‘টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ি ১৭টি লক্ষ্য অর্জন করি’ এই প্রতিপাদ্য
নিয়ে চট্টগ্রামে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস পালিত
‘টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ি ১৭টি লক্ষ্য অর্জন করি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে চট্টগ্রামে ২৫তম আন্তর্জাজিত প্রতিবন্ধী দিবস এবং ১৮তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস পালন করা হয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, সমাজসেবা অধিদফতরের আয়োজনে এবং প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রসহ জেলায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণে নিয়োজিত বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সমূহের সহযোগিতায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা, আলোচনা সভা, সমাজসেবা অধিদফতরের আওতায় অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে প্রতিবন্ধী ভাতার বহি প্রদান, সুদমুক্ত ক্ষুদ্র ঋণ, সাদাছড়ি ও হুইল চেয়ার বিতরণ। এই উপলক্ষে ৩ ডিসেম্বর’১৬ শনিবার সকাল ১০ টায় চট্টগ্রাম মুসলিম ইনষ্টিটিউটে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো: সামশুল আরেফিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন। বিশেষ অতিথি জাতীয় সংসদ সদস্য মহিলা আসন-৩১ বেগম ওয়াশিকা আয়েশা খান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজসেবা অধিদফতর চট্টগ্রামের উপপরিচালক বন্দনা দাশ। অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধীদের সফলতা ও অনুভূতি নিয়ে বক্তব্য রাখেন স্বাবলম্বী প্রতিবন্ধী মোশারফ হোসেন নীরব, চবি’র ডিসএবেলেটির সাধারণ সম্পাদক মো: শাহজাহান, প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ১৭টি লক্ষ্য নিয়ে পাওয়ার প্রেজেনটেশন উপস্থাপন করেন আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মো: হাসান মাসুদ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডাঃ আজিজুর রহমান, বিশেষজ্ঞ শিশু চিকিৎসক বাসনা মুহুরী, মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতিষ্ঠান রউফাবাদ চট্টগ্রামের উপ পরিচালক শহীদুল ইসলাম, জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের সদস্য এস.এম. মোরশেদ হোসেন, চসিক সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর আবিদা আজাদ ও অধ্যক্ষ (অব:) প্রফেসর রীতা দত্ত প্রমুখ। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সমাজসেবা অধিদফতরের কর্মরত কর্মকর্তা, কর্মচারী প্রতিবন্ধীতা ইস্যুতে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সমূহে প্রতিনিধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অভিভাবকসহ প্রতিবন্ধী ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সভায় জানানো হয় বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করেছে সকল প্রতিবন্ধীদের সনাক্তকরণ জরিপের আওতায় এনে তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার সহযোগিতা করার লক্ষ্যে সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় প্রায় ৫৮ হাজার প্রতিবন্ধী সনাক্তকরণ করা হয়েছে যা চলমান প্রক্রিয়া। চট্টগ্রামে ২৫,৬৬৫ জনকে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতাভুক্ত করা হয়েছে এছাড়া প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষাবৃত্তি প্রচলন করা হয়েছে। প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে সুরক্ষা কমিটি গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১০২ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত অবস্থায় আছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, বর্তমান প্রতিবন্ধী বান্ধব সরকার জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তাদেরকে স্বাবলম্বী করার জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। প্রতিবন্ধীরা সুযোগ পেলে সব কাজ করতে পারে, যা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। বর্তমানে প্রতিবন্ধীতা আশংকা হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যে কোনো সময় যে কোনো ব্যক্তি প্রতিবন্ধীতা হতে পারে। মেয়র মহোদয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে সকল প্রকার প্রতিবন্ধীদের সাহায্য-সহযোগিতা প্রদানের আশ্বস্থ প্রদান করেন এবং যে সমস্ত সংগঠন প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করে তাদের সমন্বয়ে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে বিভিন্ন প্রকার কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রধান অতিথি, অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে ভাতা বহি, সুদমুক্ত ক্ষুদ্র ঋণ, সাদাছড়ি ও হুইল চেয়ার বিতরণ করেন। এছাড়া প্রতিবন্ধী শিশুদের অংশগ্রহণের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। দিবসটি পালন উপলক্ষে সকাল ৯ টায় ডিসি হিল হতে চট্টগ্রাম মুসলিম ইনষ্টিটিউট পর্যন্ত এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার অনুষ্ঠিত হয়। শোভাযাত্রার শুভ উদ্বোধন সহ নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো: সামশুল আরেফিন। অনুষ্ঠান শেষে প্রতিবন্ধী শিশুদের সমন্বয়ে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।