টি-টোয়েন্টিতেও হার দিয়ে শুরু বাংলাদেশের

টিটোয়েন্টিতেও হার দিয়ে শুরু বাংলাদেশের

অর্ধশতকের আগে-পরে সীমানায় দুটি সুযোগ দিয়েছিলেন কেন উইলিয়ামসন। ফিল্ডার অনেকটা এগিয়ে থাকায় দুইবারই বেঁচে যান নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক। ছোটো লক্ষ্য দিয়ে বোলারদের লড়াইয়ের পরও প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৬ উইকেটে হেরেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।

শেষ ৭ ওভারে ৬২ রান দরকার ছিল নিউ জিল্যান্ডের। ১৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ডিপউইকেটে সৌম্যর হাতে ধরা পড়তে পারতেন উইলিয়ামসন। এগিয়ে থাকা সৌম্য প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু বল তাকে ফাঁকি দিয়ে চার হয়ে যায়। পরে সৌম্যর বলে একই ভুল করেন ইমরুল কায়েস।

সুযোগ দুই হাতে কাজে লাগিয়ে ২ ওভার হাতে রেখে দলকে জয় এনে দিয়েছেন উইলিয়ামসন। ৫৫ বলে ৫টি চার ও দুটি ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ৭৩ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক।

নিউ জিল্যান্ড: ১৮ ওভারে ১৪৩/৪ (ব্রুম ৬, উইলিয়ামসন ৭৩*, মানরো ০, অ্যন্ডারসন ১৩, ব্রুস ৭, ডি গ্র্যান্ডহোম ৪১*; সাকিব ১/৩০, মাশরাফি ০/২২, রুবেল ১/৪৩, মুস্তাফিজ ১/২১, মোসাদ্দেক ০/৯, সৌম্য ০/১৮ )।

অর্ধশতকে উইলিয়ামসনের প্রতিরোধ

অধিনায়কোচিত ইনিংসে দলকে কক্ষপথে রাখেন কেন উইলিয়ামসন। ত্রয়োদশ ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ৪৩ বলে অর্ধশতকে পৌঁছান এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এই ইনিংস খেলার পথেই পৌঁছে যান টি-টোয়েন্টিতে ১ হাজার রানের মাইলফলকে।

দারুণ ফিল্ডিংয়ে রান আউট ব্রুস

দারুণ ফিল্ডিংয়ে রান আউট হয়ে ফিরেন অভিষিক্ত টম ব্রুস। একাদশ ওভারে মাশরাফি বিন মুর্তজার বলে এক রান নেওয়ার পর দ্বিতীয়টি নেবেন কি না এনিয়ে দ্বিধায় ছিলেন কেন উইলিয়ামসন ও ব্রুস। সুযোগ কাজে লাগায় বাংলাদেশ। একটু এগিয়ে যাওয়া ব্রুস আর ফিরতে পারেনি। সৌম্য সরকারের থ্রো পেয়েই স্টাম্প ভেঙে দেন মাশরাফি।

৯ বলে ৭ রান করে ব্রুস ফিরে যাওয়ার সময় নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৬২/৪।

শেষ ১০ ওভারে চাই ৮১ রান

প্রথম ১০ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখে বাংলাদেশের বোলাররা। ৩ উইকেটে ৬১ রান করা স্বাগতিকদের শেষ ১০ ওভারে চাই ৮১ রান।

অ্যান্ডারসনকে ফেরালেন সাকিব

বোলিং ফিরেই আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। তাকে উড়ানোর চেষ্টায় তামিম ইকবালের তালুবন্দি হন কোরি অ্যান্ডারসন (১৪ বলে ১৩)। সপ্তম ওভারে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের বিদায়ের সময় নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৪৬/৩।

এসেই মুস্তাফিজের আঘাত

চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে এসে নিজের দ্বিতীয় ওভারেই আঘাত হানেন মুস্তাফিজুর রহমান। তরুণ এই বাঁহাতি পেসারের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানকে ক্যাচ দেন কলিন মানরো (২ বলে ০)। দলের স্কোর তখন ২৮/২।

সাকিবের দুর্দান্ত ক্যাচে ব্রুমের বিদায়

রুবেল হোসেনের বলে সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরেন নিল ব্রুম। ডিপ স্কয়ার লেগে বল ধরে দড়ি পার হওয়ার আগ মুহূর্তে মাঠের ভেতর দিকে ছোড়েন সাকিব। পরে সামনে ঝাঁপিয়ে দুই হাতে ক্যাচ তালুবন্দি করেন দলের সহ-অধিনায়ক।

তৃতীয় ওভারে ব্রুম ফেরার সময় নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ২২/১।

ছোটো মাঠে নিউ জিল্যান্ডের সামনে ছোটো লক্ষ্য

মাহমুদউল্লাহর প্রতিরোধে শুরুর ধস সামলে কিছুটা লড়াই করার মতো স্কোর গড়তে পেরেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। নিয়মিত উইকেট হারানো বাংলাদেশ নিউ জিল্যান্ডকে দিয়েছে ১৪২ রানের লক্ষ্য।

