হাজারো পর্যটকদের পদভারে মুখরিত রাঙ্গামাটি
বড়দিনসহ তিন দিনের টানা ছুটি ও থার্টি ফাষ্ট নাইটকে কেন্দ্র করে পর্যটন শহর রাঙ্গামাটিতে পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে। রাঙ্গামাটির পর্যটন স্পটগুলো এখন লোকে লোকারণ্য। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দলে দলে পর্যটক আসছেন। যান্ত্রিকতার একঘেঁয়েমি থেকে প্রকৃতির কাছাকাছি কোলাহলমুক্ত পরিবেশে সময় কাটাতে লোকজন প্রতিনিয়ত ছুটে আসছেন এখানে।
হাজার হাজার পর্যটক কাপ্তাই লেক, পাহাড়, ঝর্ণা আর নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আসছেন সৌন্দর্যের লীলাভূমি পাহাড় বেষ্টিত রাঙ্গামাটিতে। আর এতে হোটের মোটেলসহ শহরের পর্যটন ব্যবসা এখন জমজমাট।
আগত পর্যটকরা রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতুসহ বিভিন্ন স্পটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পর্যটনের ঝুলন্ত সেতু ছাড়াও রাঙ্গামাটিতে পর্যটনের আকর্যনীয় স্পটের মধ্যে শুভলং ঝর্ণা, পেদা টিং টিং, রাজ বন বিহার, চাকমা রাজবাড়ি, জেলা প্রশাসনের বাংলোসহ ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠিদের যাদুঘর।
ঢাকা ও টাঙ্গাইলসহ অন্যান্য স্থান থেকে আসা পর্যটকেরা জানান, ইটপাথরের শহর ও যান্ত্রিকতার ক্লান্তি দূর করতে রাঙ্গামাটির অপরুপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ছুটে এসেছি। এখানে যানজট ও কোলাহল মুক্ত পরিবেশ। যেদিকে তাকাই হ্রদ ও পাহাড়। কি সুন্দর প্রকৃতির চিত্র, পাখির আওয়াজ, যা আসলে মন ভুলিয়ে দেয়।’ এখানে অনেক সুন্দর সুন্দর স্থান রয়েছে, যা দেখলে আসলে মন জুড়িয়ে যায়। স্বল্প সময়ের জন্য স্বপ্নের রাজ্যে হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে।’ বিশেষ করে ‘সকালে হোটেলের জানালা দিয়ে যখন কাপ্তাই হ্রদ দেখি, তখন আরো বেশি ভালো লাগে। সত্যি বলতে কি প্রকৃতি কত সুন্দর, তা আমরা রাঙ্গামাটি না এলে জানতে পারতাম না।’
এব্যাপারে রাঙ্গামাটি প্রিন্স আবাসিক হোটেলের স্বত্বাধিকারী নেছার আহম্মেদ বলেন, আবাসিক হোটেলগুলোতেও এরই মধ্যে সবগুলো রুম বুকিং হয়ে গেছে। বড়দিনসহ থার্টি ফাষ্ট নাইটকে কেন্দ্র করে আগে থেকে এখানে পর্যটকরা রুম বুকিং করে রেখেছেন। আমরা আমাদের হোটেলগুলোতে রুম দিতে এখন হিমশিম খাচ্ছি।
অন্যদিকে, ট্যুরিস্ট বোটঘাটের ব্যবস্থাপক মো. রমজান আলী বলেন, এবার রাঙ্গামাটিতে প্রচুর সংখ্যক পর্যটক আসছেন। তাঁদের আনাগোনায় ভরপুর হয়ে গেছে রাঙ্গামাটি শহর। হ্রদে ভ্রমণের ক্ষেত্রেও পর্যাপ্ত সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। আমাদের যেভাবে প্যাকেজ প্রোগ্রাম আছে সেই ভাবে পর্যটকদের ভাড়া আদায় করে থাকি। এখানে অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই বলে জানান তিনি।
রাঙ্গামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক অলোক বিকাশ চাকমা বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেশি। আগাম বুকিং হয়ে গেছে পর্যটন মোটেল। থার্টি ফাষ্ট পর্যন্ত পর্যটন মোটেলে কোন রুম খালী নেই। এ ছাড়া পর্যটকদের সুবিধার্থে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।
নিরাপত্তার বিষয়ে রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান বলেন, ‘পর্যটকের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছি। আশা করি, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।