বান্দরবানে রাজপূণ্যাহ মেলাকে ঘিরে জমজমাট সর্বত্র
বছর শেষ দিন উদযাপন আর ঐতিহ্যবাহী রাজমেলাকে ঘিরে পর্যটেকরা এখন বান্দরবানমুখী। দেশি-বিদেশি পর্যটকের পদভারে মুখর হয়ে উঠছে বান্দরবান। ইতিমধ্যে অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউসের কক্ষ। বছরের শেষ দিনকে বিদায় নতুন বছরকে বরন আর ঐতিহ্যবাহী বোমাং রাজার রাজস্ব আদায় অনুষ্টান রাজমেলা দেখতে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশ থেকে প্রতিবছরই এই মৌসুমে লোকজন ছুটে আসেন বান্দরবানে। গত বছর প্রায় লক্ষাধিক পর্যটকের আগমন ঘটেছে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে। আর এবার ২১ শে ডিসেম্বর থেকে বোমাং রাজপুণ্যাহ শুরু হওয়া ও বছরের শেষ দিনকে কেন্দ্র করে প্রায় দেড় লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করছেন হোটেল মালিকরা।
বিপুলসংখ্যক মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বান্দরবান হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ-সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, খাজনা আদায়ের উৎসব আর বছরের শেষ দিনকে কেন্দ্র করে শহরের ৫৫টি হোটেল মোটেলের এক তৃতীয়াংশ বুকিং হয়ে গেছে। এসব হোটেলে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার মানুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
এদিকে হোটেল ব্যবস্থাপকরা জানান, হোটেল হিলভিউ, হোটেল হিলটন, হোটেল প্লাজা, হিল কুইন, ভেনাস রিসোর্ট, হোটেল মোটেল এরই মধ্যে বুকিং হয়ে গেছে । আর নতুন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে ছোট-বড় সব হোটেল-মোটেল। বান্দরবানের হোটেল প্লাজার ব্যবস্থাপক রাহাত এলাহি জানান, প্রতিদিন হোটেল কক্ষের জন্য অনেকে আমাদের ফোন দিচ্ছে কিন্তু আমরা কক্ষ ভাড়া দিতে পারছি না। রাজমেলা আর বছরের শেষ দিনকে ঘিরে অনেক আগেই হোটেল বুকিং হয়ে গেছে। বান্দরবানের হোটেল গ্রীনহিলের ব্যবস্থাপক আশীষ ধর জানান, এই মৌসুমে পর্যটকের চাপ থাকে বেশি। অনেক আগে থেকেই আমাদের সকল কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটন কেন্দ্র নীলাচল, নীলগিরি, মেঘলা, শৈলপ্রপাতে প্রতিদিনই আসছেন হাজারো পর্যটক। পাহাড়ের সৌন্দর্য্য আর বোমাং রাজ মেলা দেখতে এরই মধ্যে অনেকে ঘুরতে এসেছেন বান্দরবানে।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মো: নুরুল আলম জানান, বান্দরবানের বোমাং রাজ মেলা সম্পর্কে আমার বন্ধুদের থেকে শুনেছি। রাজাদের ইতিহাস আর ঐতিহ্য দেখার জন্য আগে থেকে চলে এসেছি বান্দরবানে। খুলনা থেকে স্ব-পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা আরেক পর্যটক আবছার বলেন, পাহাড় ঘেরা বান্দরবান দেখতে অনেক সুন্দর। পাহাড়ি ঝর্ণা আর সাঙ্গু নদী সৌন্দর্য্য আমাকে বিমোহিত করেছে অনেক বেশি। এদিকে বান্দরবানের ফিস্ট রেস্টুরেন্ট এর স্বত্বাধিকারি শাহাদাৎউর রহমান জানান, পর্যটকদের পাহাড়ি খাবারের চাহিদা থাকে একটু বেশি। তাই পর্যটকদের জন্য ভিন্ন ধাঁচের খাবারের আয়োজন করছি এবারও। অনেকে এরই মধ্যে খাবারের অগ্রিম বুকিং দিয়ে রেখেছে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বান্দরবানের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো:রফিক উল্লাহ জানান, পর্যটকদের আগমনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে সকল ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, আর পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। তিনি আরো জানান, বান্দরবানের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সকল ধরনের নিরাপত্তামুলক ব্যবস্থা ইতিমধ্যে গ্রহন করা হয়েছে, আশা করা হচ্ছে পার্বত্য এলাকায় পর্যটকদের ভ্রমন নিরাপদ ও আনন্দদায়ক হবে।