বান্দরবানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে রাজপূণ্যাহ মেলা শুরু
বান্দরবানে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় শুরু হয়েছে বোমাং সার্কেল এর সামাজিক এবং ঐতিহ্যবাহি জুমিয়া খাজনা আদায়ের অন্যতম উৎসব রাজ পূন্যাহ।
গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজ পূণ্যাহ উপলক্ষ্যে একটি শোভাযাত্রা বোমাং রাজা উ: উ চ প্রু চৌধুরীর বাসভবন থেকে শুরু হয়ে বোমাং চীফের পুরাতন রাজ বাড়ি প্রাঙ্গণে (রাজার মাঠ)মূল অনুষ্ঠান স্থলে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় অংশ নেন রাজকর্মচারী, পাইক পেয়াদা, দুরদুরান্ত থেকে আসা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রজাসাধারণ ছাড়াও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা।
১৩৯তম এই রাজপূন্যাহ অনুষ্ঠানে বোমাং রাজা উ: উচ প্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, চট্রগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. সাখাওয়াত হোসেন, ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ যুবায়ের সালেহীন এনডিইউ পিএসসি, বান্দরবান পার্র্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা,রাঙ্গামাটির জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা,খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক,পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার বায়, পার্বত্য চট্রগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য ¯েœহ কুমার চাকমা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদ, অতিরিক্ত সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শম্পা রানী সাহা, অতিরিক্ত সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ইয়াছির আরাফাত , অতিরিক্ত সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার অর্নিবাণ চাকমা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী এবং দেশ-বিদেশ থেকে আগত অতিথিরা। স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে আওয়ামলীগ সরকার পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, পার্বত্য চুক্তির ফলে পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গম এলাকার মানুষ যে সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে তা কখনোই তারা কল্পনা করতে পারে নি। তিনি সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডে সহযোগিতার হাতবাড়িয়ে দিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর সকল জনগনকে আহবান জানান। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে বর্তমান সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে অতীতে কোন সরকার এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড দেখে একটি মহল পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি বিনষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছে। তাদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে পার্বত্য জাগনের প্রতি আহবান জানান বীর বাহাদুর। এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে জেলার ১০৯ টি মৌজার হেডম্যান এবং কারবারীরা বোমাং রাজা উ: উচ প্রু চৌধুরীকে বছরের খাজনা প্রদান করেন । এদিকে উৎসবকে ঘিরে রাজার মাঠে বসেছে লোকজ মেলা। তিনদিন ব্যাপী এবারের মেলায় আকর্ষন হিসেবে রয়েছে সার্কাস, পুতুল নাচ, যাত্রাপালা, নাগরদোলা, হাউজি, স্থানীয় বিভিন্ন পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয়ের ষ্টল । উৎসবকে ঘিরে সাজসাজ রব পড়েছে পর্যটন শহর বান্দরবানে। মেলা চলবে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।