মানিকছড়ি উপজেলার বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করা তিনটহরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২ যুগ পূর্তি উপলক্ষে নানা আয়োজনে বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
বিদ্যালয়ের সহকারি গ্রন্থাগারিক আবদুল মান্নান ও পিটিএ সভাপতি এম.ই.আজাদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় এবং প্রধান শিক্ষক মো. আতিউল ইসলাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের ২ যুগ পূর্তি, এস.এস.সি পরীক্ষার্থী-১৭ এর বিদায় ও নবীণ বরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ম্্রাগ্য মারমা, জেলা পরিষদ সদস্য ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এম.এ. জব্বার, অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুর রকিব, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. নূর ইসলাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা পুলিশিং কমিটির সভাপতি এম.এ. রাজ্জাক, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নোমান মিয়া, সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান ফারুক, বাটনাতলী ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম মোহন, যোগ্যাছোলা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন, তিনটহরী ইউপি চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বাবুল, যোগ্যছোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম.কে. আজাদ, ডাইনছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রমিজ মিয়া,কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মংশেপ্রæ মারমা, বড়ডলু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বশির আহম্মদ, গাড়ীটানা নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজালাল, একসত্যাপাড়া নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হারুন উর রশিদ, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ক্যজ মারমা, সাথোয়াই মারমা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রুপেন পাল, ডা. অমর কান্তি দত্ত, নিপ্রু মারমা প্রমূখ।
সকাল ১১টায় অতিথিরা স্কুল গেইটে আসলে হাজারো শিক্ষার্থী লাইনে দাঁড়িয়ে ফুলের পাঁপড়ি ছিটিয়ে, বাদ্যের তালে তালে এবং করতালির মাধ্যমে অতিথিদের মঞ্চে নিয়ে আসেন। পরে প্রধান অতিথির উপস্থিতিতে এবং শিক্ষার্থীদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এর পর একে অতিথিরা আসন গ্রহণ করেন। পরে শিক্ষার্থীরা আগত অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। অতিথি বরণ শেষে নবীণ শিক্ষার্থী জেসমিন আক্তারকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন বিদায়ী শিক্ষার্থী মো. মোস্তফা। এ সময় তারা একে অপরের মাঝে মানপত্রও বিনিময় করেন। অতিথি,নবীণদের বরণ শেষে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও অনুষ্ঠানের সভাপতি স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি দীর্ঘ ২ যুগের অক্লান্ত পরিশ্রমে ২০ব্যাচে ১০৬৫ জন শিক্ষার্থীর এস.এস.সি পাসের স্মৃতি স্মরণ করে এ অর্জনের জন্য এ অঞ্চলের মেহনতি অভিভাবক ও চলার পথের সহযোগিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে তিনি অশ্রæসজন নয়নে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন।
পরে নবীণ শিক্ষার্থীসহ সকল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপদেশমূলক বক্তব্য রাখেন বিদায়ী শিক্ষার্থী মো. মোস্তফা। এর পর শুরু হয় অতিতিদের বক্তব্যের পালা।
প্রধান অতিথি কংজরী চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, এ অঞ্চলে পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠির পরিবারে প্রদীপ জ্বালাতে যে সমস্ত শিক্ষকরা নিরলসভাবে শিক্ষকতা করছেন জাতি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ২ যুগে এ প্রতিষ্ঠান থেকে সহ¯্রাধিক ছেলে-মেয়ে এস.এস.সি পাস করেছে এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখে। এছাড়া বর্তমান শিক্ষাবর্ষে সাড়ে ৮ শতাধিক ছেলে-মেয়ে(৬ষ্ঠ-১০ম)শ্রেণিতে অধ্যয়নরত রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এখানে একটি আধুনিক মানসম্পন্ন ছাত্রাবাস নির্মাণে কোটি টাকার বরাদ্ধ করা হয়েছে। আগামী ২০২০সালের মধ্যে এটি নির্মাণ শেষ হবে। ফলে দূর-দূরান্তের ছেলে-মেয়েরা ছাত্রাবাসে থেকে পড়ালেখা করার সুযোগ পাবে। তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, আপনারা চেলে-মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দায়িত্ব ছেড়ে দিলে ভ‚ল করবেন। মা’দের পাশাপাশি বাবারাও ছেলে-মেয়ের প্রতি যতœবান হন। অন্যথায় ডিজিটালের হরেক ছোঁয়ার আপনার সন্তান সু-নাগরিক হওয়ার সুযোগে থকে বঞ্চিত হতে পারে।
সভাপতির সমাপনী বক্তব্যের পর প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অতিথিদের সম্মানণায় ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এছাড়া বিদায়ী শিক্ষার্থীরা স্কুলের সু-প্রতিষ্টিত গ্রন্থাগারে বিপুল সংখ্যক বই উপহার দেন। প্রধান শিক্ষক এসব বই গ্রহন করেন এবং বিদায়ী শিক্ষার্থীদের এ মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানান। পরে সকল অতিথি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মধ্যাহ্নভোজে মিলিত হন।