মাইনীমুখ বাজারে ছায়াদানকারী দুটি গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা

মাইনীমুখ বাজারে ছায়াদানকারী
দুটি গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা

রাঙ্গামাটির লংগদুউপজেলার বৃহত্তর মাইনীমুখ বাজারে মাঝখানে চল্লিশোর্ধ বয়সি ছায়াদানকারী একটি বট গাছ ও একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বত্তরা। তারা বিদ্যুৎ বিভাগের দোহাই দিয়ে সোমবার দিনভর উৎসব করে গাছগুলো কেটেছে। এলাকার সচেতন মহল গাছ কাটার বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজ খবর জানতে চাইলে তখনই আসল খবর বেরিয়ে পড়ে।
গাছ কাটারত ব্যাক্তিরা এবার গাছ কাটা বন্ধ করে সরে পড়ে। এদিকে লংগদু উপজেলা প্রশাসন, লংগদু থানা পুলিশ, ও লংগদু জোনের সেনাবাহিনী খবর পেয়ে গাছ কাটার বিষয়টি তদন্ত করেছে। মঙ্গলবার বন বিভাগ লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানায় এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
মাইনীমুখ মাইনীমুখ বাজারের কয়েজন ব্যবসায়ী জানান, আমরা অনেক কষ্ট করে গাছ দুটিকে টিকিয়ে রেখেছিলাম। এই গাছ দুটি গরমের সময় প্রচুর ছায়া দিত। দুর থেকে বাজারে আসা লোকজন প্রচন্ড গরমে হাফিয়ে উঠলে এই গাছ দুটির তলে শীতল বাতাস খেত। আমরা আশ্চার্য্য হলাম দুই তিনজন ব্যাক্তির স্বার্থের জন্য হাজার মানুষের স্বার্থ রক্ষাকারী ছায়াদানকারী বট গাছ ও কৃষ্ণচূড়া গাছ দুটি কেটে ফেলা হল।
সূত্র জানায়, মাইনীমুখ বাজারের মধ্যখানে বিদ্যুৎ ট্রান্স ফার্মারের নিচে কালু মিয়া ও তার ভাই বাচির এবং জনাব আলীর ফলের দোকান রয়েছে। বিদ্যুৎ ট্রান্স ফার্মারের নিচ থেকে তাদের দোকান ও স্থাপনা সরানোর জন্য বাজার ফান্ড প্রশাসন ও বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে অনেকবার নোটিশ ও দেন দরবার করা হয়েছিল। কিন্তু তারা সেদিকে কর্ণপাত না করে নির্বিঘেœ ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাজার ফান্ড কর্তৃপক্ষ তাদেরকে বিকল্প জায়গা দেয়ার কথা বললেও সেখানে না গিয়ে তাদের ইচ্ছেমত জায়গা দখলের নীলনক্সা করেছে।
সূত্র আরো জানায়, কালু মিয়া ও জনাব আলী বিভিন্ন জনের সুপারিশ নিয়ে দীঘিনালা বিদ্যুৎ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলীর কাছে গাছ দুটি কাটার জন্য আবেদন করেন। যে আবেদনটি তারা করেছে সে আবেদনটিতে দেখা গেছে গুজা মিল রয়েছে। দরখাস্তে একজনই তিনজনের স্বাক্ষর দিয়েছেন। আবাসিক প্রকৌশলী ওই আবেদনে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মী দিপালো চাকমাকে গাছ কাটার অনুরোধ করে স্বাক্ষর করেন।  এব্যাপারে ওই প্রকৌশলীকে ফোন করে জানতে চাইলে তিনি  জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের গাছ কাটার অনুমতি দেয়ার কোন নিয়ম নাই। তবে জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় অনুমতি সাপেক্ষে কেউ গাছ কাটলে সেক্ষেত্রে আমাদের কোন আপত্তি নাই।
বাজার চৌধুরী দেব কুমার চাকমা বলেন, আমি শুনেছি গাছ দুটি কাটা হয়েছে। তবে যতটুকু জানি এব্যাপারে বাজার ফান্ডের কোন অনুমতি নেই।
মাইনীমুখ বাজার ব্যাবসায়ী কল্যাণ সমিতির আহবায়ক শাহাদাৎ হোসেন শিপুকে গাছ দুটি কেন কাটা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের অনুরোধে গাছ দুটি কাটা হয়েছে। আমরাও চাইছিলাম গাছ দুটি কাটা হোক। তবে সমিতির অন্যান্য সদস্যরা গাছ কাটার ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করে তারা জানায় সমিতি এই সম্পর্কে কোন সিন্ধান্ত নেয়া হয়নি।
লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, গাছ কাটার জন্য বাজার ফান্ড ও বন বিভাগের অনুমতি নিতে হবে। এবং এই বিষয়ে জেলা পর্যায়ে একটি কমিটিও আছে। তাদের কাছ থেকেও সুপারিশ নিতে হবে। তা না হলে গাছ কাটতে পারবেনা।
লংগদু থানা অফিসার ইনচার্জ জানান, আমাদেরকে না জানিয়ে গাছগুলো কাটা হচ্ছে। পরে উপজেলা প্রশাসন আমাদের জানালে তখন আমার রাতে গিয়ে গাছ কাটা বন্ধ রাখার জন্য বলি।
বন বিভাগের মাইনীমুখ চেক স্টোশনের  কর্মকর্তা নারায়ন ধর জানান, গাছ কাটতে হলে বন বিভাগের অবশ্যই অনুমতি নিতে হয়। মাইনীমুখ বাজারে গাছ দুটি কাটার কোন অনুমতি নেই। আমরা জানার পর কাটা গাছগুলো জব্দ করেছি। এখনো সব স্টেশনে এনে শেষ করতে পারিনাই। গাছ নিধনকারীর বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাছগুলো হিসাব মেলানোর পর উর্ধŸতন কর্তৃপক্ষের নিকট জানানো হবে। তারা যে সিদ্ধান্ত দিবেন সে মতে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
রাঙামাটি বাজার ফান্ড বিভাগের কর্মকর্তা সাদেক হোসেন জানান, বাজার আমাদের। আমরা বাজারের গাছ কাটার কোন অনুমতি দেইনি।
বাজারের ব্যাবসায়ীবৃন্দরা বলেন, জেলা পরিষদের মার্কেট নির্মাণ করার সময়ও গাছগুলো কাটার চেষ্টা করা হয়েছিলো। তখন ব্যাবসায়ীদের তোপের মুখে কাটতে পারেনি। কিসের ভিত্তিতে দূবৃত্তরা গাছগুলো কাটলো এব্যাপারে প্রশাসনে হস্তক্ষেপ দাবী করেছের মাইনীমুখ বাজারের ব্যাবসায়ী মহল।

মুক্ত গণমাধ্যম চাই : সকল গণমাধ্যমে এক নীতিমালা, তথাকথিত ওয়েজ বোর্ড বাতিল, নিজস্ব বেতন বোর্ড, বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র নীতিমালা নিয়ন্ত্রণ মুক্ত, প্রয়োজনীয় কাঁচামালের মূল্য কমানো ও মফস্বলের পত্রিকাগুলো সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে টিকিয়ে রাখতে হবে

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31