তেমন কোনো জুটি গড়তে পারেনি অতিথিরা। সর্বোচ্চ ৩৭ রানের জুটি গড়ে উঠে সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহর মধ্যে। ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার ফিরেন শূন্য রানে। দুই অঙ্কে যাওয়া তামিম ইকবাল, সাব্বির রহমান, সাকিব, মোসাদ্দেক হোসেন পারেননি ইনিংস বড় করতে। সর্বোচ্চ ৫২ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।

৩২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে নিউ জিল্যান্ডের সেরা বোলার লকি ফার্গুসন। অভিষেকে মাইকেল ক্যাসপ্রোইচের পর দ্বিতীয় বোলার হিসেবে নিজের প্রথম দুই বলে উইকেট নেন এই পেসার। আরেক অভিষিক্ত পেসার বেন হুইলার ২ উইকেট নেন ২২ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: ২০ ওভারে ১৪১/৮ (তামিম ১১, ইমরুল ০, সাব্বির ১৬, সাকিব ১৪, সৌম্য ০, মাহমুদউল্লাহ ৫৩, মোসাদ্দেক ২০, মাশরাফি ১, নুরুল ৭*, রুবেল ২*; হুইলার ২/২২, হেনরি ১/৪৪, ফার্গুসন ৩/৩২, ডি গ্র্যান্ডহোম ১/২৩ স্যান্টনার ১/২০)।

মাহমুদউল্লাহর অর্ধশতকে প্রতিরোধ

ওয়ানডে সিরিজ ভীষণ বাজে কাটানো মাহমুদউল্লাহ এক প্রান্ত ধরে রেখে দারুণ এক অর্ধশতক করেন। ৪৫ বলে ক্যারিয়ারের তৃতীয় অর্ধশতক স্পর্শ করার পর বেশিক্ষণ টিকেননি এই মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান।

৪৭ বলে তিনটি করে ছক্কা-চারে ৫২ রান করে ফার্গুসনের ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে মাহমুদউল্লাহ ফেরার সময় দলের সংগ্রহ ১৩৮/৮।

ফুলটসে ফিরলেন মাশরাফিও

রানের গতি বাড়াতে নুরুল হাসানের আগে এলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে সফল হননি অধিনায়ক। কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের ফুলটসে ক্যাচ দিয়ে তার ফেরার সময় দলের সংগ্রহ ১১৪/৭।

দুই ছক্কা হাঁকিয়ে মোসাদ্দেকের ফেরা

পরপর দুই ওভারে ছক্কা হাকানোর পর আবার তার চেষ্টায় ফিরেন মোসাদ্দেক হোসেন (১৭ বলে ২০)। ১৬তম ওভারে মিচেল স্যান্টনারের বলে কোরি অ্যান্ডারসনকে ক্যাচ দিয়ে এই তরুণ অলরাউন্ডারের ফেরার সময় দলের স্কোর ৯৯/৬।

ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন সাকিব

একাদশ ওভারে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের অফ স্টাম্পের বাইরের বল টেনে খেলতে গিয়ে আকাশে তুলেন সাকিব আল হাসান। অনেক সময় পাওয়া মিচেল স্যান্টনার মিডউইকেটে ক্যাচ তালুবন্দি করে বাংলাদেশের ওপর চাপ বাড়ান। সাকিব (১৪ বলে ১৪) ফেরার সময় বাংলাদেশের স্কোর ৬৭/৫।

জোড়া শিকারে ফার্গুসনের শুরু

মাইকেল ক্যাসপ্রোইচের পর দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম দুই বলে উইকেট পান লকি ফার্গুসন। ঘণ্টায় ১৪৭ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসা ইয়র্কার কোনোমতে থামিয়ে তার হ্যাটট্রিক ঠেকান মাহমুদউল্লাহ।

২০০৫ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের প্রথম ম্যাচে প্রথম দুই বলে উইকেট নিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ক্যাসপ্রোইচ।

গোল্ডেন ডাকে সৌম্যর বছর শুরু

গত বছরটা ব্যাটিংয়ে ভীষণ বাজে কাটানো সৌম্য সরকার নতুন বছর শুরু করেন গোল্ডেন ডাক দিয়ে। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে গালিতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৩০/৪।

পরপর দুই বলে উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান লকি ফার্গুসন। তবে দুর্দান্ত ইয়র্কার ঠেকিয়ে তা হতে দেননি মাহমুদউল্লাহ।

ফুলটস বলে সাব্বিরের বিদায়

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেকে নিজের প্রথম বলে আঘাত হানেন লকি ফার্গুসন। এই পেসারের ফুলটস বলে মিডউইকেটে ম্যাট হেনরিকে সহজ ক্যাচ দেন সাব্বির রহমান (১৫ বলে ১৬)।

ষষ্ঠ ওভারে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ফেরার সময় দলীয় স্কোর ৩০/৩।

