প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ইউনেস্কোর ই-৯ভিত্তিক দেশগুলোর উদ্যোগগুলোকে এসডিজির সাথে সমন্বয় করে এসডিজি-৪-এর মূল লক্ষ্য সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে তিন দিনব্যাপী ‘ই-৯ মিনিস্টারিয়াল মিটিং অন এডুকেশর-২০৩০’শীর্ষক সভার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির ভাষণে এ আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এসডিজি-৪-এর মূল লক্ষ্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা ও জীবনব্যাপী শিক্ষার প্রসার। এসব বৈশ্বিক আকাঙ্ক্ষা মনে রেখে আমি আশাবাদী যে এখানে উপস্থিত শিক্ষাবিদ এবং নীতি নির্ধারকগণ ‘এসডিজি-৪-এডুকেশন ২০৩০’ লক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে নিজ নিজ দেশের আকাঙ্ক্ষা, অঙ্গীকার, প্রাধিকারের বিষয়গুলি আলোচনা করবেন এবং এই ৯টি দেশের জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশমালা প্রণয়ন করবেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সংস্কৃতি, ধর্ম, বর্ণ এবং ভাষার বিভিন্নতা সত্ত্বেও বর্তমানে আমরা এমন একটি বিশ্বে বসবাস করছি যেখানে সকলে একে অপরের উপর নির্ভরশীল। পারস্পরিক বোঝাপড়া, সহিষ্ণুতা এবং বন্ধুত্বকে এগিয়ে নিতে শিক্ষা সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করতে পারে।’
‘সমাজে সঠিক মূল্যবোধ, আকাক্সক্ষা এবং প্রয়োজনীয় যোগ্যতার ভিত গড়ে দিতেও শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে,’বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
ই-৯ এর জন্ম ইএফএ সম্মেলনের মাধ্যমে দিল্লীতে ১৯৯৩ সালে। বিশ্বের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা অধ্যুষিত ৯টি উন্নয়নশীল দেশের সাধারণ শিক্ষাবিষয়ক লক্ষ্যসমূহ নিয়ে এই সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে। এসব দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা জোরদার করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে টেকসই উন্নয়নের জন্য নতুন বৈশ্বিক ‘এডুকেশন ২০৩০’ এজেন্ডার প্রেক্ষাপটে ই-৯ উত্তর-দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার একটি সাধারণ প্লাটফর্মে পরিণত হয়েছে।
ই-৯ ভূক্ত সদস্য রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ব্রাজিল, চিন, মিশর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া এবং পাকিস্তান।
অনুষ্ঠানে ই-৯’এর নতুন চেয়ারপার্সন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান এবং ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে গতবারের চেয়ারপার্সন পাকিস্তানের শিক্ষা ও পেশাগত প্রশিক্ষণ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বালিঘ-উর-রহমান সংগঠনের উন্নয়ন রিপোর্ট উপস্থাপন করেন এবং নতুন চেয়ারপার্সন নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছে সংগঠনের চেয়ারপার্সনশিপ হস্তান্তর করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার জন্য শিক্ষা বা ‘এডুকেশন ফর অল-ইএফএ’ কর্মসূচিকে আমি সেই প্রেক্ষাপটে দেখি যা থেকে ই-৯ এর উদ্ভব হয়েছে। আমরা এসডিজি’র যুগে প্রবেশ করেছি। শিক্ষা বিষয়ক এসডিজি-৪-এর সঙ্গে এমডিজি এবং ইএফএ-এর শিক্ষা ও অর্জনসমূহের আলোকে ই-৯ এর উদ্যোগ ও কৌশলের সমন্বয়ের জন্য এই বৈঠক অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং অর্থপূর্ণ।
তিনি বলেন, আমি মনে করি- এক্ষেত্রে আমাদের এই বৈঠক একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। আমি আরও বিশ্বাস করি, আমাদের এই বিশ্বের জন্য একটি টেকসই সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত ভবিষ্যত নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এই বৈঠক প্রয়োজনীয় সুযোগ চিহ্নিত এবং কাজে লাগাতে সহায়তা করবে।
সূত্র : বাসস