ভারতের জাতীয় সংসদ লোকসভায় তিস্তার পানি বণ্টন ইস্যু নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।২৯ মার্চ মঙ্গলবার দৈনিক মানবজমিনে তিস্তা নিয়ে ভারতের সংসদে তৃণমূলের ক্ষোভ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে এ তথ্য উঠে এসেছে।তিস্তার পানি বণ্টন ইস্যু নিয়ে সোমবার ভারতের লোকসভার জিরো আওয়ারে সাংসদ সৌগত রায় বিষয়টির প্রতি স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন বাংলার স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে বাংলাদেশকে পানি দেয়া পশ্চিমবঙ্গ সরকার মানবে না। কয়েকদিন আগেই কলকাতার একটি টিভি চ্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছিলেন যে, ভারত সরকার আগামী ২৫শে মে তিস্তা চুক্তি করতে চলেছে বলে শুনতে পাচ্ছি। তবে তার সঙ্গে যে এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা করা হয়নি তাও তিনি জানিয়েছিলেন। সেই কথার সূত্র ধরেই এদিন লোকসভায় সৌগত রায় বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই কেন্দ্রীয় সরকার তিস্তা চুক্তির শর্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছে বলে যে কথা শোনা যাচ্ছে, তা যদি সত্য হয়, সে ক্ষেত্রে এই চুক্তিতে বাংলার সরকার অনুমোদন দেবে না।
প্রকৃতপক্ষে এদিন কেন্দ্রীয় সরকারকে রীতিমতো হুঁশিয়ারিই দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও পররাষ্ট্রমন্ত্রকের মুখপাত্র দুদিন আগেই সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় মনোভাব নিয়েই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানালেও এদিন পর্যন্ত রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনাই করা হয়নি।সৌগত রায় এদিন আরও অভিযোগ করেছেন যে, পানি বণ্টন নিয়ে পাকিস্তান আর বাংলাদেশের প্রতি ভারতের আচরণ দু’রকমের। তিনি বলেছেন, ভারতের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে পাকিস্তানকে অতিরিক্ত পানি দেয়া হবে না, ভারত এমনই নীতি নিয়েছে। কিন্তু, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভারত উল্টো নীতি নিচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীর প্রতি সাধারণ অভিযোগ যে, তিনি তিস্তা চুক্তিতে বাধা সৃষ্টি করে চলেছেন। তবে তাকে এড়িয়ে গিয়ে ইউপিএ আমলে তিস্তা চুক্তি করতে গিয়ে মনমোহন সিং সরকার নাজেহাল হয়েছেন। মমতার আপত্তিতে সেবার চুক্তি করা যায়নি। এবারও মমতা বলেছেন, রাজ্যের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে তিস্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনায় তিনি রাজি। কিন্তু ভারত সরকার আগে থেকে মমতাকে আস্থায় না নিয়ে চুক্তির খসড়া তৈরি করে জানানোর নীতি নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে রাজ্য সরকার। চুক্তির দিনও ঠিক হয়ে গেছে। অথচ মমতাকে জানানো হয়নি। আর এখানেই সব ক্ষোভ উগরে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।