হাজারো ফুলের শুভেচ্ছায় রাঙ্গামাটিতে পার্বত্য বৌদ্ধ
সাধক প্রয়াত বনভন্তের ৯৮ তম জন্মদিন পালিত
জাকজমকপূর্ণভাবে পার্বত্য বৌদ্ধ সাধক প্রয়াত সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভন্তের ৯৮ তম জন্মদিন রাঙ্গামাটির রাজবন বিহারে দিনব্যপী নানান অনুষ্ঠানের মধ্যে পালিত হয়েছে। রবিবার রাঙ্গামাটির রাজবন বিহারে ভোরে কেক কেটে ও বেলুন উড়িয়ে জন্মদিনের সূচনা করা হয়। এসময় বনভান্তের শিষ্য প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবির ভিক্ষুসংঘকে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটেন। ফুলে আর বেলুনে সাজানো হয় পুরো রাজবন বিহার এলাকা।
ভোর থেকে হাতে হাতে ফুল নিয়ে রাজবন বিহারে জড়ো হতে থাকে হাজারো পূণ্যার্থী। রাজবন বিহারে মমি করে রাখা বনভন্তের মমিতে ফুল দেন পুণ্যার্থীরা।
সকাল ৮.৪৫ মিনিটে পুজনীয় ভিক্ষুসংঘ আর শ্রামনসংঘ মঞ্চে উপবেশন করার আগে বেলুন উড়িয়ে রাজবন বিহার আবাসিক প্রধান এবং বনভান্তের শিষ্যসংঘের প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাথের অনুস্থান মঞ্চে প্রবেশ করেন। এসময় আকাশে উড়ানো হয় হাজারো বেলুন, করা হয়, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার দানসহ নানান ধর্মীয় অনুষ্ঠান। বিকালে অনুষ্ঠিত হয় ধর্মশোভা ও প্রদীপ প্রজ্জলন ও আকাশে ফানুস উড়ানো।
ধর্মীয় দেশনা প্রদান করেন বনভান্তের শিষ্যসংঘের প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাথের। পরিশেষে পরমপূজ্য শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের রেকর্ডকৃত ধর্মীয় দেশনা প্রদান করা হয়। এসময় পুরো রাজবন বিহারে ধর্মপ্রাণ দায়ক-দায়িকাদের সাধু সাধু ধ্বনীতে মুখরিত হয়ে উঠে।
উল্লেখ্য, ১৯২০ সালে ৮ জানুয়ারি এমনি একটি দিনে মাতৃভূমি অলংকৃত করে জন্মগ্রহন করেছিলেন মহান এই বৌদ্ধ সাধক বনভন্তে। কাপ্তাই এর সন্নিকটে মগবান মৌজার মোরঘোনায় পিতা হারুমোহন চাকমা এবং মাতা বীরপতি চাকমার ঘর আলোকিত করে জন্মলাভ করেন। জন্মের পর তাঁর নাম রাখা হয় রথীন্দ্র। ২০১২ সালে ৩০ জানুয়ারী তিনি পরিনির্বাণপ্রাপ্ত (প্রয়াত) হন।
তিনি ১৯৪৯ সালে প্রব্রজ্যা নিয়ে (বৌদ্ধ ভিক্ষুর বস্ত্র) সংসার ছেড়ে সন্যাসীর জীবন গ্রহণ করেন। সেই থেকে তিনি দীর্ঘ ধ্যান-সাধনা করেন বনে-জঙ্গলে। কঠোর ধ্যান সাধনার ফলে লাভ করেন বৌদ্ধ ধর্মের অলৌকিক শক্তি অরহত্ব করেন বলে তাদের বিশ্বাস। আর এর মধ্য দিয়েই তিনি লাভ করেন মহাপরিনির্বাণ। দীর্ঘদিন বনে-জঙ্গলে ধ্যান সাধনা করায় তিনি ভক্তকূলের কাছে অধিক পরিচিত বনভান্তে নামে। তিনি বৌদ্ধ ভিক্ষুর উপসম্পদা লাভ করেন ১৯৬১ সালে। রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ হিসেবে আগমণ করেন ১৯৭৪ সালে।