ভারতের তামিলনাডু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ‘আম্মা’ জয়ললিতার মৃত্যুর মাত্র দু’মাসের মধ্যেই রাজ্যের ক্ষমতায় চলে এলেন জয়াললিতার ঘনিষ্ঠতম বান্ধবী ‘চিন্নাম্মা’ শশীকলা নটরাজন।
তামিল ভাষায় আম্মা মানে মা, আর ‘চিন্নাম্মা’ মানে মায়ের ছোট বোন অর্থাৎ ছোট খালাম্মা।
কোনো দিন দলের কোনো পদে ছিলেন না, কখনও এমএলএ বা এমপিও নির্বাচিত হননি তিনি। তার একমাত্র যোগ্যতা ছিল তিনি জয়াললিতার ঘনিষ্ঠতম বান্ধবী ও প্রায় সর্বক্ষণের সঙ্গী।
রোববার এআইডিএমকে’র পরিষদীয় দল সেই শশীকলাকেই তাদের নেত্রী নির্বাচিত করেছে। যার অর্থ হল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পথে তার আর কোনো বাধা রইল না।
রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ও পনিরসেলভাম, যিনি জয়ললিতা বেঁচে থাকার সময়ও একাধিকবার দলের হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন, তিনি ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করার কথা ঘোষণা করেছেন।
গত ডিসেম্বরে জয়ললিতার মৃত্যুর পর এআইডিএমকে শশীকলাকেই তাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেছিল। তবে দলের ভেতরে ক্ষমতার দুটি কেন্দ্র থাকুক, এটা অনেকেই চাইছিলেন না।
ফলে ৬১ বছর বয়সী শশীকলা নটরাজন এখন মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে দলের ওপর তার সর্বময় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চলেছেন।
এদিন পরিষদীয় দলের বৈঠকের পর তিনি সমর্থকদের সামনে আসেন গাঢ় সবুজ রঙের শাড়ি পরে, যা ছিল জয়ললিতারও প্রিয় রং।
তামিলনাডুর গত বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর জয়াললিতাও সমর্থকদের সামনে এসেছিলেন ঠিক একই ধরনের শাড়ি পরে।
শশীকলাও কথা দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী ও দলনেত্রী হিসেবে তিনি প্রতিটি কাজেকর্মে জয়ললিতার পথই অনুসরণ করবেন।
জয়াললিতার সঙ্গে শশীকলার প্রায় সাড়ে তিন দশকের সখ্যতেও নানা ওঠাপড়া ছিল। শশীকলা ও তার পরিবারের সদস্যদের কারণে জয়াললিতাকেও অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
২০১১ সালের ডিসেম্বরে জয়াললিতা তার বান্ধবী শশীকলা ও তার স্বামীকে দল থেকে বহিষ্কারও করেছিলেন। তবে মাত্র তিন-চার মাসের মধ্যেই লিখিত ক্ষমা প্রার্থনা করে শশীকলা আবার দলে ফিরে আসেন।
আজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও দলের সর্বময় নেত্রী হওয়ার মধ্যে দিয়ে শশীকলা নটরাজন তার আজীবন আনুগত্য ও বন্ধুত্বের পুরস্কার পেলেন।