যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ঘোষণা আসছে বলে নিশ্চিত করেছেন তাঁর একজন শীর্ষ সহযোগী। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, গতকাল সোমবারই (বাংলাদেশ সময় গতকাল গভীর রাতে) ট্রাম্প তাঁর এই নতুন উদ্যোগের বিষয়টি জানাতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
গতকালই প্রতিবেশী কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর যুক্তরাষ্ট্রে সফরে যাওয়ার কথা। তাঁর সঙ্গে আলাপের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসী নিয়ে নতুন ঘোষণা দেওয়ার কথা। সাত মুসলিমপ্রধান দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সাময়িক নিষিদ্ধ করে ট্রাম্পের দেওয়া নির্বাহী আদেশ আদালত স্থগিত করে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ ট্রাম্প আগেই বলেছিলেন, তিনি এ বিষয়ে নতুন ব্যবস্থা নেবেন।
হোয়াইট হাউস সূত্র বলেছে, তাদের সামনে দুটি পথ খোলা। হয় ফেডারেল আদালতের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে জরুরি আপিল করতে হবে, না হয় ট্রাম্পকে নতুন করে অভিবাসন নিয়ে নির্বাহী আদেশ দিতে হবে। তবে শেষোক্ত বিকল্পটিই ট্রাম্প বেছে নেবেন বলে গতকাল এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মনে করা হচ্ছিল। কারণ শুক্রবার ট্রাম্প নিজেই এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত ২৭ জানুয়ারি এক নির্বাহী আদেশে মুসলিমপ্রধান সাতটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ৯০ দিনের জন্য নিষিদ্ধ করেন। এর বাইরে সিরিয়া বাদে বিশ্বের সব দেশের শরণার্থীদের জন্য ১২০ দিন এবং সিরীয় শরণার্থীদের জন্য অনির্দিষ্টকাল যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা বন্ধ করে দেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আপিল আদালত ট্রাম্পের এই আদেশ স্থগিত করে দেন। এর ফলে আগে থেকেই যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেয়েছিলেন, তাঁরা এখন ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারছেন। এখন তাঁদের কীভাবে ঠেকানো যায়, সেটাই খতিয়ে দেখছে হোয়াইট হাউস।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শীর্ষস্থানীয় সহযোগী স্টিফেন মিলার রোববার ‘ফক্স নিউজ সানডে’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘সব ধরনের বিকল্প গ্রহণের’ চিন্তাভাবনা করছেন। মিলার বলেন, তাঁর বিশ্বাস প্রেসিডেন্ট ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে তাঁর কর্তৃত্বের বাইরে কিছু করেননি।
এনবিসির ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে স্টিফেন মিলার বলেন, ‘শুধু অভিবাসন বিষয়টিকে বাহন হিসেবে ব্যবহার করে মার্কিন মূল্যবোধবিরোধী লোকজন যাতে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে পড়তে না পারে, সে জন্য আমরা নতুন এবং বাড়তি কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছি।’
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ আদালত স্থগিত করার পর গত সপ্তাহজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় করা হয়েছে। কয়েকজনকে ইতিমধ্যে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এতে অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ট্রাম্পের এই অভিবাসননীতির বিরুদ্ধে গতকাল প্রতিবেশী মেক্সিকোজুড়ে বিক্ষোভ হয়েছে।