খাগড়াছড়ি : অস্ত্রসহ উপজেলা চেয়ারম্যান আটক
খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্ণীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমাকে গ্রেফতার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী বাহিনী। রোববার দিনগত রাত ১ টায় নিজ বাসভবন থেকে তাকে আটক করে যৌথ বাহিনীর একটি টিম। নিরাপত্তা বাহিনী ও খাগড়াছড়ি থানা সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানিয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনী জানতে পারে লক্ষ্ণীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে তার সমর্থিত পার্টির পক্ষে এলাকাবাসীকে দীর্ঘদিন ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। লক্ষ্ণীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা নিজস্ব অবৈধ অস্ত্রটি তার বাসভবনে রেখেছেন এমন সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার দিনগত রাত ১ টার দিকে যৌথবাহিনীর একটি দল তার বাসভবনে অভিযান চালায়।
যৌথ বাহিনীর অভিযানে প্রথম দিকে লক্ষ্ণীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা তার সরকারী বাসভবনের দরজা খুলতে চায়নি। ১ ঘন্টাপর দরোজা খুললে নিরাপত্তা বাহিনী তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ পর্যায়ে তিনি ঘরের ছাদের কার্নিশ থেকে লুকানো ১ টি ম্যাগজিন ৫ রাউন্ড তাজা গুলিসহ আমেরিকার তৈরি ১ ফাইভ স্টার পিস্তল জমা দেয়। অস্ত্রটির কোনো বৈধ কাগজ না থাকায় অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
নিরাপত্তা বাহিনী সূত্র জানিয়েছে, লক্ষ্ণীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা স্থানীয় আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফের রাজনীতির সাথে জড়িত। গত উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থি হিসাবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করলেও জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালনের চেয়ে তিনি পার্টির কাজকে অধিক গুরুত্ব দিতেন। ইউপিডিএফ বিগত বিজয় দিবস কর্মসূচী বর্জন ঘোষণা করলে তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়েও জাকজমকভাবে বিজয় দিবস কর্মসূচী পালন না করে দায়সারাগোছে বিজয় দিবস কর্মসূচী পালন করেন। এ নিয়ে এলাকায় অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। তিনি তার কাছে রক্ষিত অবৈধ অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্থানীয়দের পার্টির পক্ষে কাজ করতে বাধ্য করতেন বলেও নিরাপত্তা সূত্রের দাবী।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক উপজাতীয় কমিউনিটি নেতা কিছুদিন আগে বাঘাইছড়ির উপজেলা চেয়ারম্যান জেএসএস’র বড় ঋষি চাকমা এবং সার্বাতলী ইউপি মেম্বার অজয় চাকমাকে সার্জেন্ট মুকুল চাকমা অপহরণ মামলায় গ্রেফতার করলেও কয়েকদিনের মধ্যেই তারা জামিন পেয়ে গিয়েছে।
এলাকাবাসীর আশঙ্কা বাবু সুপার জ্যোতি চাকমাও হয়তো জামিনে মুক্তি পাবে। আর সে মুক্তি পেলে স্থানীয়দের উপর অত্যাচার এবং জুলুম বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরো বলেন, সুপার বাবু মুক্তি পেলে আমাদের এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়া ছাড়া গতি নেই।
লক্ষ্ণীছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফ ইকবাল পার্বত্যনিউজকে এ তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হবে এবং আজকেই কোর্টে চালান করা হবে।