ডলার আর টাকাও নিচ্ছে কলকাতার হাসপাতাল

ডলার আর টাকাও নিচ্ছে কলকাতার হাসপাতাল

ব‌্যবসা ধরে রাখতে হাসপাতালগুলো এই পদক্ষেপ নিলেও তা স্বস্তির শ্বাস ফেলার সুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশি রোগী ও তাদের স্বজনদের।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত ৮ নভেম্বর আকস্মিক সিদ্ধান্তে ৫০০ ও ১০০০ রুপি মূল‌্যমানের পুরনো নোট বাতিল করলে বিদেশিদের পাশাপাশি ভারতীয়রাও চরম ভোগান্তিতে পড়েন, যার জের এখনও চলছে।

বিদেশি পর্যটকরা এখনও সপ্তাহে পাঁচ হাজার রুপির বেশি ব‌্যাংক থেকে না পারায় রোগীদেরই ভুগতে হচ্ছে বেশি, কারণ জটিল রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ওই অর্থ নিতান্তই অপ্রতুল।

যশোর থেকে কলকাতার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইন্টারন‌্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্সেসে চিকিৎসা নিতে যাওয়া আবদুল জব্বার  বলেন, “একটা এমআরআই করতেই পাঁচ হাজার রুপির বেশি লাগে।”

প্রতিমাসে ১৫ থেকে ১৬শ’ বাংলাদেশি ভারতের এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। তাদের কথা বিবেচনা করেই সেখানে বাংলাদেশি টাকা ও মার্কিন ডলার নেওয়ার জন‌্য আলাদা কাউন্টার খোলা খোলা হয়েছে বলে হাসপাতাল পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষের পশ্চিমাঞ্চলীয় পরিচালক আর ভেঙ্কটেশ  জানান।

তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশিদের ১২ থেকে ১৩ শতাংশ পেইমেন্ট ডলার বা টাকায় হচ্ছে। এই পরিমাণ আরও বেড়ে জানুয়ারিতে ২০ শতাংশ হবে বলে তারা ধারণা করছেন।

“বাংলাদেশি ক্লায়েন্টদের সঙ্গে আমাদের যৌক্তিক আচরণ করতে হবে। তাদের অনেকেই ক্রেডিট কার্ড বা ই ওয়ালেটে অভ‌্যস্ত নন। সে কারণেই আমরা টাকা ও ডলার নিচ্ছি।”

এ পদক্ষেপের ফলে কলকাতার হাসপাতালগুলোর বিদেশি মুদ্রা আয়ের পরিমাণও সাম্প্রতিক সময়ে উল্লেখযোগ‌্য মাত্রায় বেড়েছে।

অ্যাপোলো গ্লেনেগলস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এক মাসেরও কম সময়ের মধ‌্যে তারা ৭৫ হাজার ডলার পেয়েছে রোগীদের বিভিন্ন সেবার বিনিময়ে।

এ হাসপাতালের সিইও রূপালী বসু বলেন, “বাংলাদেশিদের অনেকেই এখন ডলারে বিল মেটাচ্ছেন। এর একটা কারণ হতে পারে যে আমরা এখন টাকাও নিচ্ছি, সে বিষয়টি তারা জানেন না।”

বাংলাদেশ থেকে যারা আসছেন, তারা বিষয়টি জানতে পারলে আগামীতে হাসপাতালের বিল মেটাতে টাকা ব‌্যবহার আরও বাড়বে বলে রূপালীর ধারণা।  ইতোমধ‌্যে ডলারে বিল নিতে শুরু করা এএমআরআই প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে আসা রোগীদের কাছ থেকে শিগগিরই টাকা নেওয়ারও পরিকল্পনা করেছে।

“এতে তাদের সুবিধা হবে। এখন রুপি ভাঙানো অনেক কঠিন। এ নিয়ে আর তাদের  দুশ্চিন্তায় থাকতে হবে না।”

কলকাতার অধিকাংশ বড় হাসপাতালে মানি এক্সচেইঞ্জও রয়েছে, যাদের কাছ থেকে টাকা বা রুপি ভাঙিয়ে নেওয়া যায়। রোগীর স্বজনরা সেখান থেকে ডলার বা টাকা ভাঙিয়ে রুপি নিয়ে হোটেল বা অন‌্যান‌্য খরচ মেটাতে পারবেন।

ট্র‌্যাভেল এজেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার চেয়ারপারসন অনীল পাঞ্জাবি বলেন, “হোটেলগুলো এমনিতে ডলার নেয়। এখন হাসপাতালগুলোতে যে বিদেশি মুদ্রা আয়ের সুযোগ হয়েছে তা নোট বাতিলের অপ্রত‌্যাশিত ফল।”

অনীল বলেন, প্রতিবছর যে পরিমাণ পর্যটক ভারত ভ্রমণ করেন, তাদের একটি বড় অংশ বাংলাদেশি মেডিকেল ট‌্যুরিস্ট।

“তাদের যাতে অসুবিধা না হয় সে বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করতেই হবে।”

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31