো: আবদুল্লাহ। গত এক বছর ধরে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে ইদ্রিস সর্দারের ছেলে মো: আবদুল্লাহ জমিটি জবরদখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন গাফফার মেম্বারের ছেলে মো: ফজলে রাব্বি রাজু।
সম্পাদক ও প্রকাশক ঃ এ,কে,এম মকছুদ আহমেদ, সম্পাদক কর্তৃক মজলিশ-এ-নাজমা প্রিন্টার্স এন্ড পাবলিশার্স, চট্টগ্রাম থেকে মুদ্রিত এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সড়ক, রাঙ্গামাটি থেকে প্রকাশিত। চট্টগ্রাম অফিস ৪০ মোমিন রোড (২য় তলা) চেরাগী পাহাড়, চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম-ফোন-০১৮১২৮৬৫৩১৫
প্রধান কার্যালয়ঃ রাঙ্গামাটি প্রকাশনী, রাঙ্গামাটি সিনিয়র মাদ্রাসার সন্মুখে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সড়ক রাঙ্গামাটি। মোবাইলঃ-০১৫৫০৬০৯৩৪২, ০১৮২০৩৩২১২০
ঊ-সধরষ-ফমরৎরফধৎঢ়ধহ@মসধরষ.পড়স/ধশসধয়ংঁফ@মসধরষ.পড়সহধহফধহ.পযঃ@মসধরষ.পড়স এ নিয়ে জমিটি জবর দখলের চেষ্টাকালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত আবদুল গাফফার মেম্বার ও তার ভাতিজা মো: মিলন হোসাইন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শঙ্কটাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন বলে জানিয়েছে। আবদুল গাফফার মেম্বারের বড় ছেলে ফজলে রাব্বি রাজু।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, পূর্বপরিকল্পিত ভাবে ঐ জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে গাছ-গাছালি কেটে ঘর তৈরী করার খবর পেয়ে মো: আবদুল গাফফার প্রকাশ গাফফার মেম্বার ঘটনাস্থলে গেলে মো: আবদুল্লাহ ও তার ছেলে মো: শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে ১৫-১৬ জন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার উপর হামলা চালায়। চাচার উপর হামলার খবর পেয়ে তার দুই ভাতিজা মো: মিলন হোসাইন ও মো: শাহেদ হোসেন ঘটনাস্থলে আসা মাত্র তাদের উপরও হামলা করে সংঘবদ্ধ চক্রটি। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন তাদেরকেও এলোপাথারি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে।এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচ জন আহত হয়েছে। আহতরা হলো, আবদুল গাফফার (৬২), মো: মিলন হোসেন (৩০), মো: শাহেদ হোসেন (৩৮), এবং অপরপক্ষের সাপিয়া বেগম ও সুমি আকতার। অহতদের মধ্যে প্রথম তিনজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অন্য দুইজন মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবদুল গাফফার (৬২) ও মো: মিলন হোসাইন (৩০) এর অবস্থা শঙ্কটাপন্ন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে ঘটনার পরপরই হামলার শিকার মো: আবদুল গাফফার বাদী হয়ে মো: আবদুল্লাহ ও তার ছেলে মো: শাহাদাত হোসেন সহ ১০ জনের নামোল্লেখ করে মাটিরাঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে একই দিন মো: আবদুল্লাহর স্ত্রী রহিমা বেগমও প্রতিপক্ষের ৮-১০জনের বিরুদ্ধে একটি কাউন্টার মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় কাউন্সিলর মো: আলাউদ্দিন লিটন জানান, এলাকাবাসীর নিকটে বিষয়টি জানতে পেরে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা আমার উপরও হামলার চেষ্টা করে। এ সময় উপস্থিত জনতার সহায়তায় তিনিও প্রাণে রক্ষা পান। মৃত ইদ্রিস সর্দারের ওয়ারিশ দাবী করা মো: আবদুল্লাহ কখনোই এখানে আসেনি বা কেউ দেখিনি বলেও দাবী করেন তিনি।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল গাফফারের ছেলে মো: ফজলে রাব্বি রাজু অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের উস্কানিতে প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে আমাদের সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে এ হামলা চালিয়েছে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দাবী করেছেন। এদিকে মো: আবদুল্রাহ ও তার ছেলে মো: শাহাদাত হোসেনে জেলহাজতে থাকায় তাদের কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: সাহাদাত হোসেন টিটো বলেন, এ ঘটনায় দুই পক্ষই দুটি মামলা দায়ের করেছে। দুটি মামলাই তদন্তনাধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।