শর্ট বলে আউট তামিম

পঞ্চম ওভারে ফিরেন অভিষিক্ত বেন হুইলারের শর্ট বলে হুক করতে গিয়ে সীমানায় সহজ ক্যাচ দেন ছন্দে থাকা বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল।

১৩ বলে ১১ রান করে তামিমের আউটের নেওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ২৮/২।

শূন্য রানে ইমরুলের ফেরা

দ্বিতীয় ওভারেই ভাঙে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। ম্যাট হেনরির অফ স্টাম্পের বাইরের বলে উইকেটরক্ষক লুক রনকিকে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ইমরুল কায়েস। দুই বলে শূন্য রান করে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ফেরার সময় দলের স্কোর ৫/১।

মাশরাফির টিটোয়েন্টির অর্ধশতক

নতুন বছরে দেশের প্রথম ম্যাচ দিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজের অর্ধশতক স্পর্শ করেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। আগের ৪৯ ম্যাচে ৩৫.৮৬ গড়ে ৩৮ উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। সেরা ৪/১৯। ১৩৭.৫৯ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৩৬৬ রান। বাংলাদেশের পঞ্চম ক্রিকেটার হিসেবে এই সংস্করণে ম্যাচ খেলার ‘ফিফটি’ করলেন মাশরাফি।

বাংলাদেশ একাদশে সৌম্য, রুবেল, বিশ্রামে তাসকিন

বাংলাদেশ সবশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছে গত মার্চে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই ম্যাচের একাদশ থেকে মোহাম্মদ মিঠুন ও আল আমিন হোসেন এবার সফরেই নেই। চোটের কারণে নেই মুশফিকুর রহিম। আরেক অফ স্পিন অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেনের কাছে জায়গা হারিয়েছেন শুভাগত হোম চৌধুরী।

ওয়ানডে সিরিজের সবশেষ দুই ম্যাচে বাদ পড়লেও টি-টোয়েন্টিতে ফিরেছেন সৌম্য সরকার। ওয়ানডেতে দর্শক হয়ে থাকা রুবেল হোসেনেরও জায়গা হয়েছে একাদশে। তাসকিন আহমেদ পেয়েছেন বিশ্রাম।

একাদশে বিশেষজ্ঞ স্পিনার কেবল সাকিব আল হাসান। তিন পেসারের সঙ্গে কাজ চালানোর জন্য আছেন সৌম্য এবং দুই অফ স্পিনার মাহমুদুল্লাহ ও মোসাদ্দেক হোসেন।

বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহ, সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন, নুরুল হাসান, মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

আবহাওয়ার পূর্বাভাস মিলে গেছে প্রায় শতভাগ। আগে রাত ও সকালে বৃষ্টি হলেও দুপুরের আগে থেকে নেই একটুও। নেপিয়ারের আকাশ নীল-সাদা, খেলা করছে মেঘেরা। দারুণ আবহাওয়ায় টস ভাগ্যকেও পাশে পেয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। বেছে নিয়েছেন ব্যাটিং।

ম্যাকলিন পার্ক এমনিতে নিউ জিল্যান্ডের সবচেয়ে ভালো ব্যাটিং উইকেটগুলোর একটি। টসের পর মাশরাফি জানালেন, উইকেট তার কাছে বরাবরেই মতোই মনে হচ্ছে ব্যাটিং সহায়ক।

ম্যাকলিন পার্কের অভিষেকে বাংলাদেশের প্রথম?

বছরের শেষটা ভালো কাটেনি বাংলাদেশের। ওয়ানডে সিরিজে সম্ভাবনা তৈরি করেও সুযোগ হারিয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। নতুন বছরে নতুন শুরুর প্রত্যাশায় নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে খেলবেন তারা।

নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি দিয়ে এই সংস্করণে অভিষেক হচ্ছে ম্যাকলিন পার্কের। কে জানে, হয়ত এই বিশেষ উপলক্ষ রাঙাবে বাংলাদেশই; এই মাঠের অভিষেকেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাটিতে ধরা দেবে প্রথম জয়!

অন্তত ১৮০১৯০ রান করতে হবে

সাকিব আল হাসানের ধারণা, বাংলাদেশ-নিউ জিল্যান্ড প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দেখা যাবে চার-ছক্কার ফুলঝুরি। এখানে মাঠ ছোট, বিশেষ করে উইকেটের দুই পাশে সীমানা অনেক ছোট। আগে ব্যাট করলে অন্তত ১৮০-১৯০ হয়ত করতে হবে।

মুক্ত গণমাধ্যম চাই : সকল গণমাধ্যমে এক নীতিমালা, তথাকথিত ওয়েজ বোর্ড বাতিল, নিজস্ব বেতন বোর্ড, বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র নীতিমালা নিয়ন্ত্রণ মুক্ত, প্রয়োজনীয় কাঁচামালের মূল্য কমানো ও মফস্বলের পত্রিকাগুলো সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে টিকিয়ে রাখতে হবে

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031