মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের অবস্থা জানতে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী বস্তিগুলো পরিদর্শন করেছে রোহিঙ্গা কমিশনের ৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রতিনিধিদলটি উখিয়ার বালুখালীতে নতুন করে গড়ে ওঠা রোহিঙ্গা শরণার্থী বস্তিতে পৌঁছায়। সেখানে ঘণ্টাব্যাপী রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে এবং নির্যাতনের সার্বিক তথ্য সম্পর্কে অবগত হয়।
বালুখালী বস্তিতে নির্যাতনের শিকার মিয়ানমারের ১০ জন নারী, পুরুষ ও শিশুর সঙ্গে আলাপ করের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। রোহিঙ্গা বস্তি পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধিদলটি টেকনাফের লেদা এবং শামলাপুরের রোহিঙ্গা শরণার্থী বস্তিগুলো পরিদর্শনের জন্য রওনা হয়। তারা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, নির্যাতনের কারণ, নির্যাতনের ধরন ও নানা বিষয় নিয়ে প্রতিনিধিদলটি তাদের সঙ্গে আলাপ করে এবং তারা বিষয়টি প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন।
কফি আনানের নেতৃত্বে মিয়ানমারে গঠিত রাখাইন কমিশনের প্রতিনিধিদলে রয়েছেন মিয়ানমারের নাগরিক উইন ম্রা ও আই লুইন, লেবাননের নাগরিক ঘাশান সালামে। প্রতিনিধিদলটির সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বাকি বিল্লাহসহ বিভিন্ন সংস্থা, জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আগামীকাল সোমবার সকালে উখিয়ার কুতুপালং এলাকার রোহিঙ্গা শরণার্থী বস্তি পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধিদলটি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে। এরপর বিকেলেই ঢাকায় ফিরবে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জনগণের কল্যাণে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ তৈরির জন্য মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি গত বছর জাতিসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব কফি আনানকে প্রধান করে একটি রাখাইন কমিশন গঠন করেন। কফি আনান ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় মিয়ানমারের ছয় নাগরিক ও তিন বিদেশি বিশেষজ্ঞকে নিয়ে গঠিত কমিশন এই বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সুপারিশ জমা দেবে। রাখাইন রাজ্যের নাগরিকদের মানবিক উন্নয়ন, নাগরিকত্ব, মৌলিক অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা নিয়ে কমিশন সুপারিশ তৈরি করবে।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ৯ অক্টোবর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর অন্তত ৬৬ হাজার শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।