যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে সোমবার (৩০ জানুয়ারী) রাজবন বিহারসহ রাঙ্গামাটিতে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিকখ্যাত বৌদ্ধ আর্যপুরুষ মহাসাধক শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের পঞ্চম পরিনির্বাণবার্ষিকী। এ উপলক্ষে রাজবন বিহারে ভোর ৬টা থেকে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালিত হয়।
উল্লেখ্য, মহাসাধক বনভান্তে ১৯২০ সালের ৮ জানুয়ারি রাঙ্গামাটি সদরের ১১৫নং মগবান মৌজার মোড়ঘোনা গ্রামের এক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১২ সালের ৩০ জানুয়ারি দেহত্যাগ করেন তিনি। তিনি জীবদ্দশায় অধ্যক্ষ হিসেবে রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে অবস্থান করেন।
সোমবার (৩০ জানুয়ারী) ভোর থেকে রাজবন বিহারে সংরক্ষিত বনভান্তের নি¯প্রাণ দেহে ফুলে ফুলে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পুণ্যার্থীরা। এছাড়া সকালে পঞ্চশীল প্রার্থনা, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার দান, সূত্রপাঠ, ধর্মীয় সভা, ভিক্ষুসংঘের পিন্ডদান এবং সন্ধ্যায় প্রদীপ পূজা, উৎসর্গ, হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ইত্যাদি কর্মসূচি পালিত হয়। এসব কর্মসূচিতে বনভান্তের উত্তরসুরি ও রাজবন বিহারের আবাসিক ভিক্ষুপ্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞা লংকার মহাস্থবির, শ্রীমৎ জ্ঞানপ্রিয় মহাস্থবিরসহ শতাধিক বৌদ্ধভিক্ষু উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া রাজবন বিহারের প্রধান পৃষ্টপোষক চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গৌতম দেওয়ানসহ হাজার হাজার পুণ্যার্থী ও ভক্তানুরাগী পুণ্যানুষ্ঠানে অংশ নেন।
এছাড়া বনভান্তের অনুসারি অন্যতম বৌদ্ধধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সদর উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নের যমচুগ বনাশ্রম ভাবনা কেন্দ্রে রোব-সোমবার দুই দিনব্যাপী ধর্মীয় নানা আচার-অনুষ্ঠানে বনভান্তের চতুর্থ পরিনির্বাণবার্ষিকী পালিত হয়েছে। সোমবার বনভান্তের পরিনির্বাণ দিবসে যমচুগ বনাশ্রম ভাবনা কেন্দ্রে বনভান্তের জীবন ও কর্ম, তার ধ্যান-সাধনা সদ্ধর্ম প্রচার, বিনয় বিশুদ্ধ বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারে তার বলিষ্ঠ ভুমিকা নিয়ে সদ্ধর্ম আলোচনা, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, হাজার প্রদীপ দান ইত্যাদি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রোববার আয়োজন করা হয় সুবলং-লংগদু পানিপথে নৌ-শোভাযাত্রা।
এসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বনভান্তের প্রধান শিষ্য শ্রীমৎ নন্দপাল মহাস্থবির। তিনি ভারতের বুদ্ধগয়া বন বিহারসহ বিভিন্ন শাখা বন বিহারের প্রতিষ্ঠাতা ও আর্ন্তজাতিকখ্যাত সদ্ধর্ম প্রচারক।