বাহিনী প্রধানদের মেয়াদ সর্বোচ্চ ৪ বছর হচ্ছে

বাহিনী প্রধানদের মেয়াদ সর্বোচ্চ বছর হচ্ছে

এ আইন কার্যকর হলে একটি বাহিনীর প্রধান তার অবসরের বয়স ৫৯ বছর পার হওয়ার পরও নির্ধারিত চার বছর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, যদি সরকার তাকে অবসরে না পাঠায়।

এই সুযোগ রেখে সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রধান (নিয়োগ, অবসর এবং বেতন ও ভাতাদি) আইন, ২০১৬’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে ওই বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, সংবিধানের ৬১ থেকে ৬৩ অনুচ্ছেদে বলা আছে, আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সংসদ প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলোর প্রধানদের নিয়োগ ও বেতন-ভাতা নির্ধারণ করবে।

“যেহেতু সংবিধানে বলা আছে, কিন্তু ৪৪ বছরে কোনো আইন হয়নি, এজন্য আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

এতোদিন জয়েন্ট সার্ভিসেস ইন্সট্রাকশনস (জেএসআই) নামে একটি ‘নির্দেশাবলীর’ মাধ‌্যমে এ বিষয়টি ঠিক করা হত। সেখানে বাহিনী প্রধান পদে চাকরির সময় নির্ধারণ করা ছিল না।

শফিউল আলম বলেন, রাষ্ট্রপতি তিন বাহিনীর প্রধানদের নিয়োগ দেবেন। জনস্বার্থে অবসর না দেওয়া হলে বা বাহিনী প্রধান স্বেচ্ছায় অবসরে না গেলে একসঙ্গে বা বর্ধিতকরণসহ সর্বোচ্চ চার বছর ওই পদে থাকা যাবে।

“চাকরির বয়স থাকুক আর নাই থাকুক, যোগ দেওয়ার পর মেয়াদ চার বছর থাকবে। চাকরি থাকলে মাইনাস ধরে নেন, সব মিলিয়ে চার বছর,” বলেন তিনি।

এর ব‌্যাখ‌্যায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চাকরি এক বছর থাকা অবস্থায় কেউ কোনো বাহিনীর প্রধান পদে নিয়োগ পেলে তিনি ‘সরকারের ইচ্ছায়’ আরও তিন বছর সময় পেতে পারেন।

“জনস্বার্থে অবসরের আদেশ প্রদান না করিলে বা বাহিনী প্রধান স্বেচ্ছায় মেয়াদউত্তীর্ণ হওয়ার আগেই অবসর না নিলে বাহিনী প্রধানের নিয়োগের মেয়াদ একসঙ্গে বা বার্ধিতকরণসহ নিয়োগের তারিখ থেকে অনূর্ধ্ব চার বছর হবে।

“যেমন ধরুন, জেনারেল হিসেবে অবসরে যাওয়ার করার কথা ফিফটি নাইনে (বছরে), ওই সময় উনি আর্মি চিফ হলেন। তখন থেকেই উনার (চাকরির মেয়াদ) চার বছর যুক্ত হবে।”

অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছর এক্ষেত্রে কার্যকর হবে না জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “যেদিন নিয়োগ পাবেন সেদিন থেকে সর্বোচ্চ চার বছর ওই পদে চাকরি করতে পারবেন। চাকরি কত বছর আছে না আছে এটি ইমপরটেন্ট না। চাকরি থাকতে থাকতে যোগ দিলে তারপরে উনার চার বছর শুরু হয়ে যাবে।”

নতুন আইনে তিন বাহিনীর প্রধানদের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সমান, অর্থাৎ ৮৬ হাজার টাকা মূল বেতন রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে জানিয়ে শফিউল বলেন, অন্যান্য ভাতাও তারা পাবেন।

“এককালীন আউটফিট ভাত পাবেন। বিধি মোতাবেক ভ্রমণ ভাতা পাবেন। দুটো উৎসব ভাতা পাবেন। নববর্ষ ভাতা, শ্রান্তিবিনোদন ভাতা পাবেন।”

এর বাইরেও তিন বাহিনীর প্রধানরা বিশেষ আবাসিক সুবিধা, আবাসিক সংশ্লিষ্ট সুবিধা, সার্বক্ষণিক গাড়ি, সামরিক হাসপাতালে বিনা খরচে নিজে ও পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা, রেশন, ভবিষ্যৎ তহবিল ও সহায়ক জনবল সুবিধা পাবেন।

বাহিনী প্রধান পদ থেকে অবসর নেওয়ার দিন থেকেই তিনি অবসরপ্রাপ্ত বলে গণ্য হবেন। বেসামরিক কর্মকর্তাদের মত এক বছরের অবসরোত্তর ছুটিও (পিআরএল) পাবেন।

“কোনো বাহিনী প্রধান অবসর নেওয়ার পর কোনো সামরিক বা অসামরিক পদে পুনঃনিয়োগ লাভে যোগ্য হবেন না। তবে চুক্তিভিত্তিতে কোনো অসামরিক পদে নিয়োগ পেতে পারেন।”

অবসরপ্রাপ্ত তিন বাহিনী প্রধানরা প্রজাতন্ত্রের কেনো কাজে সামরিক বা বেসামরিক নিয়োগের অযোগ্য বিবেচিত হলেও সাংবিধনিক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বাধা থাকবে না বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31