খাগড়াছড়িতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ
নেতাসহ আটক-২, মুক্তির দাবী করেছে ইউপিডিএফ
॥ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, পানছড়ি থেকে ফিরে ॥ খাগাড়ছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলার তাপিতাপাড়া এলাকায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ নেতাসহ ২জনকে আটক করেছে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার যৌথবাহিনী।
গতকাল মঙ্গলবার ভোর রাতে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন পাহাড়ের সশস্ত্র আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)‘র সামরিক শাখার নেতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি জেলার আইন শৃংখ্যলা বাহিনী।
এদিকে যৌথ বাহিনীর সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার দিবাগত রাতে খাগড়াছড়ি ব্রিগেডের (জি.টু) মেজর মোজাহিদুল ইসলাম এসজিপি‘র নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাত ১টা-থেকে ভোর রাত ৬টা পর্যন্ত ৫ঘন্টা অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানের সময় ভোর রাত সাড়ে ৪টার দিকে তাপিতাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও রাঙ্গামাটি জেলার বন্দুকভাঙ্গা এলাকার ইউপিডিএফ‘র সামরিক শাখার দায়িত্বরত ২য় কমান্ড সুয়ান্ত চাকমা ওরফে তমেশ চাকমা (৩৫) পিতা বিনয় কুমার চাকমা ও সোনামনি চাকমা ওরফে ভাগ্যা চাকমা (৫২)কে আটক করে। তাদের দেওয়া তথ্য মতে ১টি ভারতীয় পিস্তল ও ৩রাউন্ড গুলি এবং ১টি দেশীয় এলজি ও ২রাউন্ড গুলি, সামরিক বাহিনীর ১সেট পোশাক, ১টি টস লাইট উদ্ধার করা হয়েছে।
এব্যপারে খাগড়াছড়ির পানছড়ি থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এইদিকে গতকাল ইউপিডিএফ প্রেস সেকশনের দায়িত্বে নিয়োজিত নিরন চাকমার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞাপ্তিতে জানিয়েছে, ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের সমন্বয়ক কিছুদিন আগে কারামুক্ত উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা গতকাল মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ মাধ্যম প্রদত্ত এক বিবৃতিতে নিরাপত্তা কর্তৃক পানছড়িতে ইউপিডিএফ-এর দুই কর্মীকে অন্যায়ভাবে আটকের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং অবিলম্বে আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি তারা।
বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, গতকাল মঙ্গলবার ভোর রাত ৪টার দিকে একটি আইন শৃঙ্খনা বাহিনীর দল পানছড়ি উপজেলার নাপিদা পাড়ায় হানা দিয়ে সুহান্ত চাকমা(৩৫) ও ভাগ্য চাকমা(৫০) নামে দুই ইউপিডিএফ সদস্যকে আটক করে। গণসংযোগের কাজ সেরে এ দু’জন কর্মী রাতে নিকটস্থ রনজিত চাকমার বাড়িতে অবস্থান করেন।
ইউপিডিএফ নেতা অভিযোগ করে বলেন, আটকের সময় ইউপিডিএফ কর্মীদের কাছ থেকে অবৈধ কোন কিছু না পেলেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের হাতে দেশীয় তৈরি অস্ত্র (এলজি) গুঁজে দিয়ে চোখ বেঁধে নিয়ে যায়। এই আটকের ঘটনাকে ইউপিডিএফ-এর উপর ধারাবাহিক নিপীড়নের অংশ উল্লেখ করে বিবৃতিতে তিনি বলেন, অন্যায় দমন-পীড়ন চালিয়ে ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমন করা যায় না, তা সম্ভব নয়। পাক হানাদার বাহিনী বর্বর নিপীড়ন-নির্যাতন হত্যাকা- চালিয়ে পূর্ব বাংলার সাধারণ খেটে-খাওয়া বাঙালিদের মুক্তির আকাক্সক্ষা গুড়িয়ে দিতে পারেনি। পাহাড়েও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ জনতা ফুঁসে উঠবে, তা কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র।